#archive 2020
১
হানাফি : আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই।
সালাফি : কেউ অর্থ "আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই" করলে সে কাফের হয়ে যাবে। আকরামুজ্জামান সাহেবের কথা
https://www.youtube.com/watch?v=dyzkcbfj8Xs
এবং মতিউর রহমান মাদানি সাহেবের থেকেও একই কথা আছে।
ইখওয়ান : আল্লাহ ছাড়া কোনো "বিধান দাতা" নেই।
কারন আরবের কাফেররাও আল্লাহকে বিশ্বাস করতো কিন্তু উনাকে বিধান দাতা হিসাবে মানতো না।
তবলিগ : কোনো কিছু থেকে কিছু হয় না সব কিছু আল্লাহ থেকে হয়।
ডঃ জাহাঙ্গির স্যার : তবলিগে যে অর্থ বলে সেই অর্থটা ঠিক না।
বড় পন্ডিতগণ : "ইলাহ একটা আরবি শব্দ। ইলাহ এর কোনো অনুবাদ হয় না। ইলাহ অর্থ ইলাহ -ই" হাই থটের কথা।
আরো বড় পন্ডিত : "কালেমার অর্থ ব্যপক। এক কথায় বলা যায় না" এর পর এর উপর বিশাল লেকচার। ২ ঘন্টা পরে "... এই সবগুলোই কালেমার অর্থ"
নেটিজেন : "এই ১০টা পিডিএফ পড়েন, কালেমার অর্থ পাবেন।"
পশ্চিমা আলেমরা : "There is no God, but The God"
এন্টি-মডারেট বড় ভাই : আল্লাহকে গড বলা নিষেধ। কারন এ দ্বারা ...।
তরিকত-পন্থি : এর সাথে মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ না বললে নবুওতকে অস্বিকারকারি। ওহাবিরা কাফের।
তারেক মুনাওয়ার : মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ পড়া যাবে না। পড়লে "মুহাম্মাদ খোদা নেহি, খোদা ছে জুদা..." এর উপর আমল করা হবে।
https://www.youtube.com/watch?v=sejgH4Dm1NU
২
"শিক্ষা কি?"
আমাদের মতো সাধারনদের এই তর্ক জানা বা বুঝার কোনো দরকার নেই। আলেমদের তর্ক তারা করবে। এগুলো না জেনেও আমি বিশ্বাস করবো আমি হকের উপর আছি। যে যাই বলুক।
আর যদি কালেমার অর্থ নিয়ে ফেসবুকে কিছু বলেন, তবে যাই বলেন না কেন, বিভিন্ন "পন্থিরা" জুটে যাবে আপনাকে "হকের উপর" আনার জন্য। কারন আপনি "জানেন না", যা জানেন "ভুল জানেন"। এবং আপনার "ঈমান নেই"। থাকলেও আপনি "বাতেল"।
৩
সবচেয়ে ফান্ডামেন্টাল কালেমার অর্থ নিয়েও বহু তর্ক আছে।
তাই সাধু সাবধান।
মসজিদের ইমাম কিরাতে খুব ভুল করেন। প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো ভুল। এবং এটা ফজরের নামাজে বেশি হয়। কারন তখন জোরে কিরাত আর কিছু দীর্ঘ করতে হয় বলে।
অন্য মসজিদে যাওয়ার জন্য রওনা দিয়েও ফিরে আসলাম।
নিজের মসজিদেই যেতে হবে। ভুল সত্বেও ঐক্য এর পরও সবচেয়ে জরুরী। আর ভুলগুলো সত্বেও সব মিলে পরিস্থিতি এত খারাপ না যে নামাজ বন্ধ।
