কম খাওয়া। পেটকে খালি রাখা। এখন এটার বিভিন্ন বয়স আছে।
বাচ্চাদের জন্য : ওভার ওয়েট হবে না এতটুকু হলেই হলো।
যুবকদের জন্য : ভুড়ি বেরুবে না, এতটুকু হলেই ঠিক আছে।
বয়স ৪০+ : তাদের জন্য মূলত এই পোষ্ট
- প্রচন্ড ক্ষুধা না লাগলে খাবো না।
খাবার কোনো "বেলা" না থাকলেও হলো। প্রচন্ড ক্ষুধা না লাগলে খাবো না এটা হলো মূল।
বুজুর্গদের কাছে এক লোকমা কম খাওয়া সারা রাত ইবাদতের চেয়ে উত্তম মনে হতো।
হাদিস : যে বাসন গুলো ভর্তি হতে পারে, তার মাঝে সবচেয়ে অপছন্দ আল্লাহর কাছে পেট। অর্থ আমি বুঝি, থালা ভর্তি খাবার বরং থালায় রেখে দেয়া ভালো পেটে না ঢুকিয়ে।
কম খেলে অন্তরের ইবাদতের নূর তৈরি হবে। এবং মারেফাতের দরজাগুলো খুলতে থাকবে। যেটা ভরা পেটে সারাদিন ইবাদত করলেও হবে না। মারেফাত কি? ব্যসিক হলো : এমন করে নামাজ পড়ো যেন তুমি আল্লাহকে দেখছো -- এর জ্ঞান। এর কম বেশি আছে।
এর উপর আগে কয়েকটা পোষ্ট করেছিলাম। প্রথমটা এখানে।
https://www.facebook.com/habib.dhaka/posts/10156204200068176
আল্লাহ তায়ালা আমাকে এর উপর আমল করার তৌফিক দিন।
[ শুধু হানাফি-দেওবন্দিদের জন্য ]
হাসবি আল্লাহ নিয়ে একটা দোয়া এখন পড়ার জন্য মশহুর আছে। এখানে আরেকটা দেয়া হলো যেটা আমলের কিতাবে আছে, যেমন গাজ্জালির।
حسبي الله لديني
حسبي الله لدنياي
حسبي الله الكريم لما أهمني
حسبي الله الحليم القوي لمن بغى علي
حسبي الله الشديد لمن كادني بسوء
حسبي الله الرحيم عند الموت
حسبي الله الرؤوف عند المسألة في القبر
حسبي الله الكريم عند الحساب
حسبي الله اللطيف عند الميزان
حسبي الله القدير عند الصراط
حسبي الله لا إله إلا هو عليه توكلت وهو رب العرش العظيم
এর অর্থ কাহিনী নিয়ে আগে লিখেছিলাম এখানে।
https://www.facebook.com/habib.dhaka/posts/10155975408678176
মূল অর্থ :
"হাসবি আল্লাহু" আল্লাহ আমার জন্য যথেষ্ট।
"নিয়মাল ওয়াকিল" সুন্দর করে কাজ করে দেন।
যে কোনো দোয়া মুখস্ত করার আগে :
পুরোটা একবারে মুখস্ত করতে পরবেন না। প্রথম দুই লাইন কেবল মুখস্ত করুন।
এটা নিয়মিত পড়ুন। একেবারে মুখস্ত হয়ে গেলে আমলে চলে আসলে অনেক দিন পরে এর পরের দুই লাইন শিখে নিন। এভাবে।
অর্থ বুঝে পড়লে এর লাভটা পাবেন। না বুঝে সুবহানাল্লাহ বললেও সোয়াব। কিন্তু লম্বা দোয়াগুলোর ব্যপারেও এটা খাটবে কিনা জানা নেই।
অর্থ বুঝতে হলে আরবি ভাষাটা কিছু শিখে নিতে হবে। দোয়া কোরআন হাদিস পড়তে পড়তে বুঝতে বুঝতে দেখবেন ইনশাল্লাহ শিখা হয়ে যাবে।
জীবন লম্বা। একদিনে সব আমল করতে পারবেন না।
অল্প অল্প করে এগিয়ে যেতে হবে।
যতদিন আল্লাহ তায়ালা হায়াত রেখেছেন।
এখানে মাজহাবগত পার্থক্য আছে। যেমন হানাফি দেওবন্দিদের ক্ষেত্রে স্বপ্ন, ওলি আউলিয়াদের আমল, বিভিন্ন সুফিদের কিতাবে বর্নিত আমল এগুলো গ্রহনযোগ্য।
সালাফিদের ক্ষেত্রে এগুলো বিদআত। এবং সালাফিদের একাংশের মতে বিদআত করলে কুফর।
এজন্য আমি এধরনের আমলে "কেবল হানাফি-দেওবন্দিদের জন্য" লিখে দেই। তর্ক না বাড়ানোর জন্য।
কথা আর টানলাম না। নিজের মত-পথ-শিক্ষা-আদর্শ নিজে অনুসরন করি। তর্ক করতে চাইলে এই শাখাগত ব্যপার না ধরে, বরং একেবারে মূল বিষয়ে গিয়ে তর্ক করি।
নিজের ভালো নিজে বুঝতে হবে।
জাজাকাল্লাহ।
মানুষকে গালি দেবো না। সে গালি দিলেও পাল্টা গালি না। সে আমাকে গালি দিলে তার গালির বিপরিতে আল্লাহ তায়ালা আমাকে ভালো কিছু দিয়ে দেবেন দ্রুতই। কিন্তু আমি গালি দিলে, তাকে যা নিয়ে গালি দিলাম সেটায় আল্লাহ তায়ালা আমাকে ফেলে দেবেন। এই জিনিসটা জীবনে বহুবার দেখা। সামান্য বিষয়েও।
