১৩
"কতটুকু সময় দিতে হবে নফলের জন্য?"
দুনিয়াদারির পেছনে সময় দেবার পর যে সময়টা ফ্রি থাকে।
"ফ্রি সময় পুরোটা নফল ইবাদত করতে হবে?"
না। বরং যতটুকু করলে একজন রেগুলারলি করে যেতে পারবে, সামনের ২০-৩০ বছর, ততটুকু।
"চাকরি ব্যবসা লিখাপড়া ছেড়ে ইবাদতে লেগে যাওয়া?"
না। বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে। বাড়াবাড়ি মাত্রায় হলে বেশি দিন ঐ ইবাদতের উপর থাকতে পারবো না।
১৪
"কিন্তু সর্বক্ষন না করতে পারাকে আমি আমার দুর্বলতা ধরবো না? স্কেপিষ্ট। আমি করতে পারছি না বলে এটাকে জাষ্টিফাই করে যুক্তি খাড়া করছি?"
না। বরং সিমিত করাই হুকুম।
এ ব্যপারে রাসুলুল্লাহ ﷺ থেকে আনেকগুলো হাদিস আছে। যেগুলো পূর্ন কোট না করে শুধু হিন্ট দিচ্ছি। তাদের জন্য যারা আগে এই হাদিসগুলো জানেন।
- এক যুবকের ব্যপারে বলা হলো সে অনেক ইবাদত করে। রাসুলুল্লাহ ﷺ বললেন, তুমি ৩০ দিনে কোরআন খতম করবে। মাসে ৩ দিন রোজা রাখবে। সে বললো যদি আমি এর থেকে বেশি করতে পারি? ...
- তিন যুবক যারা বলছিলো আমরা সব কিছু ছেড়ে দিয়ে নন স্টপ নামাজ, রোজা করবো। উনি ﷺ বললেন, না নামজ পড়ো আবার ঘুমাও। রোজা রাখো আবার ভাঙ্গো ...
- খন্দকার জাহাঙ্গির স্যার এই হাদিসটার ব্যপারে বলছিলেন যেখানে রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন ইবাদতের প্রথম দিকে মানুষের অনেক আগ্রহ থাকে। বেশি করে। এর পর এটা চলে যাবার পর কমে যায়। চলে যাবার পর যার ইবাদত সুন্নাহর লিমিটের মাঝে থাকবে সে এর উপর টিকে থাকতে পারবে। উপকৃত হবে।
হাদিসটা খুজে পেয়ে আমি অনুবাদ করেছিলাম। এখন পাচ্ছি না।
কিন্তু সুন্নাহর সর্বোচ্চ লিমিট অনেক উপরে। আমাদের মাঝে বড় বড় ইবাদতকারীরাও এত ইবাদত করেন না।
১৫
"দুনিয়াদারিতে আমি সুবিধা করতে পারছি না। ইবাদত করলে কি আল্লাহ তায়ালা দুনিয়ার ঘাটতি পূর্ন করে দেবেন?"
Unlikely. অন্য কোনো কাজ না থাকলে এবং ফ্রি থাকলে আমি পূর্ন সময় ইবাদতে দিতে পারি, সময় নষ্ট না করে। তবে এটা দ্বারা সম্পদ বাড়ে না।
#HabibTasauf
পীর বললেন "না, বরং এটা আল্লাহর কালাম। কাছ থেকে ফু দিলে তোমরা সহ্য করতে পারবে না।"।
এর পর একদিন জোরাজোরির মুখে কাছে নিয়ে ফু দেয়। কাচের গ্লাস ভেঙ্গে চৌচির হয়ে যায়।
২
বাংগালি এক ভদ্রলোগের সাথে দেখা। ৭০ এর দিকে উনি বাগদাদ থাকতেন। বড়পীর জীলানি সাহবের মাজারে যাতায়াত ছিলো। সেখানে এক তুরস্কের পীর বসে থাকতেন বারান্দায়। মাথায় বড় পাগড়ি পড়া। মানুষ পানি নিয়ে যেতো। পীর সাহেব দূর থেকে ফু দিতেন।
লোকেরা বলতো "আমরা বাংগালি বলে মনে হয় উনি আমাদের পছন্দ করেন না।"
পীর বললেন, "না বরং এটা আল্লাহর কালাম। কাছ থেকে ফু দিলে সহ্য করতে পারবে না।"
তারা দাবি করলো, "না এর পরও দিতে হবে।"
উনি একদিন কাছে নিয়েই ফু দিলেন, কাচের গ্লাস ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেলো।
উনার ফার্সট হ্যন্ড এক্সপেরিয়েন্স।
৩
গল্পটা আমি বিশ্বাস করি। অবিশ্বাস করার মতো কিছু নেই। কিন্তু জাহাঙ্গির স্যার বলছেন এটা কমন কাহিনী। হুবহু একই কথায় অন্য জায়গায় প্রচলিত।
কি ধরবো?
