Post# 1487233386

16-Feb-2017 2:23 pm


প্রসংগ : নাস্তিকদের সাথে তর্ক।


"কোরআনের মাধ্যমে তোমাদের প্রতি এই হুকুম জারি করেছেন যে,
যখন আল্লাহ তায়ালার আয়াতের প্রতি অবিশ্বাস ও বিদ্রুপ শুনবে,
তখন তোমরা তাদের সাথে বসবে না,
যতক্ষণ না তারা অন্য প্রসঙ্গে যায়।

তা না হলে তোমরাও তাদেরই মত হয়ে যাবে।
আল্লাহ দোযখের মাঝে মুনাফেক ও কাফেরদেরকে একই জায়গায় একত্রিত করবেন।"

সুরা নিসা - ১৪০

ব্যসিক্যলি কেউ যদি ইসলামের কিছুকে গালি দিতে থাকে, বা দোষ ধরতে থাকে তবে তার সাথে তর্ক করে ইসলামকে ডিফেন্ড করার বদলে সেখান থেকে চলে যেতে বলা হয়েছে।


এর এক্সেপশন কি আছে। যেমন হাদিসে?

আছে। যখন মুসলিম কবিদের বলা হয়েছিলো কাফের কবিদের জবাব দিতে। ডিটেলস হাদিসগুলো কোট করছি না, খুজে নিতে পারবেন।

তবে আমি এটা দেখি এক্সপার্টদের তর্ক করার অনুমতি হিসাবে। আমাদের মত আম-লোকদের না।


নাস্তিকদের সাথে তর্ক করতে গিয়ে নাস্তিক হয়ে গিয়েছে এরকম বহু উধাহরন আমি নিজে দেখেছি।

দুটো উদাহরন দিচ্ছি :

৫/৭ বছর আগে আরব এক লোক নাস্তিকদের যুক্তি খন্ডন করে ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করতো। এই রকম ২০-২৫ টা ভিডিও আপলোড করার পরে শেষ একটা ভিডিও দিয়ে সে ঘোষনা দেয় "...আমি নাস্তিক হয়ে গিয়েছি।"

মালেয়শিয়ার এক মসজিদের ইমাম। reddit নামে একটা সাইটে নাস্তিকদের গ্রুপে গিয়ে তর্ক করতো। এর পর এক দিন সে ঘোষনা দেয় "আমি আমার বিশ্বাস হারিয়ে নাস্তিক হয়ে গিয়েছি। ইসলামের সব মিথ্যা মনে হচ্ছে। আমি এখন কি করবো?"

তার সমস্যা আরো ছিলো। সে মসজিদের ইমাম এবং সে চাকরি ছাড়ার জন্য তৈরি ছিলো না।

শেষে তাকে উপদেশ দেয়া হয়, তুমি তোমার কুফরির কথা লুকিয়ে রেখে ইমামতি করতে থাকো। মুক্তাদিদের নামাজের কি অবস্থা হবে, আল্লাহ জানেন।


পশ্চিমা স্কলাররা এত "মডারেট" কেন জানেন?

কারন তাদের ইসলামের প্রতিটা খুটিনাটি জিনিস কোনো অবিশ্বাসির কাছে ডিফেন্ড করতে হয়। যুক্তি দিয়ে বুঝাতে হয় এটাই ঠিক। কিন্তু আমরা যারা মুসলিম প্রধান দেশে থাকি তাদের এটা করতে হয় না।

এই ডিফেন্স কিছু দূর পর্যন্ত করা যায়। কিন্তু এক সময় আটকিয়ে যেতে থাকে। প্রতিদিন ঘর থেক বাইরে পা দিয়ে যদি অন্যের কাছে নিজের দ্বিন ডিফেন্ড করতে হয় তবে একসময় এর প্রভাব পড়বে।

"মাছির এক পাখাতে রোগ অন্য পাখাতে শিফা?"
ডিফেন্ড করতে পারছি না?

সমাধান: "এটা আল্লাহর কথা না, বরং তোমরা আল্লাহর কথা কোরআনে মনোযোগ দাও।"

এভাবে "কুরআনিয়ান" আইডোলজির এর দিকে সে এক কদম বাড়লো।

বা, "আইশা রা: ৯ বছর বয়সে রাসুলুল্লাহ ﷺ কে বিয়ে করেছিলেন?"