এটা নিজের অন্তর নিয়ন্ত্রনের ব্যপার। এক মুহুর্তের অসাবধানতায় সারা জীবনের কষ্ট।
দুনিয়াতে যারা বুজুর্গ হয়েছে তারা গালি খেয়ে খেয়ে হয়েছে। কেউ আক্রমনের বাইরে ছিলেন না। তাদের থেকে উত্তম নবি রসুলগন পর্যন্ত না। এটা থেকে আমার শিক্ষা। আমি তাদের অনুসরন করবো।
আর জনপ্রীয় কিন্তু গালির চর্চা করেছে তাদের পরিনতি হয়েছে ধ্বংশ। আমি তাদের অভ্যাসের অনুসরন করবো না।
"লানত দেয়া সুন্নাহ" "দ্বিনের বিশুদ্ধতা রক্ষার জন্য গালি দেয়া সোয়াবের" "এই জায়গায় গালি দিলে জিহাদের সোয়াব" "অন্য মানুষের দ্বিন রক্ষার জন্য তাকে গালি" -- কথাগুলো যেন আমাকে প্রতারিত না করে।
নিজের জন্য। অন্যের ওয়াহান নিয়ে নিজে চিন্তা না করি। কার অন্তরে কি আছে আল্লাহ জানেন। খুব বেশি মুসলিমদের দোষ দেখতে থাকলে আল্লাহ তায়ালা আমাকে ঐ দোষে প্রথমে ফেলে দেবেন।
দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসা : হুব্বুদ দুনিয়া।
জান্নাতের কথা আলোচনা করি।
এর স্বপ্ন দেখি।
যারা জান্নাত "চায় না", "চাওয়া উচিৎ না", "আশা করা যায় না", "ঈমানদারদের জান্নাতের জন্য আমল করা উচিৎ না", "উচ্চ স্তরের মু'মিনরা এর দিকে তাকায় না" এই ধরনের কথা বলে তাদের কথা থেকে দূরে থাকি। এ কথাগুলো মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলি।
সরাসরি নিজে কোরআন হাদিস পড়ে জেনে নেই উপরের তাদের কথা ঠিক নাকি আল্লাহ আর উনার রাসুল ﷺ অন্য কিছু বলেছেন।
জান্নাতের আশা যত বাড়বে দুনিয়ার আশা তত কমে আসবে।
part 1...cont.
দ্বিতীয় যেটা বলা হয়েছে : মৃত্যুকে অপছন্দ, কারাহাতিল মাউত।
মৃত্যুকে মানুষ পছন্দ করা আরম্ভ করে আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের আগ্রহ প্রচন্ড বেড়ে যাবার পরে।
সাক্ষাতের আগ্রহ আসে বর্তমান গুনাহ কমিয়ে দেয়া আর আগের গুনাহ মাফ হয়ে যাবার পরে। যে যে আমল দ্বারা এটা হয়।
এর জন্য তফসির দেখতে পারেন সুরা কাহাফের শেষ আয়াতের।
"... যে মরিয়া হয়ে আছে আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের জন্য সে যেন আমলে সালেহ করে, আর তার রবের ইবাদতের সাথে কাউকে শরিক না করে।"
হয়তো একটা কারন আছে যে শেষ যুগের ওয়াহানের সাথে সুরা কাহাফ পড়ার কথা কেন আছে।
সময় : সকাল ৮ টা থেকে ১১ টা।
রাকাত : ৪ রাকাত স্টেন্ডার্ড, আর সকল নফল নামাজের মতো। ২ রাকাত হলেও আদায় হবে। ৬ রাকাত পড়লে পূর্ন। ৮ রাকাতের বেশি না। এটা মালেকি ফিকাহতে, যেটা আমি অনুসরনের চেষ্টা করি।
এশরাক আর চাশত কারো মতে এক। কারো মনে দুটো ভিন্ন নামাজ।
কমেন্টে এর নসিহা।
- প্রতিদিন বেশি করে করবো নিয়ত করে। এক দিন করতে পারলাম, এর পর ছেড়ে দিলাম। কিছু দিন পরে আবার আরম্ভ করলাম। এর থেকে ভালো অনেক কম করে প্রতিদিন করা।
- প্রথম দিকে জজবা বেশি থাকে তাই বেশি করে। পরে কমে আসে। এর পর যেটা থাকে সেটাই তার আসল আমল। সেটা যেন শূন্য না হয়ে যায়।
- আধ্যাতিকতা, ফিলিংস ব্যপারগুলো প্রতিদিন আসবে না। কিন্তু এগুলো নিয়ে বিচলিত না হই। আমল পূর্ন করা আসল, ফিলিংস আসুক বা না আসুক।
এগুলো তাহাজ্জুদ, চাশত, এশরাক, আওয়াবিন, ওজিফা, তিলওয়াত, তাসবিহাত এসবের ব্যপারে বলেছি।
জাজাকাল্লাহ।
"আমি জানি দোহার নামাজ আর এশরাক এক না, তারা যে বলে এক?"
"আপনি বলছেন ৮ রাকাতের বেশি পড়া যাবে না। কিন্তু এখানে আছে ২০ রাকাতের কথা।"
"আপনি বলছেন সকাল ৮ টা থেকে, অথচ এশরাক হবার পর থেকেই পড়া যায়।"
"কি করবো?"
"কোনটা ঠিক?"