৬
এব্যপারে তবে আমার অবস্থান কি হবে? তাকওয়ার দাবিতে বুঝা যায় "না নেয়া সঠিক"। যেহেতু সকল হাদিসে তাই বলা আছে। আগের যুগের শিক্ষকগন যেহেতু ছাত্রদের থেকে কোনো উপকারও নিতেন না।
এরকম করলে আমি "সালাফ"দের দিকে গেলাম।
কিন্তু বর্তমানে আমাদের "সালাফি" ভাই যারা আছেন, যারা সালাফদের দিকে যাবার ব্যপারে আমার থেকে বেশি উৎসাহি তাদের মতে কিন্তু জায়েজ।
আমার জন্য এটা কি being holier than the pope?
৭
এ ব্যপারে বিচক্ষন লোকদের মত কি? ডঃ খন্দকার জাহাঙ্গির স্যারের একটা লেকচার দেখছিলাম। বললেন কোরআন শিক্ষা, ইমাম, মুয়াজ্জিন করে টাকা নেয়া যাবে না এটা ইহুদি নাসারাদের যুক্তি। তারা চায় এভাবে ইসলামি শিক্ষা বন্ধ হয়ে যাক।
উনার থেকে আমার তাকওয়া নিশ্চই বেশি না?
৮
উল্টো দিকের যুক্তিও আছে। যদি এটা সত্যিই আল্লহ তায়ালার কাছে অপছন্দনীয় হয়? আমরা জায়েজ করে নিয়েছি।
যেমন এক ভাই বলছিলেন : "জায়গা বন্দক দিয়ে টাকা নেয়া সুদ ও হারাম বলেন কওমি উলামারা। এই ফতোয়া দিয়ে তারা কত লক্ষ লোকদের হারাম খাওয়াচ্ছেন। গুনাহগার বানাচ্ছেন। তারা যদি এমন না করে, বন্দক দেয়া জায়েজ ফতোয়ে দিয়ে দিতেন তবে এত লক্ষ লোককে হারাম থেকে বাচাতে পারতেন।"
Deep. এভাবে হারামকে হালাল করার ট্রেন্ড যদি চলতে পারে তবে এটা বহুদূর পর্যন্ত গড়াতে পারে।
৯
তবে সঠিকটা কি? বস্তুতঃ এটা "এলহাম" ছাড়া বুঝার উপায়ে নেই। যে থেকে এসেছে "এটা সাদ সাহেবের এলহাম।"
অথবা পরবর্তি মুজাদ্দেদের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। ঈসা আ: এর প্রত্যাবর্তন। কিন্তু ঐ দিক থেকে চিন্তা করলে আগের মুজাদ্দিদরা এসে থাকলে এবং এটা ভুল হয়ে থাকলে, উনারা কেন এটা সংশোধন করলেন না? যেমন মুজাদ্দিদে আলফে সানি রাহি:?
মাওলানা সা'দ সাহেবকে মুজাদ্দিদ মনে করলে ভিন্ন কথা।
১০
তাকওয়া আমার জন্য। মাসলা সবার জন্য। এটা বুঝলে সমস্যা নেই।
আমার তাকওয়াকে মাসলা বানালে তখন সমস্যা আরম্ভ হয়।
"ওলি" বন্ধু, থেকে "ওউলায়েত" বন্ধুত্ব থেকে বেলায়েত। উর্দুতে "উই" কে "বে" উচ্চারন করে যেহেতু।
১
ডঃ জাহাঙ্গির স্যারের একটা কিতাব আছে "রাহে বেলায়েত"। পেয়ে খুশি হয়ে গিয়েছিলাম। সঠিক তাসাউফ শেখা যাবে। পড়ে দেখি হাদিসের বই। হাই থটের কথা নেই। কিছুটা হতাশ হয়েছিলাম। গোপন কথা কই? সব তো জানা! /kidding.
২
৮০ এর দিকে আরেকজন লিখেছিলেন "বেলায়েতের গোপন কথা"। উনার নামও জাহাঙ্গির। বাবা জাহাঙ্গির। বইটা ব্যন হয়ে গিয়েছিলো। গোপন কথাগুলো জানা হয় নি। /kidding.
