Post# 1503201942

20-Aug-2017 10:05 am


(সুরা আল-আনআম এর ২য় ভাগ, ৬ পৃষ্ঠা করে)

এভাবে তাদের কিছুদেরকে দিয়ে অন্যদের পরিক্ষায় ফেলি,
যেন তারা বলে, ওরাই কি আমাদের মাঝে আল্লাহর পছন্দের দল?
আল্লাহ জানেন শোকর আদায়কারীদের।

আপনার কাছে যখন আমার আয়াতে বিশ্বাসিরা আসে,
বলুন, তোমাদের উপর সালাম!
তোমাদের রব নিজের উপর রহমত লিখেছেন যে,
তোমাদের মাঝে যারা না জেনে পাপ করে,
এর পরে তৌবা করে, নেক কাজ করে,
তবে উনি গাফুরুর রহিম।

এভাবে আয়াত বর্ননা করি, যেন পাপীদের পথ স্পষ্ট হয়।

বলে দিন,
তোমরা আল্লাহ ছাড়া যাদেরকে ডাকো,
তাদের ইবাদত করতে আমাকে নিষেধ করা হয়েছে।
তোমাদের খুশি মতো আমি চলবো না।
তাহলে আমি বিপথগামী হবো, সুপথে থাকবো না।

বলে দিন, আমার রবের পাঠানো প্রমানের উপর আমি আছি।
তোমরা সেটাকে মিথ্যা বলেছো।
তোমরা এখনই যা চাও, সেটা আমার কাছে নেই।
স্বিদ্ধান্ত দেয়ার মালিক আল্লাহ।
উনি সত্য বলেন, শ্রেষ্ঠ ফয়সালাকারী।

তোমরা এখনই যা চাচ্ছো তা যদি আমার কাছে থাকতো,
তবে আমার আর তোমাদের মাঝে সব এখানেই শেষ হতো।
আল্লাহ জালেমদের ব্যপারে জানেন।

উনার কাছে গায়বের চাবি।
এসব অন্য কেউ জানে না, উনি ছাড়া।
উনি জানেন স্থলে-জলে যা আছে।
উনার জ্ঞানের বাইরে -
না কোনো পাতা ঝড়ে,
না কোনো শষ্যের-দানা পড়ে মাটির অন্ধকারে,
না শুকনো, না ভেজা।
সবকিছু লিখা আছে পরিষ্কার কিতাবে।

তিনি রাতে তোমাদের জীবন নিয়ে নেন।
জানেন তোমরা দিনে যা করো,
তাই দিনে তোমাদেরকে জীবিত করেন সময়কাল পূর্ন করতে।
এর পর উনার কাছে ফিরা।
তোমাদেরকে জানানো হবে যা করে এসেছো।

উনি বান্দাদের উপর রক্ষাকারী,
তোমাদের উপর হেফাজতকারী পাঠান।
এমন কি যখন কারো মৃত্যু আসে,
তখন উনি অনেককে পাঠান যারা জীবন নেয়।
তারা কাজে হেলা করে না।

এর পর আল্লাহর কাছে ফিরা- তাদের সত্য মাওলা!
বিচার উনার উপর, সবচেয়ে দ্রুত হিসাব নেন।

বলুন, কে তোমাদের জলে-স্থলের অন্ধকারে রক্ষা করেন?
যখন উনাকে ডাকো কাতর হয়ে মনে মনে-
যদি এ থেকে আমাদেরকে রক্ষা করেন তবে আমরা শোকরকারী হবো।

বলে দিন, তখন আল্লাহ তোমাদের উদ্ধার করেন সেই বিপদ থেকে,
আর সমস্ত বিপদাপদ থেকে।
এর পরও তোমরা শিরক করো।

বলে দিন,
উনি উপর থেকে বা নিচ থেকে তোমাদের আযাব পাঠানোর ক্ষমতা রাখেন।
অথবা তোমাদের দিশেহারা করে দিতে পারেন দলাদলি করিয়ে।
একদলকে ভোগ করাতে পারেন অন্য দলের আক্রমন।
দেখুন কত ভাবে আমি আয়াত বর্ননা করি যেন তারা বুঝে।

তোমার কওম একে মিথ্যা বলে, অথচ এটাই সত্যি।
বলে দিন, আমি কি তোমাদের জন্য উকিল না?