সবগুলোর উত্তর :
আপনি যেটা ঠিক বলে জানেন সেটা অনুসরন করেন। মানুষের সাথে তর্ক না করে। এসব ব্যপারে তর্কে ক্ষতি। আমলে লাভ। যেটা আপনি ঠিক মনে করেন সেটাই করেন। আরেকজনের স্বিকৃতি নেবার চেষ্টা করবেন না। যে "তাকেও বলতে হবে আমারটা ঠিক, সে এক কথা বলে আমি আরেকটা করবো কেন? তবে তো আমি তার প্রশংসা পেলাম না।"
এখানে প্রশংসা পাবার কোনো ব্যপারে নেই। ঠিক বে ঠিক নিয়ে সারা দিন তর্ক করতে পারেন। কিংবা যেটা ঠিক মনে করেন সেটার উপর আমল করতে পারেন।
| "আমি প্রশংসার কথা বলছি না। আমি নিন্দা যেন না পাই।"
নিন্দা না পাওয়ার ইচ্ছা এক ধরনের প্রশংসা পাবার ইচ্ছা।
জাজাকাল্লাহ।
আমল :
মাসলা মাসায়েল শিখার পরে সবচেয়ে বড় যে ইলমটা অর্জন করা যায় যেটা সবচেয়ে বেশি কাজে লাগে দুনিয়ায়-আখিরাতে সেটা হলো কোরআন শরিফ অর্থ বুঝে মুখস্ত করে ফেলা। ফেসবুকে যত গুরুত্বপূর্ন পিডিএফ থাকুক না কেন, সেগুলো পড়ার থেকে কোরআন মুখস্ত করাটা আমার কাছে বেশি জরুরি।
পিডিএফ পড়ে কারো একটা ব্যখ্যা আপনি জানছেন। মুখস্ত করে নিয়মিত পড়লে সরাসরি নিজে জানছেন।
আরম্ভ করতে হবে আমপারা দিয়ে। শেষ সুরা নাস থেকে আরম্ভ করে প্রথম সুরা আম্মা ইয়াতাসায়ালুন পর্যন্ত একটা একটা করে মুখস্ত।
কিছু টিপস দিতে পারি যেমন সুরা বাইয়িনাহ প্রথমে একটু কঠিন মনে হবে। আমার বাচ্চাদের লেগেছে এক মাস মুখস্ত করতে যদিও অর্ধেক পৃষ্ঠা সুরা। কিন্তু হয়ে গেলে এর পর আবার সোজা। আর শেষের দিকে সুরা নাজিয়াত হয়তো একটু কঠিন মনে হতে পারে, যদিও এটা ছন্দে ছন্দে আছে। ৩০ তম পারা মুখস্ত হয়ে গেলে তাহাজ্জুদে আপনি ১ পারা বা পৌনে এক পারা পড়তে পারবেন ইনশাল্লাহ। তাহাজ্জুদে রেগুলার পড়লে আর ভুলবেন না ইনশাল্লাহ।
লম্বা সময় নিন। দুই বছরে হাফেজ হবার দরকার নেই। সামনের ২০ বছর ধরে টার্গেট করুন। এর পর বিসমিল্লাহ বলে আরম্ভ।
এই ছুটিতে সুযোগ। আল্লাহ তায়ালা সহজ করুন।
১
যে চায় না মানুষের কাছে হাত পাতবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে মানুষের কাছে হাত পাতায় না।
কিন্তু অভাব দারিদ্রতা? ধর্য্য ধরে থাকতে হয়। কষ্ট সহ্য করে। এটা পরিক্ষা। কারন মুখে বলা সহজ "আমি কারো কাছে হাত পাতি না"। সত্যি সে কি করে সেটা আল্লাহর পরিক্ষা। মানুষের কাছে না চাওয়াটা একদিন দুই দিনের প্রেকটিশে হয় না। এক দুই বছরেরও কাজ না। এটা সারা জীবনের সাধনা।
পরিক্ষা নিতে নিতে যখন আল্লাহ তায়ালা দেখেন যে কেউ সত্যি সত্যি মানুষের কাছে হাত পাতে না। আল্লাহ তায়ালা এর পর তাকে মানুষের মুখাপেক্ষি করেন না।
২
রাসুলুল্লাহ ﷺ একবার কিছু সাহাবিদের বললেন তোমাদের মাঝে কে আছো আমাকে কথা দেবে মানুষের কাছে কিছু চাবে না, আমি তাকে জান্নাতের নিশ্চয়তা দেবো? ঐ সাহাবিরা দিয়েছিলেন। তাদের একজন ছিলেন হযরত থওবান রাঃ।
পরবর্তিতে একজন বলছে আমি তাদের দেখেছিলাম। ঘোড়ায় চড়ে বসেছে এই অবস্থায় হাতের চাবুক নিচে পড়ে গিয়েছে। কাউকে বলে নি চাবুকটা তুলে দাও। নিজে নিচে নেমে তুলে নিয়েছে।
৩
না চাওয়ার একটা স্তর হলো কারো দিকে আশা করে বসে না থাকা। আমার অন্তরও যেন কারো দিকে মুখ করে বসে না থাকে। যেমন, "সে তো দেবে" "তার দেয়া উচিৎ।"
আরো উচু স্তর হলো কাউকে আমি এই কারনে সাহায্য করবো না, যে সে আবার আমাকে সাহায্য করবে আমার বিপদে। সে করবে না। এমন কি আমাকে ধন্যবাদ বলবে, এটাও আশা করবো না।
কিন্তু আমি নিজে কৃতজ্ঞ থাকবো কেউ যদি আমাকে সাহায্য করে। কথায় আর কাজে। এখানে অকৃতজ্ঞ হবো না।
১
হাদিসে জিব্রীল : রাসুলুল্লাহ ﷺ জিব্রীল আঃ কে জিজ্ঞাসা করলেন "তবে ইহসান কি?" জিব্রীল আঃ জবাব দিলেন "এমন করে আল্লাহর ইবাদত করো যেন তুমি উনাকে দেখছো। আর যদি তুমি না দেখো তবে উনি তোমাকে দেখছেন।"
ইবাদত। যার প্রথম হলো সালাত।
২
সুরা আর-রহমান : "যে আল্লাহর সামনে দাড়াতে ভয় করে তার জন্য দুটো জান্নাত।" এর পর ঐ জান্নাতের বর্ননা শেষ করে আল্লাহ তার সম্পর্কে বলছেন "এহসানের প্রতিদান এহসান ছাড়া আর কি?"
