হিজরী সনের প্রচলন:
১৬ হিজরী সনের রবিউল আউয়াল মাসে উমর ইবন খাত্তাব (রা) হিজরী সন প্রচলনের ব্যবস্থা করেন৷ একদিন হযরত উমর (রা)-এর নিকট একটি দলীল উপস্থিত করা হলো৷ সেটিতে লেখা ছিল যে, আগামী শা‘বান মাসে অমুক ব্যক্তি অমুক ব্যক্তির নিকট ঋণের টাকা প্রাপ্য হবে৷
হযরত উমর (রা) জিজ্ঞেস করলেন, দলীলে উল্লেখিত শা‘বান মাস বলতে কোন মাস বুঝানো হয়েছে? চলতি বছরের শা‘ৰান মাস না গত বছরের শা‘বান মাস নাকি পরবর্তী বছরে শা‘বান মাস?
এরপর তিনি লোকজনকে ডেকে দরবারে উপস্থিত করে বললেন, তোমরা এমন একটা বিষয় নির্ধারিত কর যাতে মানুষ ঋণ প্রাপ্তির সঠিক সময় জানতে পারে৷
কেউ কেউ বলল, পারসিকদের ন্যায় রাজাদের সিংহাসনে আরোহণের হিসাবে আমরা তারিখ গণনা শুরু করতে পারি৷ ওদের নিয়ম ছিল যে, এক রাজার মৃত্যুর পর নতুন রাজা সিংহাসনে আরোহণ করলে তখন থেকে নতুন বছর শুরু হতো৷ উপস্থিত লোকজন এটি পছন্দ করেনি৷
কেউ কেউ বলল, রােমানগণ যখন সেকান্দর (র)-এর সিংহাসনে অবস্থানের সময় থেকে তারিখ গণনা করে যাচ্ছে তখন আমরাও সেভাবে গণনা করে যাই৷ কণ্ঠভােটে এই প্রস্তাব নাকচ হয়ে যায়৷
কেউ কেউ বললেন, রাসুলুল্লাহ সা: -এর জন্মের সময় থেকে সাল গণনা করা হোক৷
কেউ কেউ বললেন, নবুওয়াত প্রাপ্তির দিন থেকে তারিখ লেখা শুরু করা যায়৷
ইতিমধ্যে হযরত আলী (রা) এবং অন্যরা প্রস্তাব করলেন যে, রাসুলুল্লাহ সা: এর মক্কা থেকে মদীনায় যাবার দিন থেকে হিজরী সাল গণনা করা যায়৷ কারণ এই ঘটনা সবার জানা৷ তা ছাড়া রাসুলুল্লাহ ﷺ এর জন্ম ও নবুওয়াত প্রাপ্তির সময়ের তুলনায় এটি অধিকতর প্রসিদ্ধ৷ হযরত উমর (রা) এবং সাহাবিগণ এই প্রস্তাব ভাল মনে করলেন৷
তারপর হযরত উমর (রা) নিদের্শ দিলেন যে, রাসুলুল্লাহ সা: এর হিজরতের তারিখ থেকে আরবী হিজরী সন গণনা করা হবে৷ ওই বছরের মুহাররম মাস থেকে বছর গননা করা শুরু হয়৷
- বিদায়া ৭/১৩৮