Post# 1457225230

6-Mar-2016 6:47 am


বাশার:

"ছুন্নীদের" বিশ্বাস হলো রাসুলুল্লাহ ﷺ নূরের তৈরি। সেখান থেকে আরো এসেছে এই সব টার্মস:

- "নূরে মুজাসসাম" মানে উনার দেহ নূরের তৈরি।

  • "জাতী নূর" মানে যেই নূর আল্লাহ তায়ালার নিজস্ব ঐ নূরই দিয়েই রাসু..... <বাকিটা আর লিখতে পারলাম না, বুঝে নিয়েন>
  • কেউ যদি বলে রাসুলুল্লাহ ﷺ আমাদের মত মানুষ ছিলেন তবে সেটা হলো কুফরি।

    ´এ গেলো তাদের বিশ্বাস। এবং এই শব্দগুলো পরবর্তিতে কোথাও পেলে বুঝতে পারবেন কি বুঝাচ্ছে।
    _____
    আর তাদের দাবীর বিপক্ষে সবচেয়ে ডাইরেক্ট আয়াত হলো সুরা কাহাফের শেষ আয়াত। কুল ইন্নামা আনা বাশারুম মিথলুকুম।

    যার বাংলা অর্থ: আপনি বলে দিন, নিশ্চই আমি তোমাদের মত মানুষ [আরবীতে বাশার], তবে আমার উপর ওহি নাজিল হয় যে তোমাদের ইলাহ এক ইলাহ।

    "আপনি বলে দিন" মানে হলো আল্লাহ রাসুলুল্লাহ ﷺ কে বলছেন এটা অন্যদেরকে বলে দেবার জন্য।
    _____
    আমি অনেকদিন ধরেই এই ব্যপারে একটা স্পস্ট ফতোয়া খুজছিলাম। ধরে নিয়েছিলাম ছুন্নীরা এই আয়াতের কি ব্যখ্যা করে সেটা জানতে পারলে হয়তো আমার কনফিউশন দূর হয়ে যাবে।

    অনেকদিন চেস্টার পর জানলাম। কিন্তু তাতে খুশি হওয়াতো দূরের কথা, দাজ্জালের ভয়ে আমি ভীত হয়ে গেলাম। লিটারেলি।
    ____

    এখানে তাদের ব্যখ্যা:
    https://www.facebook.com/habib.dhaka/videos/vb.552028175/10153423301033176/?type=2&theater

    - বাশার শব্দটা আল্লাহ তায়ালা কোরআন শরিফে নবীকে উদ্দ্যেশ্য করে বলেন নি।

  • কাফেরদেরকে উদ্দেশ্য করে আল্লাহ বলেছেন।
  • নবীরা আমাদের মত বাশার একথা ফিরআউন, ইবলিছ বলেছে।
  • তারা নবীকে খাটো করার জন্য বাশার বলতো।
  • তবে নবীর জাত বাশার এটা ঠিক।
  • কোরআন শরিফ থেকে প্রমান আনতে হবে, কোনো মুমিন নবীকে বাশার বলেছে কিনা।
    _____
    কথাগুলো একটা অন্যটার বিপরিত।

    তাই ধাপে ধাপে উনার কথাগুলো বুঝার চেষ্টা করি। এখানে আইনুল হুদা ভাই বলছেন:
    ____

  • নবীকে উদ্দ্যেশ্য করে আল্লাহ বাশার বলেন নি।

    দাবিটা ভুল। নবী ﷺ কে উদ্যেশ্য করেই আল্লাহ বাশার বলেছেন। "কুল.." অর্থাৎ "হে নবী আপনি অন্যদের বলুন"।
    _____

  • এটা কাফেররা বলেছে।

    উহু! এটা কাফেরদের কথা না। আল্লাহ তায়ালা নিজের কথা। "কুল.." অর্থাৎ "হে নবী আপনি অন্যদের বলুন"। এখানে "অন্যদের" বলতে যদি কাফেরদের ধরি তাহলেও এটা কাফেরদের কথা হয় না। এটা আল্লাহর কথা থেকে যায়।
    ____

    - কথাটা কাফেরদেরকে উদ্দ্যেশ্য করে বলেছেন, মুমিনদেরকে উদ্যেশ্য করে না।

    হতে পারে। মূলধারার তফসিরের কিতাবে ঘাটলাম এমন কথা আছে কিনা। কাফেরদের উদ্যেশ্যে বলেছেন এমন ব্যখ্যা আছে।

    কিন্ত কাফেরদের উদ্যেশ্যে যেহেতু বলা হয়েছে তাই মুমিনদের উদ্যেশ্যে এটা প্রযোজ্য না -- এমন কোনো কথা নেই। অথবা মুমিনদের জন্য ভিন্ন কোনো কথা আছে, এমন কোনো কিছু কোথাও লিখা নেই.

    এই বিষযের উপর আইনুল হুদা ভাইয়ের ৩০ মিনিটের একটা লেকচার আছে। সেখানেও কোনো তফসিরের কিতাবের কোনো রেফারেন্স উনি দেন নি। তাই ধরে নিচ্ছি এই ব্যখ্যাটা উনার মনগড়া। এবং তফসিরের কিতাবগুলোতে এরকম কোনো ব্যখ্যা নেই।

    ____

  • মনগড়া ব্যখ্যা হলেও মেনে নিতে সমস্যা কি? সত্য হতে পারে না?

    সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো এখানে দাবি তোলা হচ্ছে আল্লাহ তায়ালা কাফেরদের উদ্যেশ্যে এক কথা বলেন আর মুমিনদের উদ্যেশ্যে ভিন্ন কথা। যেখানে দুটো কথা বিপরিতমুখি। কাফেরদের উদ্যেশ্যে বলা কথা মুমিনদের জন্য প্রযোজ্য না। তাই আল্লাহ তায়ালা যেন কাফিরদের উদ্যেশ্যে মিথ্যা বলেছেন, নাউজুবিল্লাহ।

    এই পয়েন্টে এসে আমি তাদের ব্যপারে দাজ্জালের ভয় করা আরম্ভ করেছি।
    _____

  • নবী বিনয়ের জন্য কাফেরদের সামনে নিজেকে বাশার বলেছেন।

    ঠিক আছে। কিন্তু এর পর? আমরা বিশ্বাস করি বিনয় করে উনি সত্য বলেছেন। বিনয় করে কেউ বলতে পারে "আমি গুনাহগার"। কথাটা সত্য কারন নবী রসুল বাদে সবাই কম বেশি গুনাহগার।

    তবে তার অর্থ এই না যে বিনয় করে যা বলেছেন তার উল্টোটা সত্য হতে হবে। তাহলে উনাকে বিনয় করে মিথ্যা বলার তোহমদ দেয়া হলো। নাউজুবিল্লাহ। এই তোহমদ দেয়া থেকে আমরা পবিত্র।

    এর পরও, এটা নবী ﷺ এর নিজের কথা না। এটা আল্লাহ তায়ালার কথা। "কুল..." মানে "আপনি তাদের বলে দেন আমি তোমাদের মত বাশার..."
    _____

  • বাশার বলতে অনেক কিছু বুঝাতে পারে। অন্য আয়াতে জিব্রিল আ: কে বাশার বলা হয়েছে।

    এই আয়াতে "আমি তোমাদের মত বাশার" বলা হয়েছে। মানে আমাদের মত। জিব্রিল আ: এর মত না। আয়াতে এখানে স্পস্ট করে দেয়া হয়েছে।
    ____

  • নবীর জাত বাশার এটা তো আইনুল হুদা ভাই স্বিকার করেছেন।

    তাহলে তর্ক থাকে না। "কথাটা শুধু কাফেরদের উদ্দ্যেশ্যে বলেছেন মুমিনদের উদ্দ্যেশ্যে বলেন নি" এই দাবি আসছে কেন?
    ____

  • কোরআন শরিফ থেকে প্রমান দেখাও কোনো মুমিন নবীকে বাশার বলেছে?

    কোরআন শরিফ মুমিনেদের কথা না। আল্লাহ তায়ালার কথা। মুমিনদের কথা খুজতে হলে অন্য কিতাব দেখতে হবে।

    এবং কোরআন শরিফের এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালাই স্বয়ং নবী ﷺ কে বাশার বলেছেন।
    ____

  • শয়তান, ফিরআউন নবীদের বাশার বলতো।

    শয়তান ফিরআউনরা দাবি করতো বাশার নবী হতে পারে না এবং নবী বাশার হতে পারে না। এবং বাশার যদি নবী হয় তবে তাকে কাফিররা মানবে না।

    এখন আমিও যদি ঐ একই দাবি করি যে নবী বাশার হতে পারে না, তবে আমার বিশ্বাস আর ঐ শয়তান-কাফেরদের বিশ্বাস এক রকম হলো।

    বরং আমি আল্লাহর ঐ কথা বিশ্বাস করি যে রাসুলুল্লাহ ﷺ আমাদের মত বাশার ছিলেন এবং রসুলও ছিলেন। এবং নবীর বাশার হতে কোনো দোষও নেই।

    নবী বাশার হতে পারেন নাকি পারেন না --- এটা আমার আর ফিরআউনের বিশ্বাসের মাঝে পার্থক্য।
    ____

  • কাফেররা নবী ﷺ কে খাটো করার জন্য এই কথা বলতো। তাই উনাকে বাশার বললে আমরাও উনাকে খাটো করলাম।

    বাশার হওয়াকে যদি কেউ খাটো হওয়া মনে করে, তবে সেটা তার বিশ্বাসের সমস্যা, মানে ঈমানে সমস্যা।

    বাশার হওয়া দ্বারা রাসুলুল্লাহ ﷺ এর মর্যাদা বিন্দু মাত্র কমে না। বরং বাড়ে। ফিরিস্তারা বাশারকে সিজদা করেছিলেন। এবং ইনসানের জন্যই হলো জান্নাহ। ফিরিস্তাদের জন্য না।
    ____
    কংক্লুশন:
    আল্লাহ তায়ালা উনার রাসুলের উপর অজস্র সালাম আর সালাত পাঠাক।

    আর বিভ্রান্তকারীদের বিভ্রান্তি থেকে আল্লাহ তায়ালা আমাদের হিফাজত করুন।

    এবং কোরআন শরিফের এমন নতুন ব্যখ্যা যা আগে কেউ করে নি, তা থেকে আল্লাহ তায়ালা আমাদের হিফাজত করুন।

    আমি আইনুল হুদা ভাইয়ের এই বিষয়ে ব্যখ্যা গ্রহন করতে পারছি না।

      Comments:
    • https://www.facebook.com/habib.dhaka/videos/vb.552028175/10153423301033176/?type=2&theater

    6-Mar-2016 6:47 am

  • Published
    6-Mar-2016