Post# 1447074729

9-Nov-2015 7:12 pm


একবার উমার (রা) আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করছিলেন। এমন সময় এক ব্যক্তি এসে বললোঃ ‘আমীরুল মু’মিনীন! আমি কুফা থেকে এসেছি। সেখানে আমি দেখে এসেছি, এক ব্যক্তি নিজের স্মৃতি থেকেই মানুষকে কুরআন শিখাচ্ছেন।’ একথা শুনে তিনে এত রাগান্বিত হলেন যে, সচরাচর তাঁকে তেমন রাগ করতে দেখা যায় না। তিনি ঊটের হাওদার অভ্যন্তরে রাগে ফুলতে থাকেন তারপর প্রশ্ন করেন – ‘তোমার ধ্বংস হোক! কে সে লোকটি?’

- ‘আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা)’

জ্বলন্ত আগুনে পানি ঢেলে দিলে যে অবস্থা হয়, ইবন মাসউদের (রা) নাম শুনে তাঁরও সে অবস্থা হলো। তাঁর রাগ পড়ে গেল। তিনি স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে পেলেন।

তারপর বললেনঃ ‘তোমার ধ্বংস হোক! আল্লাহর কসম, এ কাজের জন্য তাঁর চেয়ে অধিক যোগ্য কোন ব্যক্তি বেঁচে আছে কিনা আমি জানিনা। এ ব্যাপারে তোমাকে আমি একটি ঘটনা বলছি।’

উমার (রা) বলতে লাগলেন – “একদিন রাতের বেলা রাসূল (সা) আবু বকরের (রা) সাথে কথাবার্তা বলছিলেন। তাঁরা মুসলমানদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলেন। আমিও তাঁদের সাথে ছিলাম। কিছু সময় পর রাসূল (সা) বের হলেন, আমরাও তাঁর সাথে বেরুলাম। বেরিয়েই আমরা দেখতে পেলাম, এক ব্যক্তি মসজিদে নামাযে দাঁড়িয়ে; কিন্তু আমরা তাঁকে চিনতে পারলাম না। রাসূল (সা) দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ তাঁর কুরআন তিলাওয়াত শুনলেন। তারপর আমাদের দিকে ফিরে বললেনঃ ‘যে ব্যক্তি বিশুদ্ধভাবে কুরআন পাঠ করে আনন্দ পেতে চায়, যেমন তা অবতীর্ণ হয়েছে, সে যেন ইবন উম্মু আবদের (আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ) (রা) পাঠের অনুরূপ কুরআন পাঠ করে।’

এরপর আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা) বসে দু’আ শুরু করলেন। রাসূল (সা) আস্তে আস্তে তাঁকে লক্ষ্য করে বলতে লাগলেনঃ ‘চাও, দেওয়া হবে, চাও, দেওয়া হবে।’”

উমার (রা) বলেন, আমি মনে মনে বললাম, আল্লাহর কসম, আমি আগামীকাল প্রত্যুষেই আবদুল্লাহ ইবন মাসউদের (রা) নিকট গিয়ে তাঁর দু’আ সর্ম্পকে রাসূলের (সা) মন্তব্যের সুসংবাদটি তাঁকে দিব। সকাল সকাল আমি তাঁর কাছে গেলাম। গিয়ে দেখি আবু বকর সিদ্দীক (রা) আমার আগেই তাঁর কাছে পৌঁছে গেছেন এবং তাঁকে সুসংবাদটি দিয়ে ফেলেছেন। সত্যিই যখনই কোন সৎকাজে আবু বকরের (রা) সাথে আমি প্রতিযোগিতা করেছি তখন তিনিই প্রতিটি ক্ষেত্রে বিজয়ী হয়েছেন।

- আসহাবে রাসূলের জীবনকথা, ১ম খন্ড/মুহাম্মাদ আবদুল মা’বুদ/বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার, ঢাকা

(collected)

9-Nov-2015 7:12 pm

Published
9-Nov-2015