এই এহসানের সাথে ১ নং পয়েন্টের এহসান মিলান। কি চাওয়া হয়েছে।
৩
ইবাদত। মাঝে মাঝে চুপ চাপ বসে আল্লাহর কথা চিন্তা করা। যে আমি উনার সামনে বসে আছি। যেন আমি উনাকে দেখছি। এখানে চিন্তাটা আসল। এর পর কি পড়বো এটা ধিরে ধিরে বুঝতে পারবো।
৪
এক বুজুর্গের মৃত্যুর পরে স্বপ্নে দেখে কেউ তাকে জিজ্ঞাসা করলো আপনি কোন আমল সবচেয়ে উপকারি পেয়েছেন? এরকম অনেক বর্ননা আছে বিভিন্ন উত্তর দিয়ে বিভিন্ন জনের থেকে। কিন্তু এই বুজুর্গ বললো "চিন্তা করা"। আল্লাহর কথা আল্লাহর সৃষ্টির কথা। "আমাকে তবে কি করতে বলবেন?" "তুমিও চিন্তা করো।"
৫
ইবাদত করার জন্য জীন আর ফিরিস্তাও আছে। কিন্তু চিন্তা করার ক্ষমতা আল্লাহ তায়ালা মানুষকে দিয়েছেন সবচেয়ে বেশি। সে আল্লাহর সৃষ্টি দেখবে, আল্লাহর কথা চিন্তা করবে, আর আল্লাহর প্রশংসা করবে।
এটার সমস্যা হলো অহংকার আসা মাত্র আমল ছুটে যাবে। কিছু দিন তাহাজ্জুদ পড়ে কন্টিনিউ করতে পারে না মানুষ কারন তার মাঝে আমলের একটা অহংকার চলে আসে।
এটা কাউন্টার করার জন্য বিভিন্ন লেকচার শুনা যায় "কিসের আমাদের অহংকার?" "নিজের গুনাহের কথা স্বরন করি" "আমি তো ছিলাম নগন্য একটা ..."। কিন্তু এমন সহজ কিছু একটা লাগে যেটা সাধারন মানুষ সবসময় অন্তরে রাখতে পারে যেন তার মাঝে এই "স্বস্তি" "অহংকার" "পূর্ন করেছি" "আমি করছি" বোধটা না আসে।
যখন ছোট ছিলাম তখন পীরেরা তাদের মুরিদদের বলতো "নিজেকে সবসময় পায়খানার কিটের অধম মনে করবে"। এটা নিয়ে তখনকার এন্টি-সুফিদের মাঝে প্রতিক্রিয়া চলছিলো। সম্ভবতঃ আব্দুর রহিম সাহেব তখন লিখেছিলেন "দেখেন আশরাফুল মাখলুকাত মানুষকে কিসের সাথে তুলনা করছে এই বিভ্রান্ত পির মুরিদরা"। ৮০র দশকের কথা। তখনো ফেসবুক ছিলো না। কিন্তু তর্ক চলতো। বই লিখে লিখে। তখনও এই সুফি-সালাফি দ্বন্ধ ছিলো। কিন্তু সালাফিদের জায়গায় ছিলো জামাতে ইসলামের ভাইরা। যে কারনে এখনো দেখবেন দেওবন্দি-জামাত একটা আদী দ্বন্ধ চলছে। এটা পুরানো। আরো গোড়ায় পার্থক্য। অনেকটা সুফি-জিহাদি পার্থক্যের মতো।
মূল কথায় আসি :
তবে আমল করবো, কিন্তু আমলের তাকাব্বুরি নিজের মাঝে আনতে দেবো না কি করে? নিজেকে সাবধান করার জন্য প্রতিদিন লেকচার শুনা তো সম্ভব না।
নিজে যেটা করি : প্রতিদিন নামাজে দাড়ানোর সময় মনে করি আজকে প্রথম ঈমান আনলাম। আগের আমল নেই কারন কুফর অবস্থায় সোয়াব নেই। আল্লাহ তায়ালাকে আজকে চিনলাম, আজকে ডাকছি।
অন্যের জন্য যে যেটা যার জন্য সহজ হয়। কিন্তু জিনিসটা দূর করতে না করতে পারলে আমল এক জায়গায় আটকে যাবে। এর পর পিছাতে থাকবে।
আল্লাহ তায়ালা যেন সহজ করেন।
মহামারী চলাকালে পূর্ববর্তী বুযুর্গদের স্বপ্নে প্রাপ্ত ও পরীক্ষিত কিছু আমলঃ
.
১. কা’আব রা. বলেন, ‘سُبْحَانَ اللهِ’ ‘সুবহানাল্লাহ’ জিকির মহামারীকে রুখে দেয়। ইমাম শাফিঈ রহ. বলেন, মহামারীতে সবচেয়ে উত্তম দোয়া হল তাসবীহ পাঠ করা। অর্থাৎ ‘সুবহানাল্লাহ’ পাঠ করা ।
.
২. মা’রিফাত লাভকারী আরিফগনের এক জামাআত বলেন, মহামারীর দিনগুলো তে ১৩৬ বার দোয়ায়ে ইউনুস পড়বে। তাদের অনেকের মতে এটাই ইসমে আজম।
.
لَا إِلَٰهَ إِلَّا أَنتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنتُ مِنَ الظَّالِمِينَ
.