প্রতিটা ভবিষ্যৎবানীর নির্দিষ্ট সময় আছে,
তারা শিগ্রি জানতে পারবে।

যখন দেখবেন তারা আমার আয়াত নিয়ে বাজে কথা বলছে,
তখন তাদের থেকে দূরে সরে যান, যতক্ষন না অন্য প্রসংগে যায়।
যদি শয়তান আপনাকে ভুলিয়ে দেয়,
তবে মনে পড়ার পর জালেমদের সাথে বসে থাকবেন না।

তাকওয়াকারীদের উপর ঐ সব লোকদের হিসাবের দায়িত্ব না।
বরং দায়িত্ব শুধু মনে করিয়ে দেয়া, যেন তারাও তাকওয়া করে।

যারা নিজেদের দ্বীনকে খেল-তামাশা বানিয়েছে তাদেরকে ছেড়ে দিন।
দুনিয়া তাদের ধোকায় ফেলেছে।
আর এই কোরআন দিয়ে উপদেশ দিতে থাকেন
যেন কেউ নিজের কামাই দিয়ে ধ্বংশ না হয়।
তার জন্য কোনো ওলি-শাফায়াতকারী নেই, আল্লাহ ছাড়া।
মুক্তির জন্য সেদিন সব দিতে চাইলেও গ্রহন করা হবে না।
এদের কামাই তাদেরকে ধ্বংশ করেছে।
কুফরির জন্য তাদের শাস্তি ফুটন্ত খাবার পানি আর কষ্টকর আযাব।

বলে দিন,
আমরা কি আল্লাহ ছাড়া অন্যকে ডাকবো?
যে আমাদের উপকার করতে পারে না, ক্ষতিও না।
আল্লাহ আমাদের পথ দেখানোর পর কি পেছনে হাটবো?
তার মত, যাকে শয়তানরা উসকে দিয়ে হয়রান করে দিয়েছে!
তার বন্ধুরা তাকে পথে ডাকছে - আমাদের দিকে আসো!
বলে দিন, আল্লাহর পথই একমাত্র পথ।
আমাদের হুকুম করা হয়েছে রাব্বুল আলামিনের কাছে আত্মসমর্পন করতে।
আর নামাজ কায়েম করতে, উনাকে ভয় করতে।
উনার কাছে তোমরা একত্রিত হবে।

উনি আসমান-জমিন সৃষ্টি করেছেন, সত্যিকারে।
যে দিন বলেন হও, হয়ে যায়, উনার কথা সত্য।
যে দিন শিংগায় ফু দেয়া হবে, সে দিন রাজত্ব তার।
জানেন অদৃশ্য, জানেন দৃশ্য।
উনি বিচক্ষন, সব জানেন।

যখন ইব্রাহিম উনার পিতা আজরকে বললেন,
আপনারা কি মূর্তিগুলোকে ইলাহ বানিয়েছেন?
আমি দেখছি আপনি আর আপনার কওম স্পষ্ট ভুলের মাঝে আছেন।

এভাবে ইব্রাহীমকে আসমান-জমিনের রাজত্ব দেখালাম,
যেন শক্ত বিশ্বাস আনেন।

যখন রাত্রি ঢেকে ফেললো, উনি তারকা দেখলেন।
বললেন, এটা আমার রব।
যখন ডুবে গেলো বললেন,
যা ডুবে যায় তা আমি পছন্দ করি না।

যখন চাদ উঠতে দেখলেন, বললেন এটা আমার রব।
যখন ডুবে গেলো, বললেন যদি আমার রব আমাকে পথ না দেখান
তবে আমি পথভ্রষ্টদের একজন হবো।

যখন সূর্য উঠতে দেখলেন বললেন,
এটা আমার রব, এটা সবচেয়ে বড়।
যখন ডুবে গেলো বললেন,
আমার কওম! তোমাদের শিরক থেকে আমি পবিত্র।
আমি মুখ ঘুরালাম একমাত্র তার দিকে,
যিনি আসমান জমিন সৃষ্টি করেছেন।
আমি মুশরিকদের কেউ না।

উনার কওম উনার সাথে ঝগড়া আরম্ভ করলো।
উনি বললেন,
তোমরা কি আল্লাহকে নিয়ে আমার সাথে ঝগড়া করছো?
অথচ উনি আমাকে পথ দেখিয়েছেন।
তোমরা যাদেরকে শিরক কর তাদেরকে ভয় করি না,
বরং আমার রব যা চান সেটাকে ভয় করি।
সব কিছুর উপর আমার রবের জ্ঞান।
তোমরা কি মনে আনো না?