ঐক্য। এর জন্য অনেক ভাল জিনিস ছাড়তে হয়। আনুগত্যের জন্য নিজের ভালোর বুঝ ছাড়তে হয়।
ডঃ খন্দকার জাহাঙ্গির স্যারের লেকচার শুনছিলাম। সিরিয়ার এক মসজিদে এক সাহাবি নামাজ পড়তেন। ফজরের নামাজ চার রাকাত পড়ালেন কারন ইমাম ছিলেন মাতাল। এর পরও সে সাহাবি ঐ ইমামের পেছনেই নামাজ পড়েছেন, ছাড়েন নি। ঘটনাটা আমি কোনো কিতাবে পাইনি কিন্তু উনি নিশ্চই কিতাব থেকে জেনে বলেছেন।
আমরা হলে চিন্তা করতাম নামাজই হয় না তার পেছনে নামাজ পড়বো কি? লা তাকরাবুস সালাতা ওয়া আনতুম সুকারা।
ঐক্য। নিজে সঠিক থাকার জন্য যা কিছু অবাধ্যতা আর বিভাজন আমি করেছি, সব এখন আমাকে তাড়া করছে। সবই আমার জন্য ক্ষতিকর হয়েছে। এত কিছু না বুঝে যদি আমি "মেনে নিয়ে" চুপ থাকতাম তবে জীবনে আফসোস কম করতে হতো। আখিরাতে আমার কাজের ভয় কিছু হলেও কম হতো।
তাই নিজের মসজিদে ফিরে আসলাম। এই মসজিদই আবাদ রাখতে হবে। এটা আল্লাহর দেয়া দায়িত্ব।
আগামি বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে দেশে শবে বরাত। ৯ তারিখ রাতে।
ভারত পাকিস্তানে আমাদের ১ দিন আগে ৮ তারিখ দিবাগত রাতে।
সৌদি-মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের দুই দিন আগে আগামি মঙ্গলবার দিবাগত রাতে। ৭ তারিখ।
অন্যান্য দেশ যেমন আমেরিকা - সিংগাপুরের জন্য টুইটারে খুজে নিন।
আমলের ব্যপারে :
ভাগ্য লিখা হয় - এর দলিল নেই।
ক্ষমা করা হয় - এর দলিল আছে।
গ্রুপ করে ইবাদত না করি। বাংগালি গ্রুপ করা ছাড়া চলতে পারে না। একা কিছু করতে পারে না। না নামাজ, না দোয়া, না জিকির, না চিন্তা, না ইতেকাফ, না ইবাদত। সব কিছু দল করে করতে হয়। এর পর ঠেলা ধাক্কা আরম্ভ হয় এই ঠিক না সেই। এর মাঝে একা কেউ আলাদা হয়ে ভিন্ন কিছু করলে সে আমাদের সাথে বিশ্বাস ঘাতক, পথভ্রষ্ট। হয় তাকে আমাদের সাথে তর্ক করে আমাদের বুঝাতে হবে সে ঠিক। নয়তো তাকে তার আমল থেকে বিরত থাকতে হবে।
একা ইবাদত করি এই রাতে।
একা দোয়া।
একা ডাকা।
একা আল্লাহর কাছে মাফ চাওয়া।
জাজাকাল্লাহ।
ডঃ খন্দকার জাহাঙ্গির স্যারের বয়ান কমেন্টে।
১
হাতে গুনা কিছু মাদ্রাসা এই বোর্ড সনদ স্বিকৃতিতে যোগ দেয় নি। প্রচন্ড চাপে থাকলেও। তারা এখন ফল পাচ্ছে।
২
সব পচে গেলে পুরোটা কলাপ্স করে। আংশিক পচা হলে, ভালো আর মন্দ আলাদা হয়ে যায় দুই দলে। মন্দ কলাপ্স করে, ভালো টিকে থাকে। তবলিগ দ্রষ্টব্য।
৩
তাকি উসমানি সাহেব আর পাকিস্তানের মাদ্রাসাগুলো যদি সামনের দশকে দেওবন্দিদের রাহাবা হয় তবে আমাকে জানতে হবে তাকি উথমানি সাহেবের মতের সাথে প্রচলিত দেওবন্দি শিক্ষার পার্থক্য কোন কোন জায়গায়। আগে যেরকম একটা চার্ট করেছিলাম সালাফি-হানাফি ফিকাহর পার্থক্যের মতো।