৩. তাকিউদ্দীন সাবকী রহ. ৪০৯ হিজরির মহামারী চলাকালে তার ছেলে আবু হামিদের কাছে পত্র লিখেন যে, জনৈক নেককার ব্যক্তি রাসূল সা.-কে স্বপ্নে দেখেন। তিনি লোকজনকে নিচের দোয়াটি পড়তে বলেন,
يَا وَدُوْدُ يَا وَدُوْدُ، يَا ذَا الْعَرْشِ الْمَجِيْدِ، يَا مُبْدِئُ يَا مُعِيْدُ، يَا فَعَّالَ لِّمَا يُرِيْدُ، اَسْأَلُكَ بِنُوْرِ وَجْهِكَ الَّذِيْ مَلَأَ أَرْكَانَ عَرْشِكَ، وَ بِقُدْرَتِكَ الَّتِيْ قَدَرْتَ بِهَا عَلَى خَلْقِكَ، وَ بِرَحْمَتِكَ الَّتِيْ وَسَعْتَ كُلَّ شَيْئٍ، اِرْفَعْ عَنَّا هَذَا الْوَبَاءَ
.
৪. শিহাবুদ্দিন ইবনু আবি হাজলা রহ. বলেন, ৭৬৪ হিজরিতে মিশরে মহামারির ব্যপক প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে কিছু নেককার লোক রাসূল সা.-কে স্বপ্নে দেখেন। তিনি তাদেরকে এই দোয়া শিখিয়ে দেন,
.
اَللَّهُمَّ إِنَّا نَعُوْذُ بِكَ مِنَ الطَّعْنِ وَ الطَّاعُوْنِ وَ عَظِيْمِ الْبَلَاءِ فِي النَّفْسِ وَالْأَهْلِ، وَالْمَالِ وَالْوَلَدِ، اَللهُ أَكْبَرُ اَللهُ أَكْبَرُ اَللهُ أَكْبَرُ، مِمَّا نَخَافُ وَنَحْذَرُ، اَللهُ أَكْبَرُ اَللهُ أَكْبَرُ اَللهُ أَكْبَرُ عَدَدُ ذُنُوْبِنَا حَتَّى تُغْفَرُ،اَللهُ أَكْبَرُ اَللهُ أَكْبَرُ اَللهُ أَكْبَرُ، اَللَّهُمَّ كَمَا شَفَّعْتَ فِينَا نَبِيَّنَا مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَمْهِلْنَا، وَعَمِّرْ بِنَا مَنَازِلَنَا، وَلَا تُؤَاخِذْنَا بِسُوْءِ أَفْعَالِنَا، وَلَا تُهْلِكْنَا بِخَطَايَانَا يَا اَرْحَمَ الرَّاحِمِيْنَ
.
৫. কেউ কেউ এই দোয়াও পড়েছেন
.
يَا حَيُّ يَا قَيُّوْمُ، رَبَّنَا اكْشِفْ عَنَّا الْعَذَابَ إِنَّا مُؤْمِنُوْنَ، بِسْمِ اللهِ ذِيْ الشَّأْنِ الْعَظِيْمِ الْبُرْهَانِ، اَلشَّدِيْدِ السُّلْطَانِ، مَا شَاءَ اللهُ كَانَ، اَللَّهُمَّ إِنَّا نَعُوْذُ بِكَ مِنَ الطَّعْنِ وَ الطَّاعُوْنِ وَ الْوَبَاءِ، اَللَّهُمَّ إِنَّا نَعُوْذُ بِكَ مِنْ مَوْتِ الْفَجْأَةِ، وَسُوْءِ الْقَضَاءِ، وَجُهْدِ الْبَلَاءِ
.
৬. কেউ কেউ আবার নিচের দোয়াটি লিখে শরীরে বেঁধেছেন (বাঁধতে না চাইলে আঙুলের ইশারায় আঁকা যেতে পারে। বা পড়ে ফু দেয়া যেতে পারে),
بِسْمِ اللَّـهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ ، وَصَلَّى اللهُ عَلَى سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ وَّعَلَى آلِهِ وَصَحْبِهِ وَسَلَّمْ، اَللَّهُمَّ سَكِّنْ هَيْبَةَ صَدْمَةِ قَهْرَمَانَ الْجَبَرُوتِ بِأَلْطَافِكَ الْخَفِيَّةِ الْوَارِدَةِ النَّازِلَةِ مِنْ بَابِ الْمَلَكُوْتِ حَتَّى نَتَشَبَّثَ بِلُطْفِكَ، وَنَعْتَصِمَ عَنْ إِنْزَالِ قُدْرَتِكَ، يَا ذَا الْقُدْرَةِ الْكَامِلَةِ، وَالرَّحْمَةِ الشَّامِلَةِ، يَا ذَا الْجَلَالِ وَالْإِ كْرَامِ
.
৭. কেউ কেউ ১৩৬ বার এই দোয়া পড়তে বলেছেন,
.
اَللَّهُمَّ يَا لَطِيْفُ أَسْأَلُكَ اللُّطْفَ فِيْمَا جَرَتْ بِهِ الْمَقَادِيْرُ
.
৮. এছাড়াও ১৩৬ বার ‘اَلْمُؤْمِنُ’ ‘আল মু’মিনু’, ৮৮ বার ‘اَلْحَكِيْمُ’ ‘আল হাকীমু’, ৮৯০ বার ‘اَلْحَفِيْظُ’ ‘আল হাফীজু’, ৩০০ বার ‘اَلرَّقِيْبُ’ ‘আর রাকীবু’ এবং ১০ বার ‘ছানা’ পাঠ করার বর্ণনা পাওয়া যায়।
.