৩
বর্তমানে মূল বই হলো গাজ্জালির। এ থেকে কোট করে পরের বই সমূহ।
কিন্তু এর সহি-জয়িফ নিয়ে প্রশ্ন আছে। এক কালে আগুনে পুড়ানো হতো এ কারনে। মিজান হারুন ভাইয়ের লাষ্ট ষ্টেটাস দ্রষ্টব্য।
কিছু কোট করার চেষ্টা করেছি। ভেরিফাই করতে গেলে দেখি সালাফি আলেমদের মতে হাদিস জাল-জয়িফ।
৪
আগের ওলি আউলিয়ারা তবে কেন এগুলো কোট করেছেন?
এগুলো পড়ে অনুসরন করে তারা ওলি হলেন কি করে?
সালাফিদের কমন কিছু যুক্তি আছে :
"গাজ্জালি বুখারি শরিফ পান নি, শেষ বয়স এসে পড়ে শুধু কান্না করেছেন আমি কি করলাম!" - অথচ, উনার বইয়ের উপদেশে আছে ইলমের প্রথমেই বুখারি-মুসলিম পড়া। নিজের উপদেশ ফলো করেন নি বলছেন?
"উনারা ওলি জানেন কি করে?" - জানি de facto থেকে। অধিকাংশের মত।
৫
এখন রাস্তা দুটো :
সালাফিদের জন্য : ডঃ জাহাঙ্গির স্যারের বই।
ছু্ন্নিয়াতের অনুসারিদের জন্য : বাবা জাহাঙ্গিরের বই।
আমি দুইয়ের মাঝে সাবধানে পা ফেলে চলার চেষ্টার করবো ইনশাল্লাহ।
দু পক্ষের অনেকেই বেজার হতে পারেন।
১
কোনো একটা দলের শিক্ষায় কিছু ভুল আছে। ভুল গুলো বাদ দিয়ে কি ভালোগুলো থেকে শিক্ষনীয় কিছু নিতে পারি?
২
"যদি পোকা-পচা অংশ কাটতে গিয়ে ভুল হয়? পোকা খেয়ে বসি?"
"ভালো আম থাকতে পচা আম খাওয়ার দরকার কি? ফেলে দাও।"
কিন্তু যদি সব আমেই পোকা থাকে? বা পাশের জনের দাবি "তোমার আমে পোকা"। আমি পোকা না দেখলেও?
৩
বরং এইভাবে চিন্তা করেন,
"এক গামলা পানিতে যদি সামান্য একটু গু মিশান। তবে পানির কি এক সাইড নাপাক হবে? না, বরং সম্পুর্ন পানিই নাপাক হয়ে যাবে।"
দুর্দান্ত। এখন? কি জবাব দেবেন?
৪
ডঃ খন্দকার জাহাঙ্গির স্যারের একটা লেকচার দেখছিলাম। বললেন ঐ পানি নিয়ে এখন যদি আপনি আপনার পুকুরে ঢেলে দেন, তবে নাপাক পানির কারনে আপনার পুকুরের সমস্ত পানি নাপাক হয়ে যাবে না। বা নদিতে ঢাললেও না।
৫
পোকা কেটে ফেলেই খেতে হবে। কারন টেবিলের সব আমেই পোকা।
কম হোক বা বেশি।
একটা লেকচারে উনি বলছিলেন উনাদের এলাকায় [উত্তর বঙ্গ-দক্ষিন বঙ্গ] ৩ লক্ষ লোক শিয়া হয়ে গিয়েছে। দেড় লক্ষ খৃষ্টান।
এলাকায় তবলিগের একটা জামাত এসেছে তাদেরকে দাওয়াহ দেয়ার জন্য। কিন্তু মসজিদে উঠতে দেবে না। একটা আহলে হাদিসদের মসজিদে অন্যটা জামাতে ইসলামিদের।
বাধাদানকারীদের বক্তব্য ছিলো খৃষ্টান হলেও পরে আবার দাওয়াত দিয়ে তাদের মুসলিম করা যাবে, কিন্তু অন্য দলে চলে গেলে আমাদের দলে আর ফিরানো যাবে না।
এর পর সেই জামাত স্যারের কাছে যায় কি করবো সেটা পরামর্শ করতে।
এটা ৫ বছর আগের কথা।
উনাকে জিজ্ঞাসা করা হলো : তবলিগে অনেক বিদায়াত আছে, তাই তবলিগে জামাতকে বাতেল বলা যাবে কিনা কিংবা তবলিগে যাওয়া যাবে কিনা।
উনি জবাব দিলেন : এই ব্যপারে একটা উদাহরন আপনারা অনেক জায়গায় শুনে থাকবেন। এক গামলা পানিতে সামান্য একটু গু মিশিয়ে দিলেন। [বললেন আমি এই খারাপ শব্দটা ব্যবহার না করে "গোবর" বলতে চাচ্ছিলাম কিন্তু গোবর নাপাক কিনা সেটাতে এখতেলাফ আছে।]
এখন ঐ নাপাকি মিশানোর পরে শুধু ঐ অংশের পানি নাপাক হবে নাকি গামলার সব পানি নাপাক হয়ে যাবে?
