ফিতনা, যা থেকে বাচার সহজ পথ নেই।
১
উথমান রাঃ দীর্ঘ শাসনে শেষ বয়সে বার্ধক্যে পৌছেন।
উনার পক্ষ থেকে হুকুম জারি করতে থাকেন উনার অফিসের অন্য কিছু লোক। যারা উনার সাহায্যকারী ছিলো।
এর প্রতিবাদ করে অন্যান্য শহর থেকে কিছু লোক জড়ো হয়। দাবি, "কোরআন সুন্নাহ মেনে শাসন করেন"। ভালো কথা। রাজি।
তারা ফিরে যাবার আগে ঐ দরবারের লোকরা প্রতিবাদকারিদের শহরের গভর্নরদের চিঠি লিখে পাঠায় যে এই সব প্রতিবাদকারিরা নিজেদের শহরে ফিরলে তাদের হত্যা করে হাত পা কেটে যেন গাছে লটকিয়ে রাখে। মানুষ যেন দেখে। শিক্ষা নেয়।
চিঠির খবর প্রতিবাদ কারিদের হাতে পৌছে। তারা ঐ চিঠি বহনকারিকে ধরে আবার উথমান রাঃ এর কাছে ফিরে আসে।
উথমান রাঃ বলেন এখানে আমার সিল আছে কিন্তু আমি এই চিঠি লিখি নি। জানি না। আমি পাঠাইও নি।
প্রতিবাদকারিরা জানে এখন ফিরে গেলে তাদের হত্যা করা হবে। জঘন্য ভাবে। বরং বিচার চেয়ে ঐ খানে বসে থাকে উনার অফিস ঘেরাও করে।
মাসের উপর যায়। অন্দোলন বাড়ছে। কোনো সমাধান নেই। আন্দোলনকারিরা অস্থির হয়ে যায় কিছু একটার জন্য। এদিকে হজ্জের মৌসুম শেষ হচ্ছে। হাজ্জিরা সবাই ফিরে আসলে প্রতিবাদকারিরা চাপে পড়বে।
হজ্জের এক সপ্তাহ পরে কিছু লোক আর না পেরে, উনার জানালা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে উনাকে হত্যা করে।
২
দেখার বিষয় প্রতিবাদকারিরা কেউ উনার হত্যা চাচ্ছিলো না। এটা মাথায়ও ছিলো না। হয়তো পদত্যাগ বা অন্য কিছু চাচ্ছিলো। হত্যা করেছে অল্প দুই তিন জন লোক অতি উৎসাহ বা অতি রাগ দেখিয়ে।
কিন্তু ঐ ঘেরাওয়ে যারা ছিলো সবাইকে হাশরের ময়দানে দাড়াতে হবে উথমান রাঃ এর হত্যাকারি হিসাবে যারা তাকে ঘেরাও করে রেখেছিলো। এমন একটা দল যাদের হাত দিয়ে কিয়ামত পর্যন্ত ফিতনার দরজা খুলে দেয়া হয়েছে।
৩
Standing in their shoes বলে একটা কথা আছে। তাদের অবস্থানে নিজেকে চিন্তা করি। ফিরে গেলে আমাকে হাত পা কেটে হত্যা করা হবে। ফিরতে পারছি না। এখানে দাড়িয়ে থাকলেও কোনো সমাধান নেই।
কিন্তু তাদের শেষ পরিনতি হয়েছে খুবই জঘন্য। যেটা তারা চায়ও নি। এড়ানোরও কোনো উপায় ছিলো না।
৪
উথমান রাঃ এর দিক থেকে চিন্তা করি। উনি জানতেন এটাই সেই ফিতনা যেটা রাসুলুল্লাহ ﷺ বলে দিয়ে গিয়েছিলেন। তাই মদিনাতে অনেকে ছিলো উনার পক্ষে। কাউকে ডাকেন নি। নিজেদের মাঝে যুদ্ধ লাগুক এটা উনি চান নি। দরকার হলে জীবন দেবেন। সবাই বার বার উনাকে জিজ্ঞাসা করেছে "আসবো?" উনি বলেছেন না "ঘরে বসে থাকো"।
৫
উনার মৃত্যুর দিন উনি রোজা রেখেছিলেন। বিকেলে উনি স্বপ্নে দেখেন রাসুলুল্লাহ ﷺ এসে বলেছেন : উথমান তোমার কষ্ট আমি দেখছি। তুমি যদি চাও তবে আমি দোয়া করতে পারি আল্লাহ এই বিদ্রোহিদের সরিয়ে দেবেন। আর যদি চাও তবে আমার সাথে এসে ইফতারি করতে পারো।
উনি জবাব দিয়েছিলেন : না, বরং আপনার সাথে ইফতারি করবো।
মাগরিব হবার আগে উনাকে শহিদ করা হয়। দুনিয়াতে ইফতারি করে যান নি।
৬
বিদ্রোহীদের অবস্থানে নিজেকে আবার চিন্তা করি। ছোট্ট একটা জিনিস তারা চেয়েছিলো : ইনসাফ, ন্যয় বিচার। কারো ইচ্ছা ছিলো না উনাকে হত্যার।
কিন্তু পরিনতি : তারা উথমান রাঃ এর হত্যাকারি হিসাবে হাশরে আল্লাহর সামনে দাড়বে।
৭
Note to self : শিক্ষা নেই। এটা মনে রাখি। দ্বন্ধে নিজেকে কোনো পক্ষে না নিয়ে দূরে রাখি। বাকিটা আল্লাহর উপর, উনার করুনা।
- Comments:
- ^ এটা অস্পষ্ট লাগছে? নাকি কেবল ৭ নম্বর পয়েন্টের ব্যপারে বলছেন?
- তবে আপনি যেটা জানতে চাচ্ছেন সেটা আমার জানা নেই।
- তবে কি করতে বলবেন?
- তবে আমাকে কি করতে বলবেন?
- Wahid Hasan তবে কি করতে হবে?