সূত্রঃ ১. বাযলুল মাঊন ফি ফযলিত তাঊন (ইবনু হাজার আসকালানী), ৩৩২, ৩৩৩।
২. মা ইয়াফআলুহুল আতিব্বাউ ওয়াদ দাঊনা বিদাফই শাররিত তঊন (মুরঈ ইবনু ইউসুফ মাকদিসী হাম্বলি), ৪৮, ৪৯।
সোর্স : লিংক কমেন্টে।
হয়তো কোনো নেক কাজ করছিলাম আন্তরিক ভাবে, শেষে এসে এমন কিছু করে ফেলেছি যে সব শেষ।
কমন ঘটনা।
বাস্তবতা হলো আমার অন্তর দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে, এটাই বড়। কিন্তু সব শেষ না। এই ভাংগা চোড়া আমল নিয়েই আল্লাহর দরবারে হাজির হবো বাকিটা উনি দেখবেন।
আমার আত্মতুষ্টির সাথে পারফেক্ট আমল নিয়ে আসার থেকে হয়তো, শুধু হয়তো উনি পছন্দ করেছেন যে আমি এই ভাঙ্গা আমল, ভাঙ্গা অন্তর নিয়েই উনার সামনে হাজির হবো। সেটা আমার জন্য ভালো।
জীবনে এরকম বহু বার হয়, বহু বার হয়েছে। একারনে নিজের সব ছিড়ে না ফেলি। ভুলটা নিয়েই উনার সামনে হাজির হই, "এখন আপনার করুনা।"
এটাই আমল।
উনি দেখবেন।
১
মুসলিমদের পাপ গোপন রাখতে হয়। প্রকাশ করতে হয় না। তৌবাও হয় গোপনে। তার আর আল্লাহর মাঝে।
খৃষ্টানদের তৌবায় পাপ প্রকাশ করতে হয়। নয়তো তৌবা হয় না। আমার পাপের কথা মানুষের কাছে প্রকাশ করলে এটা তৌবা। এ থেকে তাদের কনফেশন।
আচ্ছা : আকিদা কি গোপন রাখতে হয় নাকি জোরে প্রকাশ?
২
স্পেনিশ ইনকুইজিশন নামে একটা জিনিস আরম্ভ হয় ইউরোপে মুসলিমদের পতনের যুগে খৃষ্টানদের মাঝে। খৃষ্টানরা শহরে শহরে গ্রামে গ্রামে এসে বলে "তৌবা করো হে কাফের"। মানে তাদের কাফের।
"কিন্তু আমি তো খৃষ্টানই?"
"তুমি আসল খৃষ্টান না। আকিদায় সমস্যা আছে।"
এর পর তাকে ধরে টরচার মেশিনে বসানো হতো। এই মেশিনগুলো তাকে হত্যার জন্য তৈরি হয় নি। কিন্তু তাকে তৌবা করানোর জন্য তৈরি। না মেরে তাকে প্রচন্ড কষ্ট দেয়া। সে তার পাপ প্রকাশ্যে স্বিকার করবে তবে সে আসল খৃষ্টান হলো।
৩
এই টর্চার মেশিনগুলোর বহু বর্ননা ছবি নেটে খুজলে পাবেন। কি করে এগুলো ব্যবহার করতো। কি রকম কষ্ট দিতো। ওয়ার্নি : পড়ার দরকার নেই। ডিপ্রেসড হয়ে যাবেন। আমলের আগ্রহ হারিয়ে যাবে। সবার সব কিছু জানার দরকার নেই।
কিন্তু টর্চার সহ্য না করতে পেরে সবাই স্বিকার করতো, "ঠিক, আমি আসল খৃষ্টান না" কনফেশন "এখন হলাম"।
"বলেছিলাম না!" তারা বলতো, "দেখলেন সবই সে স্বিকার করছে"। সবার মাঝেই কুফরি আছে যেহেতু। কেবল টর্চার করলেই বেরিয়ে আসে। এর পর তাদের কাউকে শাস্তি দেয়া হতো বা কাউকে হত্যা করা হতো তার আগের পাপের জন্য।
৪
এই স্পেনিশ ইনকুইজিশন ১৯০০ সালের কিছু আগে পর্যন্তও চলছিলো। ১৪০০ সালে আরম্ভ হয়েছিলো মূলতঃ স্পেইনের মুসলিমদের খুজে বের করে তাদের খৃষ্টান বানাতে। এর পর স্পেইনে আর মুসলিম ছিলো না। খৃষ্টানদের উপরই প্রয়োগ চলতো।
৫
আচ্ছা। মুসলিমদের মাঝে নিশ্চই এরকম কিছু প্রচলিত নেই। মানে আমাদের আকিদা গোপন। আমাদের গুনাহ গোপন। আমাদের তৌবা গোপন। ঈমানের জন্য প্রকাশ্যে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর সাক্ষ্য দেয়াই যথেষ্ট - ঠিক?
