Post# 1344518859

9-Aug-2012 7:27 pm


গল্পের মত একটি ঘটনা: [part 2]

পরিস্থিতি গুরুতর হচ্ছে এটা বুঝতে পারছে সৌদি সরকার সবগুলো বিমানবন্দর ও বর্ডার বন্ধ করে দেয়। কেটে দেয় ইন্টারনেশানাল টেলিফোন লাইন। মসজিদ চত্বরে টেঙ্ক আরপিসি চলে আসে। অবরোধকারীরা পেট্রল ঢেলে আগুল লাগিয়ে দেয়। সৈন্যরা মসজিদের আজানের মিনারগুলোতে এন্টি-টেংক মিসাইল মারে। এরপরই মসজিদের সবচেয়ে পবিত্র দরজা বাবুস সালাম বোমা দিয়ে উড়িয়ে দিয়ে ঢুকে পড়ে ভেতরে। দখলকারীদের আশ্রয় নেয় আন্ডার গ্রাউন্ডে। মসজিদের ভেতর শুধু লাশ আর লাশের সারি। প্রিন্ট মিডিয়ায় যুদ্ধের ছবি ছাপা হচ্ছে। লিবিয়ার আমেরিকান এম্বাসিতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে পাবলিক।

পাকিস্তান থেকে আসে কামন্ডো বাহিনি। ফ্রান্স ৩ জন কমান্ডো পাঠায়। তার সবচেয়ে এলিট বাহিনি থেকে। স্ট্রেটেজিক সাহায্য করবে। কিন্তু এদের নিয়ে সমস্যা হয় অন্য জায়গায়। মক্কা শরিফ একটি পবিত্র শহর। মুসলিম ছাড়া আর কারো প্রবেশের অনুমতি নেই এখানে। এমন কি গ্রান্ড মুফতি বিন বাজও এই হুকুম পরিবর্তন করতে পারবেন না। সমাধান হিসাবে তাদের রাখা হয় তায়েফে। পরবর্তিতে তাদের মসজিদে ঢুকতে হয়। তার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে ফরাসি কমান্ডোদের কালেমা পড়ানো হয়। মুসলিম হয়ে তারা মক্কা শহরে প্রবেশ করে বলে দাবি করে।

আন্ডার গ্রাউন্ড থেকে দখলকারীদের বাহির করার জন্য মসজিদের বারান্দার ছাদ ড্রিল নিচের টানেলে গ্যাস ক্যান ফেলা হয়। গ্যাসে কাজ হয় না। উপরে ভেসে উঠে, নিচে যায় না। যারা ক্যন ফেলছে তাদেরকেই আঘাত করে। সস্ত্র অভিযান চালাতে হবে। বিন লাদেন কন্সট্রাকশন আন্ডার গ্রাউন্ডের মেপ নিয়ে আসে। আক্রমন চালায় কমান্ডোরা। বেশিদূর যেতে পারে না। মারা যায় অনেক কমান্ডো, হাজী, অবরোধকারী।

পানি ঢেলে ভাসিয়ে ফেলে সৈন্যরা উপর নিচে। হাই ভোলটেজ কারেন্টের লাইন দেয় পানিতে। অবরোধকারীরা কোন ঠাসা। পানি স্পর্শ করতে পারবে না। তারা ভেঙ্গে পড়েছে। প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে। একটি বড় অংশ পালিয়ে যায়। শহরের কোনায় কোনায় ধাওয়া করে তাদের মারা হয়। শেষে ক্ষমা করা হবে এ শর্তে বাকি যারা নিচে ছিল সবাই অত্মসমার্পন করে। দুই সপ্তাহ পর মুক্ত হয় মসজিদুল হারাম। বন্ধী হয় তাদের নেতা জুহাইমান সহ ৬৮ জন অবরোধকারী। মারা গিয়েছে প্রায় এক হাজার লোক।

মুল দলের প্রায় সবাই মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। দশ দিনের মাধ্যেই বন্ধী সবাইকে কতল করে সৌদি সরকার। ১৬ বছরের কম বয়স্ক একজনকে ছেড়ে দেয়। সে বিন লাদেন পরিবারের সদস্য।

জুহাইমান বন্ধী হবার পর জানায় সে কথা বলবে না যতক্ষন না মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার শিক্ষকরা তার সাথে দেখা করে। শিক্ষকদের পুরো দল চলে আসে। তাকে দেশের সবাই চিনত। জুহাইমান ছিল বিখ্যাত দ্বা'য়ী বক্তা। তাকে জড়িয়ে ধরে সবাই অনেকক্ষন কান্না করে। শিক্ষকরা জিজ্ঞাসা করে, "কেন! কেন এমন করলে?"

9-Aug-2012 7:27 pm

Published
9-Aug-2012