#archive Aug-Sep-Oct 2020
তেমনি, অন্য কেউ গুনাহের মধ্যে আছে। এ জন্য তার নামাজ নিয়ে তাকে খোটা না দেই।
যখন আমি বললাম, "বহু নামাজি আছে, নামাজ পড়তে পড়তে কপালে ... কিন্তু দেখবেন তার বৌ-মেয়ে ..."
এ ধরনের কথা দ্বারা আমার ইগো বুষ্ট হয়। অন্যের নেক আমলের প্রতি আমার ঘৃনাটা বাহির হয়ে আসে। কিন্তু এতে সমাজের কল্যান নেই।
নামাজ পড়াটা ঐচ্ছিক না। পড়তে হবে পাপের মাঝে ডুবে থাকলেও। গুনাহগারের জন্য নামাজ মাফ না।
| "কিন্তু আমি এই কথা দ্বারা তার গুনাহকে আক্রমন করছিলাম। তার নামাজকে না।"
হয়তো! কিন্তু আপনার কথায় তার প্রতিফলন নেই।
ভালোকে উৎসাহিত করি।
ভালোকে আক্রমন না।
তার ভালো আর তার মন্দকে আমি যখন সাংঘর্ষিক করবো তখন সে ভালোটা ছেড়ে দেবে এই ধারনা করে যে মন্দে থাকলে ভালো কাজ করা যাবে না।
আল্লাহ তায়ালা আমাকে মাফ করুন।
নিজের জন্য নসিহা :
- যদি সারা দিন গুনাহ করি। এর পরও জোহরের ওয়াক্ত হয়ে গেলে ওজু করে নামাজে যেতে হবে। গুনাহর জন্য যেন নামাজে গাফলতি না করি।
- কেউ যদি নামাজ নিয়ে খোটা দেয় তবে আমি দেখি কাকে বন্ধু করছি।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে হকের উপর রাখুন।
খেয়াল রাখবেন আমাদের আব্দুল মালেক সাহেব হানাফি-দেওবন্দিদের মাঝে সবচেয়ে বেশি "সহি ঘেষা" [ এর অর্থ যাই হোক ]। উনি যদি বলেন সমস্যা নেই, তবে আর কেউ সমস্যা আছে বলবে না ধরে নিতে পারি।
আর উনি জবাবে আরো যা বলেছেন। আসলেই যাচাই করতে করতে আমরা সব দোয়াই ছেড়ে দিয়েছি। আমাদের বাপ দাদারা যারা এতকিছু বুঝতো না, কিন্তু নিয়মতি এগুলো পড়ে যেতো। তারা তাদের সোয়াব নিয়ে চলে গিয়েছে।
বেশি ইলমে উপকার নেই।
দরকার প্রয়োজনীয় ইলম - আর বেশি আমল।
আমলটা ছেড়ে দেবার পরে যখন নিজেকে আবার আর দশজন থেকে খারাপ মনে হয়, তখন উনি আবার আমলের তৌফিক ফিরিয়ে দেন।
২
অন্যকে নসিহা করতে হয় এমন ভাবে যেন আমি নিজে গুহানগার, তাই একজন আল্লাহর বান্দাকে বলছি কেন এবং কি করে গুনাহ থেকে বাচতে হয়। তবে কথায় দরদ আসে প্রভাব পড়ে।
বরং উনারা যতটুকু বলেছেন ততটুকুর উপর আমল করার চেষ্টা করি। যা বলেন নি, সেটা বলেন নি। ঐ ব্যপারে কোনো মত নেই।
এর অর্থ এই না যে আলেমদের আমি জীবনে কখনো প্রশ্ন করি নি। বরং যে কয়েকবার করেছি তখন উনারা আমার প্রশ্নের জবাব দেন নি। বরং বইয়ে যা আছে সেটাই রিপিট করে বলেছেন।
যেমন প্রশ্ন করলাম, "আমি ওটা জানি, এটা জানি। এখন দুয়ের মাঝামাঝি এরকম হলে কি হবে?" উনারা উত্তর দিয়েছেন নিজেদের কথাকে নিরাপদ রেখে "আপনার প্রশ্নের উত্তর বলছি না। কিন্তু নিয়ম হলো ওটা হলে ওটা, এটা হলে এটা হবে।" যেটা আমি আগে থেকে জানি। কিন্তু উনারা নিরাপদে এড়িয়ে গিয়েছেন আন্দাজি একটা উত্তর না দিয়ে।
তাই এখন আর প্রশ্ন করি না। যা জানি সেগুলোর উপর আমল। যতটুকু বলা আছে।
- এই সময় শিয়ারা লানত দেয় খুব বেশি।
কাউকে লানত না দেই। এতে আমার উপকার নেই। লানতের পক্ষে কেউ হাদিস দেখালে বিপক্ষেও হাদিস আছে অনেক। সেগুলোর উপর আমল করি।
নিচেরটা আগে "অনলি মি" করে রাখা একটা পোষ্ট। Released.
