এর পর মোটামুটি ১৯৯৫ এর পর থেকে তারাবী ৮ রাকাত মতটা জনপ্রীয় হয়ে উঠে।
তর্ক বাড়ে। ৮ রাকাতের পক্ষে যারা তারা ২০ রাকাত বিদআত বলতে থাকেন। হাটে মাঠে ঘাটে বাসে যেখানে যাই এটা নিয়ে জোর আলোচনা। ইন্টারনেটে ফোরামে ভিষন তর্ক। লিফলেট বিতরন, পোষ্টার অনেক কিছু।
২
এর পর ২০১৫ এর পর থেকে ২০ রাকাত মতটাই গ্রহনযোগ্যতা পেয়ে আবার ফিরে আসে।
২০০০-২০১০ পর্যন্ত দেখতাম তারাবির ৮ রাকাতের সালাম ফিরানোর পর মসজিদের তিনভাগের একভাগ খালি হয়ে যেতো।
এখন আর এরকম হয় না।
৩
একটা আইডোলজি উঠে আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসতে ২০ বছর সময় লাগলো।
#HabibHistory
তর্ক না করে ছেড়ে দাও। সব ভুল তুমি তর্ক করে ঠিক করতে পারবে না।
সত্যকে খুজো। তবে তর্কের দুই পক্ষের মাঝে সত্য খুজে পাবে না।
তর্কে দুপক্ষই এক্সট্রিমে থাকে।
তখন বুঝি যে দ্বিতীয় সাইড হেরে গিয়েছে। কিছু একটা বলতে হবে তাই বলছে।
তাদের সাথে তর্ক করতাম। খারাপ লাগতো না।
২
তবে এখন ফেসবুক আলেম উলামায় ভরা। যে কোনো বিষয়ে তাদের মত/ফতোয়া চলে আসে। কলেজ-ভার্সিটির ছাত্রদের মতামত এখন অপ্রয়োজনীয়।
আলেমদের সাথে আমি কখনো তর্ক করি না।
তবে বিপরিতমুখি মতের মাঝে সাইড নিতে হয়।
একজন আলেম কিছু বলেছেন বলেই সেটা গ্রহন করি না, যদি অন্য দশজন আলেমের মত এর বিপরিত হয়।
৩
ফেসবুকে এখন ইসলামিক কোনো বিষয় নিয়ে আমার মত দেবার তেমন কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। আলেমরা এই কাজ করছেন।
তবে ভিন্নমুখি মতের মাঝে আমার সিলেকশন প্রসেসটা কিরকম? এর উপর কিছু টিপস দিতে পারি। পরবর্তি পোষ্টগুলোতে, ইনশাল্লাহ।
১
মনে করেন এক ভাই বললো, "মুসলিমরা মদ খায় না, অমুসলিমরা খায়। এটা দেখে আমি বুঝি কে মুসলিম।"
উক্তিটা আমার কোনো কারনে পছন্দ না।
তাকে কিভাবে ডিসক্রেডিট করা যায়?
Easy,
প্রথমতঃ cherry pick. সব ধর্মেই কিছু মদখোর আছে আর কিছু অমদখোর (sober) আছে। ভিন্ন ধর্মের সোবারদের উদাহরন টেনে আনেন। আর মুসলিমদের মাঝের মদখোরদের উদাহরন, নাম ধরে অমুক তমুক।
এর পর যোগ করেন, "দেখেলেন এই উক্তিকারি কিরকম নির্বোধ?"
দ্বিতীয়তঃ blow out of proportion. বলবেন, "মদ খাওয়া বা না খাওয়াকে সে মুসলিম হবার মাপকাঠি বানিয়েছে। অথচ ইসলামে তাওহিদের সাক্ষ্য যে দিবে তাকেই মুসলিম বলা হয়েছে। এই লোকের ইসলাম সম্পর্কে এই বেসিক জ্ঞানও নেই!"
তৃতীয়তঃ আর বললাম না...স্টেটাস লম্বা হয়ে যাচ্ছে। বরং পরের পয়েন্টে চলে যাই।
২
আসলে সে কি বলতে চেয়েছিলো? হয়তো সে বিদেশ থাকে। সবাইকে ক্লিন শেভড সুটেড বুটেড দেখে। এর মাঝে মুসলিমদের সে কিভাবে আইডেন্টিফাই করে? সেটা বলছে হয়তো।
তাহলে এটার ভেলিড কাউন্টার আরগুমেন্ট কি হতে পারে? এরকম -- "ভাই আমার এক্সপেরিয়েন্সে আমি দেখেছি এখানে অধিকাংশ মুসলিমরাই বরং মদ খায়। অধিকাংশ কাফেররা খায় না।"
ভেলিড স্টেইটমেন্ট। সেক্ষেত্রে দুজনের এক্সপেরিয়েন্স ভিন্ন। রিজলভ করার জন্য যেহেতু কোনো স্টেটিসটিকস নেই, তাই যে যার এক্সপেরিয়েন্স অনুযায়ি আমল করবে। এক্ষেত্রে Agree to disagree.