৪
দেশে আব্দুল মালেক সাহেব তাকি উথমানি সাহেবের ছাত্র ছিলেন। এর পর বুঝতে হবে আব্দুল মালেক সাহেব যা বলেন তার কতটুকু তাকি উথমানি সাহেবের শিক্ষা থেকে, আর কতটুকু নিজের বুঝ থেকে।
৫
আব্দুল মালেক সাহেবকে এক সময় দেখা হতো হানাফি-সালাফি ঐক্য করার কিছুটা ব্রিজের মতো। যেমন এর আগে ছিলেন ডঃ জাহাঙ্গির সাহেব। কিন্তু মেগনিচিউড কিছু কম হয়তো।
৬
কিন্তু আমার ধারনা ঐক্য হবে না। সবচেয়ে বড় বাধা আকিদার প্রথম শর্ত। আশারি-আথারি। যা দিয়ে এক দলের মতে অন্য দলের সবাই কাফের। কথাগুলো কেউ বলে কেউ চুপ থাকে। কিন্তু শিক্ষা এটাই।
৭
দেখতে থাকি। ভবিষ্যতের প্রজন্মের জন্য শিক্ষা।
আমি হয়তো থাকবো না।
যা আছে তাই নিয়ে যেতে হবে আল্লাহর কাছে।
১
"কিন্তু মানুষ যে এত এত গলদ আকিদার কথা বলছে?"
ডঃ খন্দকার জাহাঙ্গির স্যারের কয়েকটা বয়ানে উনি একই কথা বলতেন। ইচ্ছে করে খুজে বের করে সেই ক্লিপগুলো শেয়ার করে রাখি আমার টাইমলাইনে।
বলতেন, এই দ্বিন মিটবে না। ১৪০০ বছর ধরে টিকে আছে এই দ্বিন সমনেও থাকবে ইনশাল্লাহ। কেউ যদি মনে করে দ্বিন মিটে যাচ্ছে তবে সেই বরং ভুল পথে চলছে।
এটা আমাদের অভার ইমোশানাল ইয়ং জেনদের জন্য বলতেন যারা বিশ্বাস করতো আমরা এখনই বাতেলদের বিরুদ্ধে এগ্রাসিভ এবং ফিজিক্যল একশন না নিলে এই দ্বিন মিটে যাবে আমাদের জীবদ্দশাতেই।
২
"কিন্তু এত এত বাতেল কথা"
প্রতি শত বছরে হাজার বাতেল দাড়ায়। কোনোটাই টিকে থাকে না। শত বছর হবার আগেই শেষ হয়ে যায়। এজন্য অস্থির হবার দরকার নেই। আমি কিছু না বললেও বাতেল পড়ে যাবে শত বছর হবার আগে।
ইতিহাসে এরকম ১৪ শত বছরে অন্ততঃ ১৪ হাজার বাতেল দল দাড়িয়েছিলো। কোনোটাই এখন নেই।
৩
তবে আমার কাজ কি?
বাতেলের মোকাবেলা আলেমদের হাতে দিয়ে দিন।
আমি নিজে যেটা হক বিশ্বাস করি সেটার উপর চলি।
৪
উদাহরন :
হিফাজত দেখি।
তবলিগ দেখি।
আমাদের জিহাদি ভাইদের দেখি।
সালাফি ভাইদের দেখি।
এখন দেওবন্দিদের দেখি।
৪০ বছর আগে বেরলভিদের দেখি।
দ্বিনকে আল্লাহ তায়ালা টিকিয়ে রাখবেন ইনশাল্লাহ। বরং কে বাতেল তার বিরুদ্ধে সারা দিন যুক্তি প্রমান দিয়ে তর্ক না করে নিজের ব্যপারে মনোযোগ দেই। নিজের ব্যপারে ভয় করি। আল্লাহর ইবাদত করি।
দ্বিন থাকবে। তর্ক করার জন্য আলেমগন আছেন।
আমি আল্লাহর দিকে মনোযোগি হই।
মনে করলাম পাইছি! আরেক "শরিয়ার" নামে নিজের "আকল" বিক্রিকারির মুখোশ উন্মোচন হবে!
