ভবিষ্যতের কিছু ঘটনার ক্রম নিয়ে একটা হাদিস:
http://sunnah.com/abudawud/39/4
এই হাদিসের ব্যপারে নানান জনের নানান রকম ব্যখ্যা আছে।
আমি যে ব্যখ্যা গ্রহন করি সেটা নিচে:
১। বলা হয়েছে, প্রথমে জেরুজালেম শহররের ডেভালেপমেন্ট আরম্ভ হবে। জেরুজালেম শহর এখনো সেই মধ্যযুগীয় স্ট্রাকচার নিয়ে আছে। ইসরাইলি অকুপেশনের জন্য উন্নয়ন নেই।
এটা পরিবর্তিত হবে। এখনও ঐ রকম ভাবে হয় নি।
___
২। জেরুজালেমের ডেভেলেপমেন্ট অরম্ভ হবার পর পরই মদিনা শহর ধ্বংশ হবে। কি হবে? কেন হবে? কিভাবে হবে? সেটা বলা নেই। শুধু বলা আছে خراب ধ্বংশ হবে, ধ্বংশস্তুপে পরিনত হবে।
মদিনা শরিফের কোনো ক্ষতি হবে, অনেকে ইমোশোনালি এটা মেনে নিতে পারে না। তাদের ব্যখ্যা এর দ্বারা বুঝাচ্ছে, "মদিনা শহরের পলিটিক্যল পাওয়ার কমে যাবে।" তবে আমি কোনো কারন ছাড়া এ ধরনের রূপক ব্যখ্যা গ্রহন করি না।
কিন্তু রওজা শরিফের কি হবে? কিছু হবে না। রওজা শরিফ ঠিক থাকবে। ঈসা আ: এর দাফন সেখানে হবে।
ধ্বংশ হওয়া মানেই প্রত্যেকটা বিল্ডিং মাটির সাথে মিশে যাওয়া বুঝায় না। মদিনা শরিফ এর আগেও ধ্বংশ হয়েছিলো ১ম শতাব্দিতে। ইয়ামুল হাররার দিনে। এর পর আবার উঠে দাড়িয়েছে।
অন্য বর্ননায় আছে মদিনা শরিফ তিন বার ধ্বংশ হবে, প্রতিবারই নতুন করে আবার জনবসতি হবে। শেষ বার আর মানুষ ফিরে আসবে না।
এই হাদিসে যে ধ্বংশের কথা বলা হচ্ছে সেটা শেষ বারেরটা না। মাঝের কোনো একটা। আমি এভাবে দেখি।
____
৩। মদিনা শরিফ ধ্বংশের কারনে বিশ্বযুদ্ধ আরম্ভ হবে। আরবী শব্দ যেটা ব্যবহার করা হয়েছে সেটা হলো "মুলাহিম"। কয়েক দফায় হবে।
___
৪। বিশ্বযুদ্ধের পর তুরস্ক বিজয় হবে। এটা এখনো মুসলিমদের দখলে। আমি ধরে নিয়েছি এটা মুসলিমদের হাত ছাড়া হয়ে যাবে এর আগে।
অনেকে "তুরস্কের সরকার কাফির" এই ব্যখ্য দিয়ে বলেন এটা এখনই মুসলিমদের হাতছাড়া। আমি এই ব্যখ্যা গ্রহন করি না। তুরস্কের সরকারকে আমি মুসলিম মনে করি।
___
৫। শেষে, তুরস্ক বিজয়ের পর পরই দাজ্জাল বেরিয়ে আসবে।
___
এখন এগুলো নিয়ে ওভার এক্সইটেড হবার কোনো কারন নেই। একটা উদাহরন, কসতুনতুনিয়া [তুরস্ক] অবরুদ্ধ হয়েছিলো মুসলিমদের কাছে সেই ১ম শতাব্দিতে। তখনই মুসলিমরা ধারনা করেছিলো দাজ্জাল বোধ হয় এখনই আসবে যেহেতু হাদিসে বলা হয়েছে কসতুনতুনিয়া বিজয়ের পর পরই দাজ্জাল আসবে। কিন্তু এর পর আরো ১৩শ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। এবং দ্বিতীয় আরেকবার তুরস্ক বিজয়ের সময় হয়ে আসছে।
তাই এসব ব্যপারে, কি হবে? এই নিয়ে বেশি বেশি ধারনা করতে থাকলে কিছুই মিলে না। কিন্তু সত্যিকারের যখন হতে থাকে তখন মুসলিমরা বুঝতে পারে যে "এটার কথাই হাদিসে বলা হয়েছে।"
যেমন "উচু বিল্ডিং কন্সট্রাকশন আর বিল্ডিংগুলো হবে পাহাড় থেকে উচু", এটা এখন মিলছে কোনো রূপক অর্থ ছাড়াই। সবাই বুঝতে পারছে কোনো ব্যখ্যা ছাড়া।
___
FAQ:
এধরনের পোস্ট দিলে কিছু কমন প্রশ্ন আসে সবসময়। যেগুলোর উত্তর এখনই দিয়ে দিচ্ছি। ফিতনা, বিতর্ক এড়ানোর জন্য কমেন্টের সব প্রশ্নের উত্তর দেয়া সম্ভব না বলে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
Q. আমি এই ব্যপারে ইন্টারেস্টিং। আরো জানতে চাই। কিভাবে পাবো?
নেটে পাবেন। সার্চ দিন। আমি জেনেছি হাদিসের বই পড়ে। হাদিসের সকল বই, কোনো নির্দিস্ট একটা না।
Q. ঐ কথার দলিল দেন।
অনেক কথা বলেছি। সবকথার দলিল আমার কাছে মৌজুদ নেই। নিজে খুজে নিন। না পেলে ধরে নিন ঐ কথার দলিল পাওয়া যায় নি।
আমি তাই করি। কারো পোস্টে যদি আমি নতুন কোন কথা দেখি তবে তার কাছে দলিল না চেয়ে আমি নিজে নেটে সার্চ করে দলিল খুজে নেই। না পেলে ধরে নেই এটার দলিল পাওয়া যায় নি।
Q. আমি জানি "এটার" ব্যখ্যা আপনি যা লিখেছেন সেটা না, এর অর্থ "ওটা"।
এই বিষয়ে আমাদের দুজন দুরকম ব্যখ্যা গ্রহন করলে তাতে আমি ক্ষতি দেখি না।
Q. এই সব ব্যখ্যা করার অধিকার আপনাকে কে দিলো? এই ভুল ব্যখ্যা দিয়ে যত মানুষ পথভ্রস্ট হবে তার দায়িত্ব কে নেবে?
আমি যদি উত্তর দেই "দায়িত্ব এই লোক নেবে" এবং আমার এই দায়িত্ব চাপানো যদি ভুল লোকের উপর হয়, তবে এভাবে ভুল লোকের উপর গুনাহর দায়িত্ব চাপানোর দায়িত্ব কে নেবে? :-P