৩
প্রথম রাউন্ড শেষ। একই গেইম দ্বিতীয় রাউন্ড খেলবেন?
যেমন উক্তি: "আমার এক্সপেরিয়েন্সে দেখেছি হকের উপর যারা থাকে তাদের মাঝে আদব থাকে বেশি। না-হকরা গালি দেয়।"
নিয়মগুলো মনে আছে?
cherry pick: কাফেরদের মাঝ থেকে কিছু আদবওয়ালা, এবং উল্টো তার দল থেকে কিছু বেয়াদবদের উদাহরন টেনে আনেন। খুজলে পাবেন।
blow out of proportion: "ঈমান আর কুফরের পার্থক্য যার কাছে শুধুমাত্র আদব, তার মত পথভ্রান্ত আর কে আছে?"
প্রতিপক্ষের যুক্তি দেখবেন ধুলায় মিশে গিয়েছে।
৪
তাহলে এর বিপরিতে ভেলিড লজিক কি? "আমার এক্সপেরিয়েন্সে আমি দেখেছি হক পন্থিরা গালি দেয় বেশি। কারন গালি দেয়াকে তারা নাহি-আনিল-মুনকারের অংশ মনে করে। খুব ভদ্র ব্যবহার করে বরং না-হক পন্থিরা।"
valid statement. সেক্ষেত্রে we agree to disagree. দুজনের এক্সপেরিয়ন্স ভিন্ন ভিন্ন। যে যার মত নিয়ে থাকতে পারে।
৫
তবে ৪ নং পয়েন্টের মত argue খুব বেশি মানুষ করে না। বেশির ভাগ ৩ নং-টাকে পছন্দ করে। যাকে আমি বলি "চটুল যুক্তি"। এটা পপুলার। এবং মানুষ খুশি হয়ে যাবে তর্ককারীর বুদ্ধি দেখে।
এর অর্থ এই না যে তারা খারাপ। বরং তারা একটা ভিন্ন reasoning method ব্যবহার করে.
আমি পারতঃ এরকম করি না।
তাই ঐ রকম যুক্তি কেউ নিয়ে আসলে তার সাথে তর্ক করি না।
#HabibRant
শায়েখ জবাব দিলেন, "না, এটা নিষেধ। এরকম পছন্দমত বাছাই করতে পারবেন না।"
লিংক কমেন্টে।
এটা শেয়ার করলাম কেন?
কারন হানাফি আলেমগন এ কথা সবসময়েই বলে আসছিলেন। কিন্তু যারা গ্রহন করতো না তারা এটা নিয়ে তর্ক বাড়াতো।
যারা "কোনটা ঠিক? কোনটা করবো? এত মত কেন?" প্রশ্ন করে করে কনফিউজড হয়ে যান। তাদের বলবো আগে স্বিদ্ধান্ত নিন আপনি কোন মাজহাব/মানহাজ/স্কুল অফ থট/ফিকাহ অনুসরন করেন।
একবার স্বিদ্ধান্তটা নিয়ে নিলে এর পর সহজ। এক মাজহাবে প্রায় সকল ক্ষেত্রে কেবল একটা মত পাবেন। সেটা হলো ঐ মাজহাবের মত।
এই পক্ষের যুক্তিগুলো, এবং ঐ পক্ষের যুক্তিগুলো পাল্লায় তুলেন। যেটা স্পষ্টতঃই ভারি সেটা ঠিক। যদিও বিপক্ষে যুক্তি আছে। জাজমেন্ট পার্সন টু পার্সন ভিন্ন হতে পারে।
এ ক্ষেত্রে নিজের ইগো বা ভেলিডেশন ঠিক রাখার জন্য বিপক্ষের প্রতিটা যুক্তি একটা একটা করে কাটানোর চেষ্টা বোকামি, সময় নষ্ট।
২
রিয়েল লাইফে অধিকাংশ মানুষ এভাবে দু সাইড তুলনা করে বিচার করে। একে বলে বিচক্ষনতা।
কিন্তু এর পরও তর্কের পরিবেশ তৈরি হয়ে গেলে তারা বিরোধী পক্ষের প্রতিটা পয়েন্ট কাটানোর জন্য তর্কে ঝাপিয়ে পড়ে।
৩
মানুষের এই বদ-অভ্যাসটাকে ট্রেপ হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন তর্কে জিতার জন্য।
বিরোধীকে ছোট একটা পয়েন্ট দেন যে পয়েন্টে আপনি নিশ্চিৎ জানেন সে জিততে পারবে না।
সে ঝাপিয়ে পড়বে তর্ক করার জন্য, হিউমেন নেচার। এবং হারবে।
আপনি জিতে গেলেন। :-)
#HabibEvilTip
১
মনে করেন আপনি একটা মাজার দিয়ে মাজারে দানের টাকা নেয়ার ব্যবসা করছে। কেউ একজন তার বিরোধিতা করলো।
তাকে আপনি কি করে ডিসক্রেডিট করবেন?
