Post# 1455122966

10-Feb-2016 10:49 pm


ওমর রা: এর যুগের দুর্ভিক্ষ:

সায়ফ ইবন উমর আবদুর রহমান ইবনে কাব ইবনে মালিক (রা) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেছেন, ছইয়ের বছর [অর্থাৎ দুর্ভিক্ষের বছর] দূর্ভিক্ষ ছিল ১৭ হিজরী সনের শেষ দিকে এবং ১৮ হিজরী সনের শুরুর দিকে৷ এই সময়ে মদীনা ও তার আশেপাশের লোকজন মারাত্মক খাদ্যাভাবে পতিত হয়৷ তাতে বহুলোক মারা যায়৷ পরিস্থিতি এত সংকটময় হয়ে পড়ে যে, বন্য জীবজন্তু পর্যন্ত মানুষের সাথে সখ্য গড়ে তোলে৷

এই সময়ে খলীফা উমর (র৷)সহ সকল জনসাধারণ অন্যান্য শহর নগর থেকে যেন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন৷ এমন এক সময়ে হযরত বিলাল ইবন হারিছ ঘুযানী মদীনায় আসেন৷ তিনি খলীফার সাথে দেখা করার অনুমতি চান৷ তিনি বলেন, আমি র৷সূলুল্লাহ্ ﷺ - এর দূত হিসেবে আপনার নিকট এসেছি৷ রাসূলুল্লাহ ﷺ (স্বপ্নে) আপনার উদ্দেশ্যে বলছেন "আমি তাে আপনাকে বুদ্ধিমান পেয়েছি, আর সব সময় বুদ্ধিমান ছিলেন, এখন আপনার কী হলো?"

খলীফা বললেন, "এ স্বপ্ন আপনি কখন দেখেছেন?"

বিলাল বললেন, "গতরাতে দেখেছি৷"

তারপর খলীফা বের হয়ে লোকজনের উদ্দেশ্যে ঘোষণা দিলেন “নামায়ের জামাত অনুষ্ঠিত হবে৷” লোকজন উপস্থিত হলো৷ তিনি তাদেরকে নিয়ে দু'রাকআত নামায আদায় করলেন৷ তারপর দাঁড়িয়ে বললেন, "হে লোক সকল৷ আমি আপনাদেরকে আল্লাহর দোহই দিয়ে বলছি আপনারা কি আমার পক্ষ থেকে এমন কোন কাজ দেখেছেন যার বিপরীতটি অধিক ভাল?"

তারা বললেন, “হায় আল্লাহ! না তো তেমন কোন কাজ তো দেখিনি৷"

তারপর তিনি বললেন "এই যে বিলাল ইবন হারিছ, তিনি তো এমন এমন কথা বলেছেন৷"

এবার সকলে বলল, "হ্যা, বিলাল ঠিকই বলেছেন৷ আপনি মহান আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করুন, তার সাহায্য কামনা করুন৷ তারপর অন্যান্য মুসলিমের নিকট সাহায্য কামনা করুন৷" এতদিন পর্যন্ত খলীফা উমর (রা:) তা থেকে বিরত ছিলেন৷

তিনি বললেন, "আল্লাহু আকব৷র, বিপদ তার নির্ধারিত মেয়াদে পৌঁছে গিয়েছে৷ হে আল্লাহ! এবার বিপদ প্রত্যাহার করুন৷ কোন সম্প্রদায়কে দুআ ও প্রার্থনার অনুমতি দেয়া হলে ওদের বালামূসিবত দূর হয়েই যায়৷"

তিনি অন্যান্য শহরের শাসন কর্তাদেরকে লিখলেন যে, "মদীনাবাসীকে এবং তার আশপাশের অধিবাসীদেরকে সাহায্য করুন৷ কারণ তারা দুঃখের শেষ সীম৷য় পৌঁছে গিয়েছে৷" তিনি লোকজনকে ইসতিসকার নামাযের জন্যে আহ্বান জানানো হলে লোকজন বেরিয়ে এল৷ তাদের সাথে পায়ে হেঁটে বেরিয়ে এলেন হযরত আব্বাস ইবন আবদুল মুত্তালিব (রা)৷ এরপর খলীফা একটি সংক্ষিপ্ত খুতবা দিলেন৷ তারপর নামায আদায় করলেন৷ তারপর হাটু গেড়ে বসে দু‘আ করলেন, “হে আল্লাহ, আমরা একমাত্র আপনারই ইবাদত করি এবং আপনার কাছেই সা৷হয্য চই৷ হে আল্লাহ্, আমাদেরকে ক্ষমা করে দিন৷ আমাদের প্রতি দয়া করুন, আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট হোন৷”

তারপর তারা ফিরে গেলেন৷ ফিরতি পথে তারা বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছার পূর্বেই বৃষ্টি নামতে থাকে৷ এবং কূয়া-পুকুর পানিতে ভর্তি হয়ে যায়৷

- আল বিদায়া।

10-Feb-2016 10:49 pm

Published
10-Feb-2016