আপনাকে জিজ্ঞাসা করে কি দান করবো? বলে দিন "অতিরিক্তটা"।
মুফতি তাকি উথমানি সাহেবের বাপের আমল, উনার পিতা ছিলেন মুফতি শফি। তফসিরে মারেফুল কোরআনের লিখক। ৭৬ সালে মারা গিয়েছিলেন তাই উনাকে জিবিত পাই নি। কিন্তু ছোটবেলায় দেখতাম সাধারনেরা তফসির পড়ার সময় মারেফুল কোরআনই পড়তো, সবাই যেহেতু সমসাময়িক যুগের তফসিরকারকের তফসির পড়তে পছন্দ করে। প্লাস উনার কিছু বই পড়েছিলাম যেগুলো ভালো লেগেছিলো।
উনার আমল : পরিশ্রম করে যা কামাতেন তার ৫% দান করে দিতেন। আর পরিশ্রম ছাড়া যা পেতেন তার ১০%।
paste ___
মুফতিয়ে আজম শফী (রহঃ) এর সারাজীবনের একটি অনন্য আমল
হযরত আল্লামা তাকি উসমানী হাফিজাহুল্লাহ বলেন, আমার আব্বাজান তাঁর কষ্টার্জিত সম্পদের বিশ ভাগের একভাগ এবং কষ্টবিহীন উপার্জিত সম্পদের দশ ভাগের এক ভাগ একটি থলেতে রেখে দিতেন।
এটা আমার বাবার সারাজীবনের আমল।
কোথাও হতে একটি রুপিই যদি আসত সেক্ষেত্রেও আব্বাজান একই আমল করতেন।
একশ রুপির ক্ষেত্রেও একই কাজ করতেন।
দশ রুপি রেখে দিতেন সেই থলেতে।
কখনো কখনো এটা করতে সমস্যা সৃষ্টি হতো বটে, কিন্তু আব্বাজান তবুও আমলটা করতেন।
কখনো খুচরা টাকা থাকতো না।
তখন ভিন্নভাবে খুচরার ব্যবস্থা করা হতো।
কিন্তু আজীবন আমি আব্বাকে এই আমল করতে দেখেছি।
এজন্য ঐ থলেটা কখনোই খালি দেখিনি।
এর দ্বারা কী করা হতো ?
যখন কোনো অভাবী বা প্রয়োজনগ্রস্ত ব্যক্তি আসতো সে খালি হাতে ফিরতো না।
এছাড়াও এই থলে নিজেই স্মরণ করিয়ে দিত, আমাকে খরচ করো।
আল্লাহর রাস্তায় খরচ করো।
এই আমলের বরকতে আল্লাহ সবসময় দান-সদকা করার তাওফিক দান করেন।
১
এক মুসলিম জাহানে মসজিদের ইমাম মারা যায়। কবর দেয়ার পরে মনে পড়ে টাকার থলে পড়ে গিয়েছে কবর আবার খুড়ে থলে তুলতে হবে। খুড়ার পরে দেখে সেখান ঐ ইমামের লাশ নেই। একজন খৃষ্টান মহিলা পাদ্রি লাশ, যাদেরকে আমরা বলি সিসটার।
শহরের মানুষ পেরশান। খবর নিয়ে বের করে কে এই মহিলা আর তার লাশ এখানে আসলো কি করে? শেষে বের হয় বহু দূর দেশে এক গির্জার পাদ্রি মারা গিয়েছিলো তার লাশ।
খৃষ্টানদের কবরাস্থানে গিয়ে ঐ মহিলা পাদ্রির কবরও খুড়া হয়। দেখে সেখানে ঐ ইমামের লাশ।
ইমামের স্ত্রীকে মানুষ জিজ্ঞাসা করে : তার আমল কি ছিলো?
