Post# 1458721668

23-Mar-2016 2:27 pm


(অনুবাদ)
একটা আশ্চর্য ঘটনা চোখে পড়লো "ওমর বিন আব্দুল আজীজ" জীবনী বইয়ে। যে ঘটনা বর্নিত হয়েছে "তারিখ আল-ইসলামি আল-মাগরিবে"। ঘটনা কিসের উপর? "সমরকান্দ বিজয়ের" গল্প। আর তাতে ইসলামের আজমত নিয়ে।
_________

এক ছেলে ডাকলো "ইয়া কুতাইবা"। এইভাবেই। এর সাথে আর সম্মানসূচক কোনো শব্দ যোগ করলো না।

কুতাইবা আসলেন। এর পর উনি, এবং খৃস্টানদের বড় পাদ্রি, সবাই বসলেন মুসলিমদের কাজ্বী জুমাইয় এর সামনে।

কাজী বললেন, "তুমি কি চাও, হে সমরকান্দী?"

ছেলেটি বললো, "কুতাইবার সেনাদল আমাদেরকে পরাজিত করেছে, কিন্তু এর পূর্বে আমাদেরকে ইসলামের দিকে তারা ডাকে নি। এবং আমরা অপ্রস্তুত অবস্থায় ছিলাম যতক্ষন না আমরা আমাদের অবস্থা উপলব্দি করি।

কাজী কুতাইবার দিকে ফিরে বললেন, "এই ব্যপারে তোমার কি বক্তব্য কুতাইবা?"

কুতাইবা জবাব দিলেন, "যুদ্ধ হলো কৌশল। আর এই দেশটা ছিলো শক্তিশালি। এর আগে এর আশে পাশের সবগুলো দেশ আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ দাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো। এবং সে দেশগুলোর কোনোটা ইসলাম গ্রহন করে নি, কিংবা জিজিয়া কর দিতে রাজি হয় নি।"

কাজী জিজ্ঞাসা করলেন, "হে কুতাইবা, আপনি কি তাদেরকে ইসলামের দিকে দাওয়াত দিয়েছিলেন? নয়তো জিজিয়ার? নয়তো যুদ্ধের?"

কুতাইবা বললেন, "না। তাদের আকস্মিকভাবে আক্রমন করেছি। যেভাবে আপনাকে বললাম।"

কাজী বললেন, "আমি দেখছি আপনি স্বীকার করে নিয়েছেন। আর দোষ স্বীকার করে নিলে বিচারকের বিচার শেষ হয়ে যায়। হে কুতাইবা। আল্লাহ এই উম্মাহকে সাহায্য করেন শুধু এই দ্বীনের কারনে, আর বিশ্বাসঘাতকতা না করার কারনে, আর ন্যয়বিচার প্রতিস্ঠা করার কারনে।"

এর পর বললেন, "আমি রায় দিলাম, সমরকন্দের ভুমি থেকে সমস্ত মুসলিমদের বেরিয়ে যেতে হবে। সেনাপতি, সন্য, বেসামরিক ব্যক্তি, শিশু এবং মহিলা সবাই। এবং বেড়িয়ে যাবার সময় তারা তাদের দোকান পাট আর বাড়ি ফেলে যাবে। সমরকন্দে যেন একজনও বাকি না থাকে। এর পর যেন সেখানে কোনো মুসলিমকে আর না দেখা যায়।"

পাদ্রী নিজেও বিশ্বাস করতে পারছিলো না সে কি দেখছে আর কি শুনছে।

তার সাক্ষিও চাওয়া হয় নি, বা তার কথাও শুনে নি। কোনো সাক্ষি নেই, কোনো প্রমান নেই। বিচার কয়েক মিনিটের মাঝে শেষ।

পাদ্রী তখন বুঝতে পারলো কি হয়েছে যখন কাজী, ছেলেটা আর কুতাইবা বেরিয়ে এসে তার সামনে দাড়ালো।

এর কিছু ঘন্টা পর সামারকন্দবাসীরা নিনাদ শুনতে পেলো, জোরে ডাক শুনলো, তাদের মাঠের ঝোপগুলো ধুলায় ঢেকে গেলো। তারা দেখলো ধুলার পেছনে পতাকা উড়ে যাচ্ছে।

জিজ্ঞাসা করে করে সবাই জানতে পারলো, "বিচারক আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছেন। এবং সেনাবাহিনী চলে যাচ্ছে।"

এ এমন দৃশ্য যে, যে এটা দেখেছে বা শুনেছে, তাদের চামড়ার লোম দাড়িয়ে যাবার মত।

সুর্যডোবার সময়েই দেখা গেলো মুক্ত এবং খালি রাস্তায় সমকন্দের কুকুরগুলো ঘোরা ফেরা করছে।

আর প্রতিটা বাড়ি যেগুলো খালি করে দেয়া হচ্ছিলো সেগুলো থেকে কান্না শব্দ আসছিলো।

এটা সেই উম্মাহ যারা তাদের দেশে ন্যয় বিচার প্রতিস্ঠা করেছিলো আর তারা ছিলো দয়ার্ত।

এর পর বড় পাদ্রী এবং সমরকান্দবাসীরা, বেশিক্ষন স্থির থাকতে পারলো না। তাদের এক দল লোক, বড় পাদ্রীকে সামনে নিয়ে এগিয়ে গেলো মুসলিমদের ক্যম্পের কাছে, এবং বললো তারা শাহাদাহ দিতে চায় লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, মুহাম্মাদ আর-রাসুলুল্লাহ।

ইয়া আল্লাহ। আশ্চর্য ঘটনা। এবং এই বর্ননা আমি "তারীখ আল মাশরিক" - এ পেয়েছি।

কখনো দেখেছো কোনো সেনাবাহিনী কোনো শহর বিজয় করেছে আর সেই শহরের মানুষ বিজয়ী সেনার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে গিয়েছে? এবং এর পর তাদের বিচারক রায় দিয়েছে বিজয়ীরা যেন সেই শহর ছেড়ে চলে যায়?

ওয়াল্লাহ আমি এর আগের কোনো উম্মাহর থেকে এরকম কিছু শুনি নি।

শেষে জেনে নিন, এই ঘটনা ছিলো একজন ন্যয় পরায়ন খলিফা, উমর বিন আব্দুল আজীজের সময়কার। তখন সমরকান্দবাসীরা তাদের এক দূত পাঠিয়েছিল। বিচার জানিয়ে, যে মুসলিম সেনারা তাদের ভূমিতে প্রবেশ করে, তাদেরকে কোনো রকম সতর্ক বানী না দিয়ে, বা দাওয়াহ না দিয়ে। কাজী তখন তাদের দূতকে এই বিচারের হুকুম লিখে জানিয়ে দেন।

ইতিহাসে এ ঘটনা এভাবে লিখা আছে।

[অনুবাদ, মূল আরবী এখানে]
https://www.facebook.com/permalink.php?story_fbid=1075471272474559&id=362699180418442

#HabibTranslation

23-Mar-2016 2:27 pm

Published
23-Mar-2016