২০০৫ সালে বাংলাদেশে ইসলামের নিচের দিকে পতন আরম্ভ হয়। যে দিন ৬৩ টা জেলায় বোমা হামলা হয়। গ্রাসরুট লেভেলে এর প্রভাবটা হয় ব্যপক। পত্রিকায় এগুলো আসেনি। আমরা নিজেরা বুঝতে পেরেছিলাম। এর পর গ্রামে গঞ্জে হুজুরদের উপর থেকে সাধারন মানুষদের শ্রদ্ধাবোধ উঠে যায়। তাদেরকে "আমাদের থেকে ভালো" মনে না করে "এরা খারাপ লোক" মনে করতে থাকে মানুষ। সাধারন মানুষ দল গোষ্ঠির পার্থক্য বোঝে কম। তারা বুঝে "হুজুর মানুষ" -- এরা বোমা হামলা করে।
আরম্ভটা ছিল আরো আগে। এতদিন ইসলামি দলের নেতারা আমাদের বুঝিয়েছিলো "ইসলামি শাষন কায়েম না করলে ____, গনতন্ত্র হলো ___, জিহাদ হলো ____" এসব। নেতাদের এই কথাগুলো হয়তো ছিল শুধু তাদের মুখে। কিন্তু নতুন জেনারেশন এগুলোকে লিটারেরি নেয়। ওই থেকে সে পরিনতি। যদি মাছ ধরতেই হয় তবে পানি ছুব না কেন? জিহাদের জন্য ডাক দিয়ে, "আমরা শান্তিপূর্ন" কি কথা? 'গনতান্ত্রিক ভাবে' কথাটা ইসলামের কোথায় আছে? নতুন জেনারেশন ছিল আন্তরিক ভাবেই ধর্মপ্রান।
ব্যর্থটাটা সরকারের। তারা একটা আইডোলজিকেল সমস্যার আইডোলেজিকেলি সমাধানের চেষ্টা না করে আইন নিয়ে এসেছিল। অথচ সৌদি সরকার এ ধরনের লোকগুলোর কাছে আলিমদের পাঠিয়ে প্রায় সবাইকেই ফিরিয়ে আনতে পেরেছে।
দেশে বোমা হামলার খারাপটা আর কাটে নি। বরং দিনে দিনে মুসলিমদের অবস্থা আরো খারাপ হচ্ছিলো। এটা বটমে পড়ে শাহবাগের দিনগুলোতে। এর জনসমর্থন দেখে আমার এক সময় মনে হতে থাকে আর ঠিক তিন দিন পর ঘুম থেকে উঠে আমি এক নতুন পৃথিবী দেখবো। যেখানে নেতৃত্বে থাকবে মূলতঃ নাস্তিকেরা।
মনে হচ্ছিলো একটা প্রটেকশন দেয়াল ভেঙ্গে পড়ছে। এ দেয়ালটা ছিল জামাত। যাদের শিক্ষার বেইজটা ভ্রান্ত। কিন্তু তার পরও মুসলিম বিদ্বেসীদের প্রথম নজর তাদের উপর ছিল বলে যুদ্ধটাও ছিল তাদের সাথে। আমারা সাধারন মুসলিমরা ততদিন আইনের হাত থেকে নিরাপদে ছিলাম। আল্লাহ তায়ালা এক দল দিয়ে আরেক দলকে প্রতিহত করে রেখেছেন।
জানতাম, যদি জামাতের পতন হয় তবে এর শাহবাগের যোদ্ধারা বসে থাকবে না। এর পর তাদের টার্গেট হবে মাদ্রাসাগুলো। তার পর ইসলামি শিক্ষা। এর পর একটি একটি করে ইসলামি প্রেকটিস।
দু দিন বিষন্ন মনে ঘুমাতে গালাম। তৃতীয় দিন এই নতুন পৃথিবীতে কি ভাবে সার্ভাইব করবো সে স্ট্রেটেজি খুজছি। ধরে নিলাম হয়তো আল্লাহরই ইচ্ছে ওদের বিজয়ী করা। ওদিন রাতেই থাবা-বাবার মৃত্যুর খবর পড়লাম। তার পরই ওর লিখাগুলো বেরিয়ে আসলো। রাত দশটায় ঘুমাতে গেলাম।
আমি জানি, ওরা আর জিততে পারবে না। নাস্তিকদের পৃথিবী এখই আসছে না।