সবাই বললো : পুরো গামলার পানি।
বললেন : হ্যা। এই উদাহরন দিয়ে সবাই বলে একটু খারাপ হলে পুরোটা খারাপ। এখন আপনি ঐ নাপাক পানি নিয়ে এলাকার পুকুরে ছেড়ে দিলেন। ঐ নাপাক পানির জন্য কি এখন পুরো পুকুরের পানি নাপাক হয়ে যাবে?
উত্তর : না। [শরিয়তেও এই কারনে পুকুরের পানি নাপাক হয় না]
উনি বললেন : এটাই উদাহরন। বিশাল জামাতের মাঝে কিছু খারাপ থাকলে পুরো জামাতটা খারাপ হয়ে যায় না।
উনি প্রায়ই বলতেন : যারা বলে দ্বিন ইসলাম শেষ হয়ে যাচ্ছে। মুসলিমদের অধিকাংশ কাফের বা গোমরাহ হয়ে গিয়েছে। তাদের কথা ভুল। দ্বিন ইসলাম শেষ হয়ে যাচ্ছে না। এত সহজে দ্বিন শেষ হবে না।
উনি বলতেন : তাদের জিজ্ঞাসা করেন রাসুলুল্লাহ ﷺ ব্যর্থ নবি ছিলেন কিনা? এত কষ্ট করে এমন দ্বিন কি উনি রেখে গিয়েছেন যার অনুসারিদের অধিকাংশ লোকেই গোমরাহ? বা কাফের?
বলতেন : সমস্যা এই কথা যারা বলে তাদের মাঝে। মান কালা হালাকান নাস, ফাহুয়া আহলাকাহুম। হাদিস, যে বললো মানুষ ধ্বংশ হয়ে গিয়েছে, সে নিজে তাদের মাঝে সবচেয়ে বেশি ধ্বংশ প্রাপ্ত।
১
ছোটবেলায় যখন মসজিদে নামাজ পড়তাম, তখন সমবয়সিদের মাঝে নিয়মিত ছিলাম তিন জন মাত্র। ঐ সময়ে ঐ বয়সে নামাজ পড়াকে মনে করা হতো দুর্বলতার লক্ষন। বাকি সবাই মুরুব্বি। আমি ভাবতাম এই মুরুব্বিরা যখন মারা যাবে তখন মসজিদে কি এই তিনজনই থাকবে? দ্বিন মিটে যাচ্ছে।
এখন মসজিদে যাই দেখি মসজিদ ভরা। বাচ্চা, বৃদ্ধ, যুবক কোনো কমতি নেই। দ্বিন মিটে যায় নি। উল্টো দ্বিনদ্বারি বেড়েছে।
২
প্রথম আলো পরিসংখ্যান বের করেছে। ৪০% যুবক নিয়মিত নামাজ পড়ে। তিন বছর আগেও যেটা ছিলো ৩০%। তসলিমার বাসায় এখন গানের বদলে কোরআন তিলওয়াত।
মানুষ দ্বিনদ্বার হচ্ছে।
৩
এই ১৩ সালে শাপলা-শাহবাগের পরে আমি ধারনা করেছিলাম ৫ বছর পরে দেশে দ্বিন বলে কিছু থাকবে না। সব মিটে যাবে। স্টেটাস দিয়েছিলাম যেগুলো এখনো আমার টাইমলাইনে আছে।
উল্টো হচ্ছে। প্রথম আলোর পরিসংখ্যানে ১০% বেড়েছে দ্বিনদ্বারি যুবকদের মাঝে গত তিন বছরে।
৪
ডঃ খন্দকার জাহাঙ্গির স্যারের নিয়মিত একটা কথা বলতেন "যারা বলে দ্বিন মিটে যাচ্ছে, শেষ হয়ে যাচ্ছে তারা ভুল। এই দ্বিন এত সহজে শেষ হবে না।"
আমি বিশ্বাস করতাম না, তখন।
এখন বিশ্বাসের প্রসংগ নেই। নিজেই দেখছি।
৫
তাই, just hold on. সবাই মিলে হাত ধরে থাকি। নিজের ভাইদের দেয়া কষ্টগুলো একটু ধর্য্য ধরে চুপ থাকি। নিজেদের মাঝে মারা মারি কাটা কাটি না। যেহেতু আমরা এখন অনেক।