তার নিয়ম। Straw man argument.
১ম ধাপ:
বলতে হবে, "আমরা মোজাদ্দেদি তরিকার অনুসারী। আমাদের যে বিরোধিতা করে সে মোজাদ্দেদে আলফে সানির বিরোধী।"
২য় ধাপ,
এর পর তাকে ট্যগ দিতে হবে "তারা আলফেসানী বিদ্বেষী।"
৩য় ধাপ,
বলবেন, আকবরের দ্বীনে ইলাহীর সাপোর্টার ছাড়া আর কেউ মুজাদ্দেদি আলফেসানীর বিরোধিতা করতে পারে না। এই সব লোক হলো দ্বিনে ইলাহী পন্থি। মুানাফেক কাফের।
যদি বলে,
"ভাই আমি তো শুধু আপনার মাজার ব্যবসার বিরোধিতা করেছিলাম!"
"ঐতো সে থেকেই প্রামান দিলাম আপনি দ্বিনে ইলাহীর অনুসারী। দলিল উপরে।"
২
দ্বিতীয় উদাহরন,
কেউ বললো "মুসলিমে মুসলিমে যখন যুদ্ধ হয় সেটা ফিতনা। তখন আমি কাউকে সাপোর্ট করি না।"
উপরের নিয়মে তাকে ডিসক্রেডিট করতে পারবেন? Straw man argument.
Tips,
১ম ধাপ: সে ফিলিস্তিন এবং কাশ্মিরের মুজাহিদদের বিরোধিতা করছে।
২য় ধাপ: এরা মুজাহিদ বিদ্বেষী।
৩য় ধাপ: তারা রেন্ড-ইহুদি পন্থি।
"ভাই আমি তো শুধু বলেছিলাম মুসলিমে-মুসলিমে যুদ্ধের বিরুদ্ধে।"
"ঐতো সে থেকেই প্রমান দিলাম আপনি রেন্ড-ইহুদিদের দালাল। দলিল উপরে।"
৩
এখন এর বিরুদ্ধে ডিফেন্স কি?
প্রথমতঃ নিজেকে ডিফেন্ড না করা। নিজেকে ডিফেন্ড করলে সবাই ধরে নিবে আপনি হয়তো কোনো দোষ করেছেন। এখন যুক্তি প্রমান খুজছেন। অধিকাংশ মানুষ সহজ সরল, জটিল জিনিস বুঝে না।
দ্বিতীয়তঃ State your position and be yourself. সব মতের সাথে তর্ক করে জীবন কাটালে আপনার জীবন ব্যর্থ। এবং সম্ভবতঃ আপনি ভুল পথে আছেন। Which is why you are seeking validation.
তৃতীয়তঃ নিন্দা মুমিনকে বিচলিত করা উচিৎ না। বরং প্রশংসা তাকে বিচলিত করা উচিৎ। Keep that in mind.
Note to self.
বললাম "আমি মালিক না।"
সে বললো আচ্ছা। মুখে উজ্জল হাসি নিয়ে ছেলের কাধে হাত রেখে আস্তে আস্তে হেটে চলে গেলো। অথচ অন্যরা অনুমতি ছাড়াই কেটে নেয়।
কেন যেন জান্নাতি লোক মনে হলে এখনো আমার তার কথা মনে হয়।
২
আমি,
মাজহাবগত পার্থক্য জানি।
বিভিন্ন দলের আইডলজি গভীর থেকে বিশ্লেষন করতে পারি।
জমিয়ে তর্ক করা একটা খেলা।
আমি জান্নাতে থেকে নিজেকে অনেক দূরে দেখতে পাই।
৩
মসজিদে,
সাধারন লোকেরা আসছে, নামাজ পড়ছে।
কাউকে বাধ্য করা হয় নি।
তারা আল্লাহর টানে এসেছে।
নামাজিদের দিকে তাকালে মনে হয় তার সম্পর্ক শুধু তার রবের সাথে।
প্রশ্ন,
এখানে কতজন মুরজিয়া?
