পাইলট:
আমাদের জেনারেশন যখন ছোটো ছিলো তখন কাউকে "বড় হয়ে কি হবে?" জিজ্ঞাসা করলে সবাই জবাব দিতো "পাইলট হবো, প্লেন চালাবো।"
পাইলট হওয়া তখন ছিলো ড্রিম জব।
তবে ব্যক্তিগত ভাবে আমি পাইলট হওয়া পছন্দ করতাম না। আশংকা ছিলো পাইলট হলে নামাজ কাজা হবে। বা এটলিস্ট জামাতের সাথে পড়া যাবে না।
___
পাইলট হওয়া ঐ যুগে রিস্কি এবং হিরোইক হিসাবে দেখানো হতো। বিশেষ করে ফাইটার পাইলট।
এক জনপ্রীয় বাংলা-হিন্দি ফিলিম ছিলো তখন। সেটাতে দেখানো হতো বাপ পাইলট, প্লেন ক্রাশ করে মারা যায়। এর পর ছেলে পাইলট হয়, সেও প্লেন ক্রেশ করে মারা যায়। এর পর নাতিও পাইলট হয়ে মারা যায়।
মা তখন আর কাদতে পারে না। পাথর। সে যুগে যে বাংলা ফিলিম মানুষকে যত কাদাতে পারতো সেটা তত হিট।
ন্যকামি যতসব। :-D
___
এরশাদের আমলে বাংলাদেশের পাইলটরা সব স্ট্রাইকে যায় বেতন বাড়ানোর জন্য। তখন পত্রিকায় বাংলাদেশের সব পাইলটদের নাম ধরে কার কত বেতন সেটা ছাপিয়ে দেয় সরকার।
তাদের বিশাল বেতন দেখে আমাদের চক্ষু চড়কগাছ।
বড় হবার পর জেনেছি বিশ্বব্যপি পাইলটদের বেতন আসলে তত বেশি না। যেহেতু সবাই পাইলট হতে চেতো তাই পাইলটদের সংখ্যা বেশি ছিলো। সাপ্লাই বেশি, তাই বেতন কম।
আমেরিকার একজন প্রোগ্রামের বেতন ছিলো পাইলটের দ্বিগুন।
___
আজকে খবরে পড়লাম: আমাদের পরবর্তি জেনারেশনের পাইলট হবার মোহ কেটে যাওয়ায় পাইলট তৈরি হয়েছে কম। অধিকাংশ পাইলট বয়স্ক এবং তারা রিটায়েরমেন্টে যাচ্ছে।
এদিকে তেলের দাম কমে যাওয়ায় মানুষ প্লেনে চড়ছে বেশি। ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়ছে। পাইলটের ক্রাইসিস তৈরি হচ্ছে। ফ্লাইট বাতিল হচ্ছে কারন পাইলট নেই। এবং যারা প্লেন চালাচ্ছে তারাও বিশ্রাম পাচ্ছে না বলে ঘন ঘন প্লেন ক্রাশ করছে।
ঐ যুগের অতিরিক্ত পাইলট থেকে বর্তমানের পাইলটের ক্রাইসি।
লম্বা সময়, অনেক পরিবর্তন।