একটা কিছু আসছে এজন্য নিজেরা এক থাকি।
এই দ্বিন মিটে যাবে না, এত সহজে। ইনশাল্লাহ।
ডঃ খন্দকার জাহাঙ্গির স্যার কয়েকটা লেকচারে বলেছিলেন : "দেখবেন খানকা পন্থিদের মাঝে কোনো ঝগড়া নেই। এক জন আরেক জনের বিরুদ্ধে বলছে না। সবাই যার যার দরবারে তার তার মতো ব্যবসা করে। যত গন্ডোগোল দেখবেন আমাদের আহলে হকদের মাঝে।" নোট, উনি দেওবন্দিদের আহলে হক মনে করতেন। সবাই এরকম করে না।
ঐ অবস্থা তখন ছিলো। এখন আর নেই। এখন আমি যে দিকে তাকাই কেবল "ছুন্নি" দের মাঝে ঝগড়া আর ঝগড়া। ছুন্নি বলতে এখানে আমি তরিকত পন্থিদের বুঝাচ্ছি।
তাদের নিজেদের মাঝে গন্ডোগোল কখন আরম্ভ হয়েছে বুঝার চেষ্টা করছিলাম। সম্ভবতঃ তারা "সুন্নি ঐক্য ফেডারেশন" বা এই ধরনের ঐক্য করার চেষ্টা আরম্ভ করেছে তার পর। সবাই যখন এক হবার চেষ্টা চালিয়েছে দেখছে কেউ কাউকে সহ্য করতে পারে না। এক দরবারের চোখে অন্য দরবারের আকিদা কুফরি। তাদের ঈমান নেই।
এটা দুই বছর আগে দেখেছি আইনুল হুদা সাহেব যখন দেশে এসে সুন্নি কনফারেন্স করার চেষ্টা করেছেন। সবাইকে এক মঞ্চে এনে। গন্ডোগোল আরম্ভ। এর পর উনার সাথে রেজভি দরবারের ঝগড়া, কাফের।
কিন্তু উনার সাথে ছিলো আলাউদ্দিন জিহাদি সাহেব। পরের বছর দেখলাম উনারা দুইজনই একে অপরকে কাফের বলছেন।
আজকে ইউটুবে আরেক সুন্নি সম্মেলনের ওয়াজ মাহফিল। দুই বক্তার মাঝে ঝগড়া, "ঈমান নেই" "আকিদার ঠিক নেই", যদিও দুজনই ছুন্নি। সম্ভবতঃ দুই জন দুই দরবারের। কিন্তু ঐক্যবদ্ধ হবার চেষ্টা করে একসাথে ওয়াজ করছিলেন। লিংক কমেন্টে।
তাই প্রশ্ন হলো জাহাঙ্গির স্যারের সময়ে "সবাই যার যার দরবার থেকে প্রচার করে" থেকে এখন কি বদলিয়েছে?
সমস্যা তৈরি করেছে -> ঐক্যের চেষ্টা।
ঐক্য হয় নি। উল্টো চেষ্টা করা দ্বারা নিজেরাই আরো তিক্ত-বিভক্ত হয়ে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে গিয়েছে। যেটা এর আগে ছিলো না।
শিক্ষা? ঐক্যের চেষ্টাও অনেক সময় ক্ষতিকর।
আকিদা, ফিকাহ, মাসলা, মাজহাব, মানহাজ সব কিছুর ব্যপারে দ্বিমত রেখেও ঐক্যবদ্ধ থাকা যায়। এর উদাহরন।
তর্ক-আক্রমন না করলেই হয় - শান্ত ভাবে নিজের পক্ষে দলিল দিন। অন্যকে বলতে দিন তার দলিল। বাকিটা পাবলিকের হাতে ছেড়ে দিন, তারা বুঝবে।
আপনি "হায়রে!" "গেলোরে" "দ্বিন বাচাও" "জানে না" "মিথ্যা বলে" -- এই সব বলে বিপক্ষেকে আক্রমন না করে।