Post# 1502353395

10-Aug-2017 2:23 pm


দক্ষিণ গোড়ান
পানি নেই ১০ দিন
০৮ আগস্ট ২০১৭

‘অনেক দিন ধরে পানির সমস্যায় আছি। আমার ছেলেটা ফিল্টারের পানি দিয়ে কাপড় ধোয়। ওয়াসার লোকজন ও আরএফএলের লোকজন পরস্পরের দোষ দিচ্ছে। এ দুয়ের ধাক্কাধাক্কিতে আমাদের জীবন শেষ!’

এমনই অভিযোগ জানান দক্ষিণ গোড়ানের ১৩১ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা মো. আবির আহমেদ। তিনি বলেন, বাসায় পানি আসে না। কিনে এনে ব্যবহার করতে হয়। পাইপলাইনে, নাকি অন্য কোথাও সমস্যা, তা কেউ বলতে পারছে না।

গত ১০ দিন দক্ষিণ গোড়ান টেম্পোস্ট্যান্ড থেকে গোড়ান বাজার পর্যন্ত প্রায় ৬০-৭০টি বাড়িতে পানি পাওয়া যাচ্ছে না বলে এ এলাকার মানুষজনের অভিযোগ।

ঢাকা এনভায়রনমেন্টাল সাসটেইনেবল ওয়াটার সাপ্লাই প্রকল্পের আওতায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আরএফএল পানির লাইনগুলো বসানোর কাজ করছে।

আবির আহমেদ বলেন, ‘আমার বাড়িতে ৩৪টি ফ্ল্যাট আছে। বাসায় ওয়াসার সরবরাহকৃত পানি না পেয়ে ওয়াসার থেকেই চার গাড়ি পানি কেনার চাহিদা দিয়েছি। কিন্তু পেয়েছি এক গাড়ি, তাও রাত পৌনে দুইটার দিকে পানি দিয়ে গেছে। এক গাড়ি পানিতে এত মানুষের কী হয়?’ তিনি বলেন, পরিচিত বলে তিনি পানি নিতে পেরেছেন। অনেকে পানি পাচ্ছেন না।

একজন গৃহিনী বলেন, ‘গতকাল রাত তিনটায় ওয়াসার গাড়ি থেকে পানি দিয়ে গেছে। সেগুলো ট্যাঙ্কির তলানিতেই পড়ে থাকে।’ তিনি বলেন, তিনি যে বাড়িতে থাকেন সেখানে আরও পরিবার থাকে। সবাই পানির জন্য হাহাকার করছে। তিনি বলেন, ‘বোনের বা ভাইয়ের বাসা থেকে দুই দিন পরপর গোসল করে আসতে হয়। গোসল করতে প্রতিদিন অন্যের বাসায় যাওয়াও বিব্রতকর।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি ফ্ল্যাট মালিক সমিতির সদস্য বলেন, ওয়াসাকে সমস্যার কথা জানিয়েছেন। তারা বলেছে এটা তাদের দায়িত্বে নেই। যারা কাজ করছে তারা কাজ শেষে ঠিক করে দেবে। আরএফএলের লোকজনের সঙ্গে কথা বললে তারা বলে, তারা ওয়াসার পুরোনো পানির লাইন ধরেনি। নতুন কোথাও সমস্যা হলে ঠিক করে দেবে। এত সবের মধ্যে ১০ দিনের বেশি সময় ধরে পানি নেই।

এ এলাকাতেই ভাড়া বাসায় থাকেন হাসনা জাহান। তাঁরা চার ছেলেমেয়েসহ ছয়জনের পরিবারের জন্য যে পানি পান, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। তিনি বলেন, ‘২৪ ঘণ্টায় একবার সকালে পানি পাই। পানির অভাবে নিজেদের ও বাচ্চাদের ভালো করে গোসলই হয় না।’

এ বিষয়ে ঢাকা ওয়াসার মডস জোন ৬-এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রাজ্জাক শিকদার বলেন, ‘গোড়ান এলাকার পানির সমস্যা নিয়ে অভিযোগ পেয়েছি। ওই এলাকায় গতকাল ৯৪ গাড়ি পানি দিয়েছি। ওয়াসার লাইনের পানি তো যাচ্ছেই, ওনারা পাচ্ছেন না, পানি তাহলে কোথায় যাচ্ছে? এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালকই ভালো বলতে পারবেন।’

আবদুর রাজ্জাক শিকদার আরও বলেন, ‘পানির পাইপলাইন বসানোর কাজ এডিবি-আরএফএল করছে। এ কাজে আমরা হাত দিতে পারি না। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। দুপক্ষের লোকজন গিয়ে দেখুক কী সমস্যা।’ তিনি বলেন, প্রকল্পের পাইপলাইন বসানোর আগে পানি নিয়মিতই পেতেন এলাকার মানুষ।

এ বিষয়ে ঢাকা এনভায়রনমেন্টাল সাসটেইনেবল ওয়াটার সাপ্লাই প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালক মাহমুদুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

10-Aug-2017 2:23 pm

Published
10-Aug-2017