কয়জন কুফর বিত তাগউত সম্পর্কে জানে?
কয়জন আশারি মাতুরিদি? কয়জন আথারি?
কয়জন জান্নাতি?
প্রশ্নগুলো জাগে?
না। কেন যেন এই প্রশ্নগুলো আমার অন্তরে জাগে না।
এই প্রশ্নগুলোর মুখোমুখি আমি শুধু ফেসবুকে হই।
১
অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমি অবজারভেশন লিখি। কোনো দল মতের পক্ষে বা বিপক্ষে সরাসরি কিছু লিখি না। শেষে এড করে দেই watching... দেখছি শুধু। এটা অবজারভেশন।
কিন্তু এর পরই পক্ষে বিপক্ষের লোকেরা কমেন্টে এসে পক্ষে বা বিপক্ষে শ্লোগান তুলে। পাঠকরা মনে করে নিউট্রালিটির ভং ধরে আসলে এই উসকে দেয়াটা আমার মূল উদ্যেশ্য ছিলো।
২
মুসলিমদের মাঝে কোন দলই সম্পূর্ন ভালো বা মন্দ না। দোষ গুন সবার আছে। এটা বুঝে খুব ব্যলেন্স করে আমাকে লিখতে হয়।
এর পর কমেন্টে যার যেই দলকে পছন্দ বা অপছন্দ, সে তার পক্ষে প্রোপাগান্ডা মেটেরিয়াল পোষ্ট করতে থাকে বা বিরুদ্ধে বিষেদগার করতে থাকে।
এর পর ব্যলেন্স বলে আর কিছু থাকে না।
৩
সব কমেন্টকারী আশা করে আমি তার উত্তর দেবো। না দিলে সে মনে করে,
- আমার কাছে জবাব নেই।
এর পর জবাব দিলে আরম্ভ হয় লম্বা তর্ক। সে থেকে বিদ্বেষ। শত্রুতা।
জবাব না দিয়ে কোনো কমেন্ট মুছে দিলেও সে রাগ করে।
কিন্তু তখনকার ঝামেলা ঐ তর্ক-ঝগড়া-শত্রুতা থেকে অনেক কম।
৪
জবাব দিয়ে যদি তর্ক আরম্ভ করি তবে? আশে পাশের দশ গ্রাম থেকে সবাইকে ট্যগ করে ডেকে আনে তামাশা দেখার জন্য। এর পর ঝগড়া ঝাটির মাঝে পরিবেশ বলে আর কিছু থাকে না।
নিজের সম্মান কিছু থাকলে সেটা চলে যায় তারো আনেক আগে।
৫
আমি গালি দেবো না। কিন্তু যে তর্ক করতে আসে সে গালি দেবে। তার না দেবার কোনো কারন নেই।
৬
না মুছে, না জবাব দিয়ে, যদি কমেন্টটা রেখে দেই?
তাহলে সমস্যাগুলো,
প্রথমতঃ নিরবতা সম্মতির লক্ষন ধরে নিয়ে সবাই মনে করে আমিও বোধহয় কমেন্টারের সাথে একমত। কারন সে আমার লিখার প্রশংশা করে ঐ সব এক্সট্রিম কথা বলছে।
দ্বিতীয়তঃ প্রোপাগান্ডা ওয়ালারা তাদের প্রোপাগান্ডা মেটেরিয়েল একের পর এক পোষ্ট করতে থাকে: "টাই বাবা জাকির নায়েকের মুখোশ উন্মোচন" "কেউ না পড়ে যাবেন না: দরবারী আলেমদের উপর দালিলিক আলোচনা।"
আমার স্টেটাসটার ঘাড়ে চড়ে চলে তাদের প্রোপাগান্ডার প্রচার প্রসার।
তৃতীয়তঃ আপনার বাড়ির সামনে যদি কেউ ময়লা ফেলে এবং এটা যদি আপনি সংগে সংগে সরিয়ে না নেন, তবে কিছু দিন পর দেখবেন সবাই এখানেই ময়লা ফেলছে এটাকে ডাষ্টবিন মনে করে।
৭
যে কারনে আমি কমেন্ট মুছে দেয়া, জবাব দেয়ার থেকে উত্তম মনে করি।
যদিও সে অফেন্ডেড হয়।
এর পরও এটা পরবর্তি শত্রুতা থেকে ভালো।