আকিদা - ৪ : আশারি-আথারি
১৬
ব্যক্তিগত ভাবে আমার কাছে এই দন্ধ অর্থহীন। সবাইকে মুসলিম হিসাবে দেখি।
কেউ বললো "আল্লাহ আরশের উপর আছেন", তো ঠিক আছে।
কেউ বললো "সর্বত্র আছেন।", সে কি অর্থে বলেছে? স্বশরিরে আছেন বুঝিয়েছে? কে জানে, আমি জানি না! সে এমন কোনো কথা যোগ করে নি। কোনো ব্যখ্যা দেয় নি। আল্লাহ তায়ালাও বলেছেন উনি সব মানুষের কাছে আছেন, সংগে আছেন। কোনো ব্যখ্যা ছাড়াই। দুজনের কথা একই। তাই আমার এখানেও আপত্তি নেই।
কিন্তু অমি দেখতে পাচ্ছি আল্লাহ তায়ালা যখন এই কথা বলেন কোনো ব্যখ্যা ছাড়া তখন তারা এর অর্থ ধরছেন একরকম। উনি ইলম দ্বারা বুঝিয়েছেন।
এবং মানুষ যখন একই কথা বলে এবং কোনো ব্যখ্যা ছাড়া, তখন সেটার ব্যখ্যা তারা ধরছে ভিন্ন রকম। সে স্বশরিরে বুঝিয়ে বলেছে।
এর পর একই কথার দুই রকম ব্যখ্যা ধরে আমাকে ফোর্স করা হচ্ছে কিছু লোককে কাফের ঘোষনা দেবার জন্য।
যদি না দেই তবে আমি আশারি-মাতুরিদি। আমিও কাফের। যেহেতু স্পষ্ট করে আমাকে এই সাক্ষি দিতে হবে।
১৭
আশারি-মাতুরিদিরা জঘন্য। বাতেল কাফের। এটা আমি নেটে বহু বছর ধরে শুনতে থাকি। ২০১০ এর আগ পর্যন্তও আমি জানতাম না এরা কারা। ধারনা করতাম হয়তো মুতাজিলাদের মত আদি কোনো সম্প্রদায় হবে, যাদের অস্তিত্ব এখন আর নেই। কাল্পনিক দল।
২০১০ এর পর জানি হানাফি মাজহাবের সবাই আশারি মাতুরিদি।
কিন্তু "<এই এই> কথা যে বললো সে কাফের" এই দাবিকে কখনো সমর্থন দিতে পারি নি। চুপ থাকতাম।
১৮
কিন্তু চুপ থাকাটা বাচাতে পারতো না সব সময়।
"আপনি চুপ আছেন কিন্তু যদি আপনি অন্তরেও বিশ্বাস করেন <এই> তবে আমার দৃষ্টিতে আপনি কাফের।" -- একজনের কমেন্ট।
"আমি এই উপমহাদেশের দেশগুলোতে গিয়ে রাস্তায় অনেকে জিজ্ঞাসা করেছি বলেন তো আল্লাহ কোথায়? সবাই জবাব দিযেছে উনি সবজায়গায়। তাই সেই সব দেশের সবাই কাফের।" -- একজনের শায়েখের কথা।
তারা জিজ্ঞাসা করবে, আমাকে তাদের কথা স্পষ্ট করে সাক্ষ্য দিয়ে বলতে হবে। এখানে লুকোচুরি বা হিকমতের সাথে কিছু করার লক্ষন দেখা দিলে আমি তাদের কাছে কাফের।
এটা স্পষ্ট।
১৯
অবশেষে একদিন কোরআন শরিফ নিয়ে বসলাম। আজকে আমার আকিদা পরিবর্তন করবো।
যত জায়গায় আল্লাহ তায়ালা বলেছেন উনি আরশ ভিন্ন অন্য কোথাও আছেন, সব জায়গায় উনি ইলম দ্বারা বুঝিয়েছেন। ঠিক?
চেক করা আরম্ভ করলাম। আমার যতটুকু মুখস্ত ছিলো তারা মাঝে ৬-৭ জায়গায় ছিলো এমন আয়াত। এবং পড়ার সময় এই আয়াতগুলো অন্তরে স্ট্রাইক করতো অনেক বেশি। ওয়া ইদা সাআলুকা ইবাদি আন্নি ফা ইন্নি কারিব। এই অংশে এসে তিলওয়াতকারি আটকে না গিয়ে পারে না।
সব জায়গায় আল্লাহ তায়ালা বুঝিয়েছেন উনার ইলম দ্বারা?
বলা যায়। কিছু জায়গায় উনার ইলমের কথাই আলোচনা হচ্ছিলো তাই। অন্য জায়গাগুলোতে কেউ এরকম দাবি করলে অস্বিকার করার উপায় নেই।
২০
এর পর ডাবল ব্লাইন্ড টেষ্ট। সাইন্সে শিখেছি।
এরকম আশারি মাতুরিদিরাও কি দাবি করতে পারে যেখানে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন উনি আরশের উপর আছেন তখন <এই> দ্বারা বুঝিয়েছেন?
<এই> এর জায়গায় কিছু বসানোর স্কোপ আছে? পড়তে থাকলাম। পেলাম। সব জায়গায় উনি উনার শক্তির কথা বলেছেন। কিভাবে উনি মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন। কি করে উনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান। উনার ক্ষমতার কথা, শক্তির কথা।
এগুলো কোনোটাই নতুন না। চাইলে যে কোনো কথা এনেই বলা যায় আমার এই দাবি কোরআন শরিফ দ্বারা স্বিকৃত। বক্রদের বক্রতা এটা বৃদ্ধি করে আর যে সরল চায় তাকে এটা সরল পথ দেখায়।
নিজেকে প্রশ্ন : আমার অন্তর কি বক্র হয়ে আছে? নাকি আমি সরল পথে?
#HabibAqida