কেউ নিশ্চই রাস্তায় ধরে আমাকে জিজ্ঞাসা করবে না "বলো তো আল্লাহ কোথায়?" বা এ ধরনের কোনো প্রশ্ন। এর পর আমি কিছু না বলে চুপ থাকলে সে নিশ্চই "তৌবা করো হে কাফের" বলে আমাকে হত্যা করবে না।
ঠিক? কেউ আদি খারেজিদের ইতিহাস আর বর্তমান মধ্যপ্রাচ্যের দিকে তাকিয়ে আমাকে প্লিজ বলেন যে ঠিক।
- বহু আমল আছে। সব করা যাবে না। অল্প কয়েকটা পছন্দ করে করি।
- সালাফি আর হানাফি আমলে পার্থক্য আছে। সালাফিদের সব আমল হানাফিদের জন্য চলে। কিন্তু হানাফিদের সব আমল সালাফিদের জন্য চলবে না। নিজে তাহকিক করে নেই।
- তাহকিক করাকে সহজ রাখার জন্য আমি ইনশাল্লাহ সহি হাদিসের গুলো বলে দেবো যে এটা সহি হাদিসে আছে। এগুলো সালাফিদের জন্য চলে।
- জয়িফ মওজু, স্বপ্নে পাওয়া, বুজুর্গদের কথা শিক্ষা, দলিলহীন এগুলো হানাফিদের জন্য চলে। কিন্তু সালাফিদের জন্য করলে গুনাহ হবে।
জাজাকাল্লাহ।
রাসুলুল্লাহ ﷺ মুআজ বিন জাবাল রাঃ এর হাত ধরে বললেন :
মুআয, আল্লাহর কসম আমি তোমাকে ভালোবাসি। আমি তোমাকে ওসিয়ত করছি কোনো নামাজের শেষে এই দোয়া করতে ভুলবে না
اللهمَّ أعِنِّي على ذكرِك وشكرِك وحسنِ عبادتك
হে আল্লাহ আমাকে আপনার জিকির, শোকর আর নেক আমল করার তৌফিক দিন।
- আবু দাউদ।
قال رسول الله ﷺ لمعاذ بن جبل رضي الله عنه بعد أن أخذ بيده:
"يا معاذُ واللهِ إني لَأُحبُّك، واللهِ إني لَأُحبُّك، أوصيك يا معاذُ لا تَدَعَنَّ في دُبُرِ كلِّ صلاةٍ تقول:
"اللهمَّ أعِنِّي على ذكرِك وشكرِك وحسنِ عبادتك."
أبو داود.
আল্লাহ তায়ালা আমাদের পথ দেখান।
জাজাকাল্লাহ।
(collected)
"জীবনের শুরুতেই আমার ভিতর যুহদ (দুনিয়া বিরাগ)এখতিয়ার করার একটা প্রেরণা ও অভ্যন্তরীণ দাবি ক্রিয়াশীল ছিল।সিয়াম পালন ও নফল আমল খুব যত্ন ও আন্তরিকতার সঙ্গেই করতাম।নিঃসঙ্গ ও একাকী থাকাই আমার বেশি পছন্দ ছিল।তখন আমার অন্তরের অবস্থা ছিল খুব ভাল।আমি উজ্জ্বল দূরদৃষ্টি ও তীব্র অনুভূতির অধিকারী ছিলাম।দৈনন্দিন জীবনের কোন মুহূর্ত আল্লাহর আনুগত্যের বাইরে অতিবাহিত হলে সেজন্য আফসোস হত।আল্লাহর সঙ্গে মিষ্টতার সম্পর্ক এবং দোয়ার মধ্যে মিষ্টতা ও স্বাদ অনুভূত হত।
এরপর আমার মনে হল,কতক শাসক ও ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা ব্যক্তি আমার ওয়াজ ও বক্তৃতা-মাধুর্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন এবং তারা আমাকে তাদের দিকে আকৃষ্ট করছেন আর আমার প্রকৃতিও সেদিকে ঝুঁকে গেছে।ফল দাড়ালো এই,দোয়া ও মোনাজাতে এককালে যে স্বাদ পেতাম তা আমার থেকে বিদায় নিতে থাকল।এরপর অপরাপর শাসকও আমাকে তাদের দিকে টানতে থাকে। আমি (সন্দেহযুক্ত জিনিসের ভয়ে) তাদের ঘনিষ্ঠতা ও বন্ধুত্ব এবং তাদের খানাপিনা থেকে গাঁ বাঁচিয়ে চলতাম।
আমার অবস্থা তখনও মন্দ কিছু ছিলনা।এরপর ক্রমান্বয়ে আমার ভিতর তাবিল(ভিন্ন অর্থ ও ভিন্ন ব্যাখ্যা)-র দ্বার উম্মুক্ত হতে লাগল।আমি মুবাহ বস্তুর ক্ষেত্রভূমিতে স্বাধীনভাবে বিচরণ করতে শুরু করলাম।তখন আমার থেকে সেসব বিশেষ অবস্থা বিদায় নিতে থাকল।যতই আমি ওইসব শাসকের সঙ্গে মিশতাম এবং ওঠাবসা করতাম,আমার আত্মার অন্ধকার ততই বৃদ্ধি পেত,এমনকি আমি অনুভব করলাম,আমার সেই আলো নিভে গেছে এবং আত্মা অন্ধকারে ডুবে গেছে।এ রকম পতিত হওয়ায় আমার আমার স্বভাব ও প্রকৃতির মাঝে একধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হল এবং এই অস্থিরতার প্রভাব ওয়াজ-মাহফিলের শ্রোতামন্ডলির উপর এমনভাবে পড়ল যে,তারা অস্থির হতে উঠত।এই অস্থিরতার কারণে তাদের বেশিরভাগ লোকের তাওবা করার ও সংশোধিত হওয়ার তাওফিক জুটত।কিন্তু আমি যেই খালিহাত ছিলাম,সেই খালিহাতই থেকে যেতাম।