ডিফেন্ড করতে পারছি না?
সমাধান: হাদিস কম আর যুক্তি বেশি দিয়ে প্রমানের দিকে চলে গেলাম -- উনার বয়স তখন আসলে ১৬ ছিলো।

এর উপর আছে ইসলামের স্লেইভারি, কিতাল, শাতিমের হুকুম এরকম আরো অনেক।


এটা মনে রাখতে হবে:

- কোনো নাস্তিকের কাছে আমার দ্বিনকে ডিফেন্ড করার সামর্থের উপর আখিরাতে আমার মুক্তি নির্ভর করে না। নির্ভর করে: ইসলাম মানা আর পালন করার উপর।

- ইসলামের সব কিছু সবার কাছে ডিফেন্ডেব্যল হওয়া শর্ত না। এটা চেষ্টা করেছিলো গোড়া ইলমুল কালাম বা ফিলসফির চর্চাকারীরা ৬০০ হিজরির দিকে। আল্লাহ তায়ালা বাগদাদ শহর ধ্বংশ করে দিয়েছিলেন এর peak এ।

- রাসুলুল্লাহ ﷺ এর দাওয়াতের পদ্ধতি যুক্তি তর্ক স্টাইলে ইনটিলেকচুয়াল ছিলো না। বরং ছিলো একই কথা বার বার রিপিট করে দাওয়া দিয়ে যাওয়া। যেটা সৈয়দ হাসান আলী নদভী উনার কিতাবে বর্ননা করেছেন।


ইসলামের কিছু জিনিস আছে একেবারে অন্ধের মত বিশ্বাস করতে হয়।

একই জিনিষ, বিশ্বাসিদের ঈমান এটা শুনার পর বাড়বে, আবার অবিশ্বাসিরা এটা শুনে নিশ্চিৎ হবে এটা মিথ্যা।

আমি একটা উদাহরন দিতে চাচ্ছিলাম। কিন্তু মানুষ আবার ফিতনায় পড়ে যায় কিনা এই সব শুনে সে আশংকায় চুপ থাকলাম।

কিন্তু নাস্তিকরা এগুলো জানে। এট লিষ্ট বাংগালি নাস্তিকরা না জানলেও বিদেশি নাস্তিকরা এটা জানে এবং আপনি তাদের সাথে তর্ক করতে গেলে এটা আপনার কাছে এক সময়ে প্রেজেন্ট করবে।

নিজেকে প্রশ্ন:
আমার ঈমান কি ঐ থ্রেসহোল্ডের উপরে যে সেটা শুনার পর আমার ঈমান আরো বাড়বে?
নাকি এত নিচে যে সেটা শুনে আমারও ঈমান চলে যাবে?


১ নং পয়েন্টের আয়াতটা আবার পড়ে দেখেন। বলা হচ্ছে নাস্তিকদের সাথে থাকলে তোমরাও নাস্তিক হয়ে যাবে। এজন্য অনেক আলেম তাদের সাথে তর্ক করতে নিষেধ করে সেখান থেকে চলে যেতে বলেন। এটা ঠিক, তাদের জবাব দিতে হবে। কিন্তু সেটা এক্সপার্টদের উপর ছেড়ে দিন।

And in any case, আমার ঈমান যেন এই সকল যুক্তির উপর নির্ভর না করে।


"এইভাবে আল্লাহ [একই উক্তি দ্বারা]
কাউকে বিপথগামী করেন,
আবার কাউকে সৎ পথ দেখান।" --
সুরা বাকারায় এই কথা আল্লাহ তায়ালা বলেছেন মাছির উদাহরন দেবার পর।
সুরা মুদাসসিরে একই কথা বলেছেন জাহান্নামের ফিরিস্তাদের সংখ্যা বলার পর।

তর্কে জিতাটা আমার জন্য শর্ত না।
ইসলামের প্রতিটা পয়েন্টের পেছনের যুক্তি জানাও আমার জন্য শর্ত না।

বরং সাহাবা কিরামদের মত আমরাও এই কথা বলি:

"আমরা শুনলাম, আমরা মানলাম, আমাদের রব,
আমরা আপনার কাছে ফিরে আসছি।"

  • সুরা বাকারা।
      Comments:
    • পশ্চিমে এটা আরম্ভ হয়েছে ৫ বছর আগে। এখন এই দেশে এর ধাক্কা পড়লো।

      ইন্টারেস্টিংলি এটা deflation এর লক্ষন। এবং deflation ছিলো প্রথম বিশ্বযুদ্ধের একটা কারন।

    • চ্যনেলের লিংক:
      https://www.youtube.com/channel/UCtnc9OC0h5-Gom_nnPdDLDQ
      https://www.youtube.com/channel/UCtnc9OC0h5-Gom_nnPdDLDQ

    16-Feb-2017 2:23 pm

  • Published
    16-Feb-2017