তোমরা যাদের শিরক কর, তাদেরকে আমি কি করে ভয় করবো?
অথচ তোমারা আল্লাহর সাথে শিরক করতে ভয় করো না!
এ অধিকার তোমাদের দেয়া হয় নি।
দু দিকের মাঝে কে বেশি হকদার নিরাপত্তা দিতে?
যদি জানতে।

যারা ঈমান এনেছে, আর ঈমানের সাথে জুলুম মিশায় নি,
তাদের জন্য নিরাপত্তা, তারা হিদায়াত প্রাপ্ত।

এ ছিলো আমার যুক্তি
যা ইব্রাহীমকে দিয়েছিলাম তার কওমের উপর।
যাকে ইচ্ছে আমি বহুস্তর উপরে উঠাই।
আপনার রব বিজ্ঞ, জানেন।

আর উনাকে দান করেছি ইসহাক, ও ইয়াকুব।
সবাইকে পথ দেখিয়েছি, নুহকে পথ দেখিয়েছি তারও আগে।
উনার বংশধারায় এসেছে দাউদ, সোলায়মান, আইয়ুব, ইউসুফ, মুসা, হারুন।
এভাবে সৎ লোকদের পুরষ্কার দেই।
জাকারিয়া, ইয়াহইয়া, ঈসা, ইলইয়াস সবাই নেককার ছিলেন।
ঈসমাইল, ইয়াসাআ, ইউনুস, লুত প্রত্যেককে বিশ্বে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছিলাম।
তাদের পূর্বপুরুষ, পরবর্তি বংশধর, ভাইদের থেকে নির্বচিত করেছি ও সরল পথ দেখিয়েছি।

এটা আল্লাহর হিদায়াত,
যা দিয়ে উনার আবেদদের মাঝে যাকে ইচ্ছা হিদায়াত দেন।
যদি তারা শিরক করতো তবে তাদের আমল বাতিল হয়ে যেতো।
উনাদেরকে কিতাব, হুকুমত, নবুয়ত দিয়েছি।
যদি তারা এতে কুফরি করতো তবে
দায়িত্ব দিতাম এমন কওমকে যারা কুফরি করতো না।

আল্লাহ তাদের সৎ পথে চালিয়েছেন,
তাই তাদের সৎপথের অনুসরন করুন।
বলে দিন, এর জন্য আমি তোমাদের কাছে টাকা চাইনা।
এ মনে করিয়ে দেবার জন্য, সব দুনিয়াকে।

তারা আল্লাহকে যোগ্য সম্মান করে নি,
যারা বলে: কোনো মানুষের উপর আল্লাহ কিছু নাজিল করেন নি।
বলেন, মুসা যে কিতাব এনেছিলো তা কে নাজিল করেছিলো?
সেটা ছিলো মানুষের জন্য নূর আর হিদায়াত।
যার কিছু তোমরা কাগজে প্রকাশ করো, অধিকাংশ গোপন করো।
তোমাদের শেখানো হয়েছিলো যা তোমরা বা তোমাদের বাপ-দাদারা জানতো না।
বলেন: আল্লাহ!
এর পর তাদেরকে তর্ক খেলার মাঝে ছেড়ে দিন।

এই কিতাব নাজিল করেছি বরকতময় করে,
এর আগের গুলোর সমর্থক করে।
যেন আপনি মক্কা আর আশে-পাশের লোকদের সাবধান করতে পারেন।
যারা আখিরাতে বিশ্বাস করে তারা
এতে বিশ্বাস করে আর নামাজের হেফাজত করে।

তার থেকে বড় জালিম কে, যে আল্লাহকে নিয়ে মিথ্যে বলে?
যে বলে, আমার উপর ওহি এসেছে, অথচ তার উপর কোনো ওহি আসে নি।
যে বলে, আল্লাহ যেমন নাযিল করেছেন, আমিও নাজিল করে দেখাচ্ছি।
যদি দেখতেন, যখন-
যালেমরা থাকবে মৃত্যু যন্ত্রনায়।
ফিরিস্তারা হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, তোমাদের জান বের করে দাও!
তোমাদের জন্য আজকে অপমানকর আযাব,
আল্লাহকে নিয়ে যেই মিথ্যে বলতে তার কারনে।
উনার আয়াতের সামনে তোমরা অহংকার করতে।

তোমরা একা এসেছো, যেভাবে প্রথম সৃষ্টি করেছিলাম।
যা দিয়েছিলাম সব পিছে ফেলে।
তোমাদের সেই সুপারিশকারীদের দেখছি না,
যাদেরকে শিরকে ধারনা করতে।
তোমাদের সম্পর্ক কেটে গিয়েছে, দাবি সরে গিয়েছে।

20-Aug-2017 10:05 am

Published
20-Aug-2017