বলে সে রাতে স্ত্রীর সাথে থেকে সকালে ফরজ গোসলের সময় বলতো : খৃষ্টানদের শরিয়তই ভালো ছিলো। সেখানে ফরজ গোসল নেই।
পাদ্রীর ব্যপারে খোজ নিয়ে জানলো সেই মহিলা পাদ্রি ছিলো বটে কিন্তু সব সময় বলতো : মুসলিমদের তাহারাত বা পবিত্রতার নিয়মগুলোর ভালো। এগুলোর প্রশংসা সে করতো।
আল্লাহ তায়ালা মৃত্যুর পরে মুসলিমকে নিয়ে গিয়েছেন খৃষ্টানদের কবরস্থানে, খৃষ্টানকে মুসলিমদের।
২
আজিমপুর পুরানো কবরস্থান। নতুন কবরস্থানে সব জায়গা কেনা, কিন্তু পুরানোটায় কবর recycle হয়।
পাকিস্তান আমলে। পুরানো কবর খুড়ে দেখে অক্ষত লাশ। করবের তদারক পেরশান। বুঝেন কোনো ওলি আউলিয়া বা শহিদের লাশ। উনিও বুজুর্গ মানুষ। কিছু মাটি চাপা দিয়ে মসজিদে নামাজ পড়ে এসে দোয়া করেন "হে আল্লাহ! জানেন যে আমাদের কবর ছোট। আপনার এরকম বান্দা যদি থাকে তবে তাকে আপনি মদিনার কবরস্থানে নিয়ে যাবেন। এখানে জায়গা নেই।"
ফিরে এসে দেখে সেই কবরে সেই লাশ আর নেই। এর পর আর অক্ষত লাশ সেখানে পাওয়া যায় নি।
যে কারনে আল্লাহ তাকে দ্বিন শিক্ষা মুখি করেছেন। আর আমাকে বসিয়েছেন ইমামের সিড়িতে।
বুঝি : মুয়াজ্জিনের সম্মানকে বেশি বলা হয়েছে ইমামের থেকে একাধিক হাদিসে।
চার বন্ধু বসে আড্ডা দিচ্ছে বিকালে। মাগরিবের আজান।
একজন বললো : "দোস্ত আমাদের নামাজ পড়া উচিৎ। আমরা পড়ি না।"
দাওয়াহ। যদিও সে নামাজ পড়ে না। কিন্তু অনুশোচনা -- ঠিক আছে।
বা সে বললো : "চল যাই নামাজ পড়ি আজকে সবাই"
যদিও আমল করে না, কিন্তু করবে তাই দাওয়াহ দিচ্ছে -- ঠিক আছে।
বললো : "ওই তোরা সবাই যা, নামাজ পইড়া আয়। যা যাহ!"
নিজে আমল না করে অন্যকে দাওয়াহ দিচ্ছে -- ঠিক নেই।
বুঝার বিষয় যে : সবজায়গায় "নিজে আমল না করে আরেক জনকে বলস কেন?" বলার সুযোগ নেই।
কিন্তু এটা কমন সেন্স। যে বুঝে সে বুঝে।
যে এক দিকে ঝুকে তর্ক করে, তাকে বললেও বুঝবে না।
ইয়ং বয়সে মনে হতো এগুলো বৃদ্ধদের চিন্তা। আমাদের লম্বা জীবন সামনে।
কিন্তু আরম্ভ হবার সাথে সাথে সেই জীবন শেষ হয়ে যায়। এখন যারা ইয়ং আছে তাদেরও শেষ হয়ে যাবে।
আল্লাহ তায়ালা যদি আমাদের হায়াত হাজার বছর দিতেন তাও হতো। আরম্ভ হলো, এর কিছু পরেই হাজার বছর পার হয়ে যেতো।
উপরন্তু হাজার বছর লম্বা জীবনের হিসাব দিতে হতো আখিরাতে -- "এত লম্বা জীবনের নিয়ামত দিয়েছি, কি করেছো?" মিজানে সেই হাজার বছর জীবনের নিয়ামত এক পাল্লায়, অন্য পাল্লায় তার আমল।
আমাদের এই ষাট বছরের জীবনের হিসাব থেকে সেটা ভালো হতো না।
তাই মৃত্যু আমাদের গন্তব্য। এর জন্য তৈরি। হাজার বছর জীবন যাপন হবে হাশরের মাঠে।
বস্তুতঃ কবর থেকে যখন আমরা উঠবো তখনই অনন্তকালের জীবন নিয়ে উঠবো।
কবর থেকে বেরিয়ে যে দাড়িয়েছে -- তার সামনে অনন্তকালের জীবন।