"ফিকাহর বই"
//
সিনারিও : এক পোষ্টে একজন মানহাজ বিরোধি কিছু কথা বললেন। স্বভাবতই পক্ষে একজন এসে কমেন্ট করলেন "ভালো মতো জেনে কথা বলবেন। জানেন না তো চুপ থাকবেন"। এতটুকু পর্যন্ত রেগুলার। প্রায়ই এরকম হয়।
এর পরের ঘটনা নতুন। কেউ পাল্টা প্রশ্ন করলো : "মানহাজ জানতে কোনো বই আছে আপনাদের? মানহাজি শিক্ষার বই?"
না নেই।
বস্তুতঃ জানতে হলে ফেসবুকে বড় ভাই ছোট ভাই যারা গত ৫ বছর ধরে পোষ্টাচ্ছে তাদের পোষ্ট পড়ে পড়ে জানতে হবে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে এখান থেকে একটু। ওখান থেকে কিছু ভিন্ন মত সেটুকু। কোনো এক জায়গায় নেই। যা আছে সেগুলোও বদলায়।
//
এখন ভিন্ন দিকে তাকাই। ভিন্ন দল। মনে করেন "কেবল কোরআন হাদিস থেকে" আমি নামাজ ভাঙ্গার কারন, মসজিদ তৈরির হুকুম কি, কিভাবে কোনটা করতে হবে, হবে না, সেগুলো শিখতে চাই? কোথা থেকে শিখবো? কোরআন হাদিস দেখে নিজে?
না। বরং বিভিন্ন শায়েখদের লেকচার শুনে। কিছু ইউটুবে। কিছু ফেসবুকে। কিছু ইসলাম কিউএ তে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে।
//
কিন্তু সমস্যা। এখানে ভিন্নমতও আছে। মত সময়ের সাথে বদলানোও আছে। যেমন ৯০ এর দিকে দেশের আহলে হাদিস ভাইদের মসজিদে [ এট লিষ্ট খুলনায় ] ইমাম মুক্তাদি সবাই একসাথে স্বশব্দে সুরা ফাতিয়া পড়তেন। এর পরের দশকে আসে ফাতিহার পরে ইমাম কিছুক্ষন চুপ থাকবেন তখন বাকি সবই পড়বে। এর পর এখন চলছে ইমাম স্বশব্দে পড়লে মুক্তাদিদের পড়ার দরকার নেই।
মানুষ কোনটা করবে? একটা ঐক্যমত?
//
একটা ঐক্যমতে পৌছতে হলে। চ্যলেঞ্জগুলো :
- বর্তমান আলেমদের বিভিন্ন মতের মাঝে একটাকে ঐক্যমত বানানো। সময় সাপেক্ষ কাজ।
এতে বহু সময় লাগবে। ১ বছর ১০ বছরের কাজ না। শত বছর লাগবে। এক একটা হুকুমের ইফেক্ট, বিচার, স্বিদ্ধান্ত, প্রচার, গ্রহনযোগ্যতা অনেক কিছু বিচার করে।
যেমন সুরা ফাতিহা, জুম্মার দ্বিতীয় আজান সবগুলোই হাদিসে আছে। কিন্তু কোন হাদিসের শিক্ষার উপর কোনটাকে প্রাধান্য দেবো সেটা নিয়ে দ্বিমত তাই এক স্বিদ্ধান্তে আসতে হবে।
এবং বইটা হতে হবে কনসাইস। সংক্ষিপ্ত। কারন সবকিছুর ব্যপারে শেষ স্বিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। সাধারন মানুষ এত কথা শুনতে চায় না। কেবল কংক্লুশন তারা যেন পায়।
বিতর্কিত বিষয়গুলোতে ২০-৩০ বছর লেগে যেতে পারে একটা স্বিদ্ধান্তে পৌছতে।
//
এর পর একবার যখন লিখা হয়ে যাবে, বইটা আবার ৩০০ বছর পরে বদলানো হবে কিনা?
কেন বদলাতে হবে? ৩০০ বছরে নতুন কোনো আয়াত নাজিল হয় নি। নতুন কোনো হাদিসও আসে নি। কেবল মানুষের চিন্তা বদলিয়েছে। ইসলামি লিডারশিপ বদলিয়েছে। নতুন শায়েখ এসেছেন। এই।
তাতে বদলাতে হবে কেন? প্রথমেই কেন ঐ জিনিসগুলো জেনে চিন্তা করে লিখা হয় নি? প্রশ্নগুলো রয়ে যাবে। তাই বইটা লিখতে সময় লাগবে। কিন্তু লিখার ৩০০ বছর পরে বদলালে হবে না।
//
এই কাজটাই হানাফি ফকিহরা করে গিয়েছেন গত ১০০০ বছর আগে। যে কারনে আমি ফিকাহর বই পড়ে জেনে নেই। যা ফিকাহর বইয়ে নেই, সেগুলো হানাফি আলেমদের মুখে মুখে বদলায়। এই আলেম থেকে অন্য আলেমে।
যা লিখা আছে সেগুলোতে আলেমরা মূলটায় ফিরে ফিরে আসে সময়ের সাথে সাথে। কোনো সময় কোনো নেতৃত্বশিল আলেমের কথায় ঐ সময়ের জন্য বিচ্যুত হলেও।