এর উত্তর আমি জানি। কিন্তু নব্য জেনারেশনের আলেমরা নতুন নতুন "জনপ্রীয়" ফতোয়া আনতে যেহেতু পছন্দ করে, তাই এই জেনারেশনের দেওবন্দি আলেমরা কতটুকু "ইনোভেটিভ" সেটা বের করার আরেক সুযোগ।
ক্লিক ওপেন লিংক।
এর পর উত্তর পড়লাম :
"শরীয়ত কোন সীমা নির্দিষ্ট করেনি। বরং ক্রেতা বিক্রেতা যে মূল্যের উপর সন্তুষ্টচিত্তে রাজি হবে, সেটাই মূল্য হিসেবে ধর্তব্য হবে। তবে ধোঁকা ও মিথ্যা থেকে বাঁচা জরুরী।"
https://ahlehaqmedia.com/9987-2/
কিন্তু! কিন্তু!! আমাদের লুৎফুর ফারাজি সাহেবকে দেখে সেই রকম "হাইলি ইন্টিলেকচুয়াল" তো মনে হয় না। যেমন ডাঃ খন্দকার জাহাঙ্গির স্যারকে মনে হতো।
এর পরও উনার উত্তরগুলো এত সঠিক হয় কি করে?
এর উত্তর হলো উনি নিজে আকল খাটিয়ে "যুগোপযোগি" আর "জনপ্রিয়" "পপুলিষ্ট" উত্তর বের করেন না। যেটা হাজার বছর ধরে হানাফি মাজহাবের কিতাবে লিখা আছে সেটা না-বুঝলেও বলেন, অপছন্দ হলেও বলেন।
তাই হানাফি দেওবন্দিতে ফতোয়া পরিবর্তিত হয় না। আমি বুড়া মানুষ ৪০ বছর আগে বাচ্চা বয়সে যা শিখেছিলাম, তখন যা ছিলো এখনো তাই। আর যারা বলবে "আপনারা বুড়ারা আছেন সেই আদি যুগে পড়ে, আমরা স্মার্টরা আধুনিক ফতোয়া বের করছি" -- তাদের ফতোয়া দেখবেন প্রতি দশকে দশকে পরিবর্তিত হবে। এক গ্রেন্ড মুফতি মারা গেলে পরের গ্রেন্ড মুফতির যুগে নতুন ফতোয়া আসবে।
নিজে যা জানি সেটায় স্টিক করি। আমার অবস্থান "মর্ডানিষ্টদের" অপছন্দ হলেও।
সেকুলার রাজনিতি : প্রশ্ন ছিলো "একজন নামাজ রোজা হজ্জ বৌকে পর্দা সব করায় কিন্তু আওয়ামিলিগ করে সে জাহান্নামি কিনা?"
কাট করে শেষ দুই মিনিট দিলাম সংক্ষিপ্ততার জন্য। বলেছেন এগুলো ইমোশন তুলার জন্য ইসলামি রাজনিতিকরা বলে। সত্যিকারে "নামাজ রোজা হজ্জ বৌকে পর্দা" এরকম মুসলিম এমনিতেই সমাজে ১০% ও না। তার মাঝে আওয়ামিলিগের রাজনিতি করে এমন প্রেকটিক্যলি প্রায় নেই। তাই উক্তিটা ইমোশান তোলার জন্য বলা হয়।
আর উনি পপুলিস্ট, ইমোশোন ধাক্কিয়ে চললে, বলতেন : "হ্যা তাই। দেখবেন আমাদের মাঝে হাজি গাজি পাগড়ি সিজদা দিতে দিতে কপালে দাগ ফেলে দিয়েছে, কিন্তু সে _______করে। খোদার কসম এরা কেউ জান্নাতে যেতে পারবে না। সবাই জাহান্নামি।"