নিজের এই দারিদ্র ও দূর্ভাগ্য দেখে আমার অস্থিরতা আরও বেড়ে গেল কিন্তু চিকিৎসার কোন ব্যবস্থাই চোখে পড়ল না।এরপর আমি সালেহীন বা আল্লাহর সৎবান্দাদের কবর যিয়ারত শুরু করি এবং আল্লাহর নিকট আমার নিজের অন্তরাত্মা সংশোধনের জন্য দোয়া কিরতে থাকি।শেষ পর্যন্ত আল্লাহর অশেষ মেহেরবানি আমাকে সহায়তা করল এবং আমাকে আস্তে আস্তে নির্জনতার দিকে টেনে নিল।সেই অন্তর,যা আমার আয়ত্তের ভাইরে চলে গিয়েছিল,তা পুনরায় আমার আয়ত্তে ফিরে এল।যে অবস্থা আমার খুব ভাল মনে হত,তার দোষ-ত্রুটি আমার সামনে প্রকাশ পেল।আমি আলস্যের সেই নিদ্রা থেকে জাগ্রত হলাম এবং আমার মেহেরবান প্রভুর হৃদয়খোলা শুকরিয়া আদায় করলাম।"
-আল্লামা ইবনুল জাওযী রহি:,সাইদুল খাতির;১:১২১-১২২
মানুষের কাছে হাত না পাতি।
কোনো মানুষকে আল্লাহ তায়ালা কত বেশি দিয়েছে সেটা নিয়ে "হায়" না বলি।
প্রয়োজনের থেকে অনেক বেশি যার আছে এবং সে অপচয় করছে তার কিছু যদি আমি পেতাম এই চিন্তা অন্তরে না আনি।
যার বেশি আছে তার কাছে ঘেষলাম না, কিন্তু বেশি থাকার জন্য তাকে ঘৃনাও না করি যে "দেখো, আমি তাদের পাত্তা দেই না"।
উপরের যা বললাম এগুলো যারা করে না বা উল্টো করে, তাদেরকে মন্দ ধারনা না করি। কোনোটাই করা কারো জন্য ফরজ ছিলো না।
তাকওয়া। নিজে চলি। অন্যে কম করে তার জন্য তাকে নিজের থেকে খারাপ ধারনা না করি।
সবাই আল্লাহর কাছে ফিরবো।
নসিহা করি পেসিভলি, সাধারন ভাবে সবাইকে। কারো মুখের উপর না, যে তুমি খারাপ, ভালো হয়ে যাও।
আল্লাহ তায়ালা সহজ করুন।
মিসওয়াক করি। প্রতি বার ওজু করার সময়।
মিসওয়াক এমনি জরুরি। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে এই সময়ে এটা আরো বেশি জরুরি।
এলাকার বিক্রেতাদের যদি না পান তবে অনলাইনে অর্ডার দিয়ে দেখেন কেউ ডেলিভার করতে পার কিনা। বেশি করে কিনে রাখেন। যেমন, সামনের ৫ মাসের জন্য।
পরিনতি জানার দরকার বুঝতে যে দুনিয়ার তার জীবন আমল কর্ম কথা থেকে আমার শিক্ষনীয় কিছু আছে নাকি নেই সেটা বুঝতে।
পরিনতি ভালো তো শিক্ষনীয় অনুসরনীয়।
মন্দ তো এই পথে মুক্তি নেই।
পরিনতি মানে শেষে উনি আল্লাহর কাছে গ্রহনীয় হয়েছিলেন কিনা।
এটা দুনিয়ায় উনার প্রসংশা দিয়ে বুঝা যায় না।
উনার রেখে যাওয়া কর্ম দিয়েও বুঝার উপায় নেই।
এখানে আটকিয়ে থাকি। কি দিয়ে বুঝবো?
শেষে আমি দেখি দুটো :
প্রথমতঃ উনার শেষ আমলগুলো কি ছিলো।
এবং সেটা আমার কাছে ভালো মনে হচ্ছে কিনা।
দ্বিতীয়তঃ স্বপ্নে উনাকে কেউ দেখেছে কিনা উনি কেমন আছেন, উনার আমলের কবুলিয়াতের ব্যাপারে উনি কি বলছেন।
এগুলো একান্তই ব্যক্তিগত জাজমেন্ট। যেটা আরেকজনের কাছে গ্রহনযোগ্য কিছু না। কিন্তু এটা ছাড়া সত্যি আমার দ্বিতীয় কিছু নেই।
- লক ডাউন নিয়ে আমার চিন্তা করা দরকার নেই।
- লক ডাউন উচিৎ না অনুচিৎ, ভালো না মন্দ সেটা চিন্তা করার দরকার নেই।
- লক ডাউন না করলে কি হতো সেটা চিন্তা করার দরকার নেই।
- লক ডাউনে মানুষ কি খাবে সেটা চিন্তা করার দরকার নেই।
- লক ডাউন কবে উঠবে, এতে মানুষের উপকার হচ্ছে নাকি অপকার সেটা চিন্তা করার দরকার নেই।
আস-সুলতানু দিল্লুল্লাহ ফিল আরদ। যে দিকে আল্লাহ তায়ালা নিয়ে যান।
এবং প্রত্যেক জাতি ঐরকম নেতা পায় সে জাতির স্বভাব চরিত্র আমল যেমন।
Note to self : আলহামদুলিল্লাহ যে আল্লাহ তায়ালা আমাকে এই সব বিষয়ে চিন্তা করার দায়িত্ব দেন নি। এগুলো অন্য কাউকে দিয়েছেন। এবং এই কাজের জন্য আমি দায়ি না।
এবং আমার নিজের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, উনি সর্বোত্তম সমাধান করেন।
নামাজে চোখ বন্ধ করে নামাজ পড়বো না। চোখ খুলা রেখে। এটা দিনের আলোতে নামাজ হোক বা রাতের গভীরে অন্ধকারে। দাড়ানো অবস্থায় হোক বা নামাজের সিজদায় রুকুতে। সব সময় চোখ খুলা।
বক্তব্য, "কিন্তু রাতে চোখ বন্ধ রাখলে ধ্যান আসে"
এই ধ্যান পথভ্রষ্ট করবে। এটা পরিত্যাজ্য। বরং চোখ খুলা রেখে অল্প ধ্যানে নামাজ পড়বো।