৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় মাদ্রাজে মুসলিম লীগের পক্ষে উলামাদের বিশাল জনসমাবেশ অনুষ্টিত হল।
এক মাওলানা বক্তৃতা উঠেই বলতে শুরু করলেন, "ইহুদীদের দালাল মাওলানা হুসাইন আহমদ মাদানীকে প্রত্যাখ্যান করুন, মাদ্রাজ থেকে কংগেসের এই পা চাটা গোলামকে অবাঞ্চিত ঘোষনা করা হোক, মহাত্মা গান্ধির দরবারি কুত্তার ইসলামি হুকুমত প্রতিষ্টার বিরোদ্ধে দৌড়ঝাঁপ আর সহ্য করা হবে না, প্রথম থেকেই এই মুনাফেক মাদানী পাকিস্তানে আলাদা ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্টার বিরোদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আসছেন"।
বক্তা এতটুকো বলার পরেই, সভার সভাপতি থানভী রহ এর অন্যতম খলিফা মাওলানা নুরুল হক মাদ্রাজি দাড়িয়ে তার মাইক কেড়ে নিলেন এবং কড়া ভাষায় এর তীব্র পতিবাদ করলেন। ইসলামি রাষ্ট প্রতিষ্টার আন্দোলনে উম্মাদ তরুন আলেমরা তখন নুরুল হক মাদ্রাজির উপর ক্ষেপে গিয়ে স্লোগান দিতে থাকে দালাল দালাল।
"কাফের মাদানীর দালালরা হুশিয়ার সাবধান। খেলাফত প্রতিষ্টার ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না। লড়কে লঙ্গে পাকিস্তান, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ। পাকিস্তানের সংবিধান, আল কুরআন আল কুরাআন। ইহুদীর দালালরা হুশিয়ার সাবধান।"
তারপরঃ নুরুল হক মাদ্রাজি মাইকে ঘোষনা দিলেন, "যে রাজনীতিতে আওলাদে রাসুল হযরত হুসাইন আহমদ মাদানীর বিরোদ্ধে কথা বলতে হয়, আমি সেই রাজনীতি থেকে ইস্তেফা দিলাম।"তিনি মনের দুঃখ ও ক্ষোভ নিয়ে থানভী ছাহেবের দরবারে রওয়ানা হলেন।
গভীর রাত।
থানভীর খানকার বারান্দায় এসে বসলেন। এসময় বাহিরে বেরিয়ে এলেন হযরত থানভী রহ খাছ খাদেম সুলায়মান। সুলায়মান নুরুল হক মাদ্রাজির হাল খুরসি নিলেন। নিজের রুমে নিয়ে গেলেন। মাওলানা নুরুল হক তাকে মাদ্রাজের সভায় মাদানীকে গালাগালি ও কটুক্তির কথা বললেন।
শুনে খাদেম সুলেমান বললতে লাগল, "ওহ তো বিহি মোনাফেক হু, মাদানীতো কংগেসি কা দালাল হু। সে হিন্দুদের পা চাটা গোলাম" ইহুদীকি চর হ। বাতিল কি কুত্তা হু, দ্বীন কী দুশমন হু। নবী সাহাবী কি ত্বরিকা ছে হট গায়ি ইত্যাদি ইত্যাদি। সাথে বড় বড় আলেমদের দলিল ভিত্তিক কিছু ফতোয়া দেখাল। যাতে বলা হয়েছে কি কি শরিয়ত বিরোধী কথার কারনে তার উপর কুফরি ফতোয়া দেয়া হয়েছে।
মাওলানা নুরুল হক মাদ্রাজি যে কষ্টের আগুন বুকে নিয়ে এসেছিলেন, খাদেম সুলায়মানের মাদানীকে গালি দেয়াতে তা আরো বেড়ে গেল। তিনি বললেন,
: ভাই মাদানী কী অনেক বড় আলেম নন?
সুলায়মান উত্তর দিল,
: এলেম তো শয়তানেরও ছিল?
মাদ্রাজি বললেন,
: তিনি কি দেওবন্দের বড়। আলেম নন? তিনি কি শায়খুল হিন্দের খলিফা নন? তিনি কি একজন বুর্যুগ নন?
সুলায়মান উত্তর দিল,
: এক যামানাতে শয়তানও বহুত বড় বুর্যুগ ছিল? হযরত, আপনি তার পক্ষে কথা বললে, আপনাকেও বাতিল বলবেন সকল আহলে হক উলামায়ে কেরাম। দালালের পক্ষে কথা বলবেন না হযরত। পাকিস্তানে খেলাফত প্রতিষ্টা নিয়ে হক বাতিলের লড়াই চলছে।
(সংগৃহীত, শুধু রেলিভেন্ট অংশ কোট করা হয়েছে। পুরোটা না।)